Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বিশ্বে দারিদ্র কমাতে রাজস্ব বৃদ্ধির পরামর্শ দিল রাষ্ট্রপুঞ্জ

লক্ষ্য স্থিরের পরে এ বার রাস্তা খোঁজার পালা। পৃথিবীর কোনও দেশে কোনও প্রান্তে ২০৩০ সালের পরে যাতে চরম দারিদ্রের আর দেখা না-মেলে, সেই সঙ্কল্প নিয়ে কোমর বাঁধছেন রাষ্ট্রনেতারা। তৈরি করা হয়েছে ১৭ দফা লক্ষ্যের তালিকা। এ বার পালা ‘রোডম্যাপ’ তৈরির।

বৈঠকে হাজির ল্যাগার্দে ও বান কি মুন। ছবি: রয়টার্স।

বৈঠকে হাজির ল্যাগার্দে ও বান কি মুন। ছবি: রয়টার্স।

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:৪২
Share: Save:

লক্ষ্য স্থিরের পরে এ বার রাস্তা খোঁজার পালা।

পৃথিবীর কোনও দেশে কোনও প্রান্তে ২০৩০ সালের পরে যাতে চরম দারিদ্রের আর দেখা না-মেলে, সেই সঙ্কল্প নিয়ে কোমর বাঁধছেন রাষ্ট্রনেতারা। তৈরি করা হয়েছে ১৭ দফা লক্ষ্যের তালিকা। এ বার পালা ‘রোডম্যাপ’ তৈরির। কিন্তু তা করতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, দারিদ্রকে ইতিহাসের পাতায় নিয়ে যেতে প্রয়োজন হবে বহু লক্ষ কোটি ডলার লগ্নি। উন্নয়নের জন্য শুধু আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান কিংবা উন্নত দুনিয়ার দেওয়া অর্থে চিঁড়ে ভিজবে না। বরং কর ফাঁকি বন্ধ ও কর আদায় বাড়ানোর বন্দোবস্ত করে টাকা সংস্থানে উদ্যোগী হতে হবে দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশগুলিকে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, রাষ্ট্রপুঞ্জ দেখেছে, ২০৩০ সালের মধ্যে দুনিয়া থেকে চরম দারিদ্র দূর করার জন্য জোর দিতে হবে অন্তত ১৭টি বিষয়ে। এর মধ্যে সকলের জন্য স্বাস্থ্য পরিষেবা যেমন রয়েছে, তেমনই আছে প্রত্যেকের জন্য শিক্ষা, সকলের ঘরে পানীয় জল, বিদ্যুৎ ইত্যাদি পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা। ঠাঁই পেয়েছে পরিবেশ রক্ষার কর্মসূচিও।

কিন্তু এই বিপুল কর্মযজ্ঞে প্রয়োজন প্রভূত অর্থ। নিদেনপক্ষে কয়েক লক্ষ কোটি ডলার। অথচ সেখানে এখন উন্নয়নের জন্য বছরে জমা তহবিলের অঙ্ক মোটে ১৩,১০০ কোটি ডলার। তার উপর মন্দার প্রকোপে এখনও কাহিল ইউরোপের অনেক দেশই দিন গুজরান করছে সরকারি ব্যয় সঙ্কোচনের বাধ্যবাধকতায়। ফলে এই পরিস্থিতিতে উন্নয়ন খাতে বেশি টাকা দেওয়া যে সম্ভব হবে না, সেই ইঙ্গিত ইতিমধ্যেই দিয়েছে তারা। সেই কারণেই রাষ্ট্রপুঞ্জের সেক্রেটারি জেনারেল বান কি মুনের পরামর্শ, দারিদ্রের সঙ্গে লড়াইয়ে আর শুধু উন্নয়ন তহবিলের দিকে তাকিয়ে থাকলে চলবে না। বরং টাকা জোগাড়ের পথ খুঁজে বার করতে হবে প্রত্যেক দেশের সরকারকে। যেমন, উন্নয়ন কর্মসূচিতে আরও অনেক বেশি করে সামিল করতে হবে বেসরকারি ক্ষেত্রকে। টেনে আনতে হবে তাদের লগ্নি।সেই সঙ্গে বাড়াতে হবে করআদায়ের অঙ্কও। যাতে সেই খরচ করা যায় দারিদ্রের সঙ্গে যুদ্ধে।

শুধু রাষ্ট্রপুঞ্জ নয়, সম্প্রতি কর আদায় বাড়ানোর উপর বারবার জোর দিচ্ছে আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডার (আইএমএফ) এবং বিশ্বব্যাঙ্কও। আইএমএফের সমীক্ষা অনুযায়ী, অনেক গরিব দেশেই রাজস্বের অঙ্ক মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের (জিডিপি) ১৫ শতাংশেরও কম। অথচ উন্নত দুনিয়ায় তা অন্তত ২৪ শতাংশ। ফলে করের জাল বিস্তৃত করে তার আদায় বাড়ানোর পক্ষে সওয়াল করছেন আইএমএফ প্রধান ক্রিস্টিন ল্যাগার্দে।

উন্নয়নশীল দেশগুলির সমস্যার কথা তুলে ধরতে গিয়ে নাইজিরীয় অর্থমন্ত্রীর অভিযোগ, কর ফাঁকি সত্যিই মস্ত সমস্যা। বিশেষত এতে সিদ্ধহস্ত বহুজাতিক সংস্থাগুলি। কর ফাঁকি দিতে আইনের হাজারো ফাঁক খুঁজে বার করে তারা। অনেক সময়ে রাজস্ব আদায়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় জলের দরে খনিজ ব্যবহারের অধিকার বিভিন্ন সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া। আর্থিক দুর্নীতিও এই পথে অন্যতম প্রতিবন্ধক।

তাই চরম দারিদ্রের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ঝাঁপানোর জন্য রসদ খুঁজতে দ্রুত এই সমস্ত বাধা কাটানোর পথ বার করতে বলছে আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE