টাটা-মিস্ত্রি কাণ্ডের জেরে এ বার টাটা সন্স থেকে ইস্তফা দিলেন প্রথম সারির তিন কর্তা। সংস্থা পরিচালনা নিয়ে অনিশ্চয়তাই তাঁদের সরে যাওয়ার কারণ বলে ইঙ্গিত দিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
শনিবার সংস্থা সূত্রের খবর, যে-তিন জন এগ্জিকিউটিভ পদ ছেড়েছেন, তাঁরা সকলেই সাইরাস মিস্ত্রিকে সরিয়ে দেওয়ার পরে ভেঙে দেওয়া এগ্জিকিউটিভ কাউন্সিল বা কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য ছিলেন। মিস্ত্রিকে নিয়ে পাঁচ সদস্যের ওই কাউন্সিলের দায়িত্ব ছিল টাটা গোষ্ঠীর বিভিন্ন লগ্নি খাতে আয় কতটা হচ্ছে, তা বিশ্লেষণ করা।
পদত্যাগী তিন কর্তা হলেন, টাটা গোষ্ঠীর মানবসম্পদ সংক্রান্ত প্রধান এন এস রাজন, বাণিজ্য উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রধান মধু কানন এবং লগ্নি কৌশল বা স্ট্র্যাটেজি এগ্জিকিউটিভ নির্মাল্য কুমার। তবে এই তিন জনের সঙ্গে এ দিন যোগাযোগ করা যায়নি। টাটাদের মন্তব্য জানার জন্য তাঁদের কাছে ই-মেল পাঠিয়েও উত্তর মেলেনি। পরিষদের বাকি দু’জন সদস্য হলেন মুকুন্দ রাজন ও হরীশ ভাট। তাঁরা সংস্থায় থেকে অন্য কোনও দায়িত্ব নেবেন বলে ইঙ্গিত।
মিস্ত্রির বিদায়ের পরে গোষ্ঠীর কাজকর্ম ঢেলে সাজা হবে আঁচ করেই এগ্জিকিউটিভরা ইস্তফা দিচ্ছেন বলে মনে করা হচ্ছে। কর্পোরেট আইন সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, টাটা গোষ্ঠীর পরিচালনায় কিছুটা অনিশ্চয়তা তৈরি হতে পারে। অন্তত স্বল্প মেয়াদে গোষ্ঠী পরিচালনায় কিছুটা ‘ডামাডোল’-এর সম্ভাবনা রয়েছে বলে ধারণা প্রক্সি অ্যাডভাইজরি সংস্থা ইন-গভর্নের বিশেষজ্ঞ শ্রীরাম সুব্রহ্মণ্যনের। প্রসঙ্গত, বিভিন্ন সংস্থার বার্ষিক সভায় শেয়ারহোল্ডারদের ভোট দেওয়ার ব্যাপারে পরামর্শ দিয়ে থাকে প্রক্সি অ্যাডভাইজরি সংস্থা। শেয়ারহোল্ডারের মতামতের ভিত্তিতে সমীক্ষাও প্রকাশ করে তারা। সুব্রহ্মণ্যন বলেন, ‘‘পদস্থ কর্তারাই ইস্তফা দিচ্ছেন। এর থেকে বোঝা যাচ্ছে কর্তৃপক্ষের প্রতি তাঁদের আস্থায় কোথাও একটা চিড় ধরেছে। গোষ্ঠীর যাতে দীর্ঘ মেয়াদে কোনও ক্ষতি না-হয়, তার জন্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই আস্থা ফেরানোই জরুরি।’’ ১০ হাজার কোটি ডলারের টাটা গোষ্ঠীর ভাবমূর্তি অটুট রাখতে কর্তৃপক্ষ অবশ্য আগামী সপ্তাহেই নতুন এগ্জিকিউটিভদের নাম জানাবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
তবে অন্তর্বর্তী চেয়ারম্যান হিসেবে রতন টাটা ফিরে আসায় টাটাদের যৌথ উদ্যোগের দুই বিমান সংস্থা বিস্তারা ও এয়ার-এশিয়া ইন্ডিয়া অনেকটাই গুরুত্ব পাবে বলে ইঙ্গিত শিল্পমহলের। বরাবরই বিমান পরিবহণ শিল্পের প্রতি রতন টাটার বাড়তি ঝোঁক রয়েছে। সেই কারণে সংস্থাগুলিতে প্রাণ ফেরাতে বাড়তি মূলধন জোগানোর ব্যবস্থা তিনি করতে পারেন বলে জানান উপদেষ্টা সংস্থা মার্টিন কনসাল্টিং-এর চিফ এগ্জিকিউটিভ মার্ক ডি মার্টিন। বিস্তারা ও এয়ার-এশিয়া ইন্ডিয়া এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।
প্রসঙ্গত, ভারতের আকাশের ৫ শতাংশ দখল করে রয়েছে বিস্তারা ও এয়ার এশিয়া ইন্ডিয়া, যা আরও বাড়াতে আগ্রহী দু’পক্ষই। বিস্তারা ও এয়ার এশিয়া চালু হওয়ার সময়েই টাটা গোষ্ঠী লগ্নি করেছিল ৬ কোটি ডলার বা প্রায় ৪০৮ কোটি টাকা, যার বেশির ভাগটাই ঢালা হয় বিস্তারায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy