পুরো আর্থিক বছর মিলিয়ে লোকসান এড়ানো যায়নি ঠিকই। কিন্তু অনুৎপাদক সম্পদ উদ্ধার আর ঢেলে সাজার মাধ্যমে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া (ইউবিআই)।
গত অর্থবর্ষের (২০১৩-’১৪) প্রথম ন’মাসে ব্যাঙ্কটির ১,৬৮২ কোটি টাকা লোকসান হয়েছিল। অথচ শেষ বা চতুর্থ ত্রৈমাসিকে মুনাফা হয়েছে ৪৬৯ কোটি। এর কারণ হিসেবে কলকাতা ভিত্তিক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কটির দাবি, যেখানে অনুৎপাদক সম্পদ ক্রমাগত বেড়ে গত ডিসেম্বরে ১,৯৪৫ কোটি টাকায় পৌঁছেছিল, সেখানে চতুর্থ ত্রৈমাসিকে সেই খাতে এক টাকাও হিসেবের খাতায় (ব্যালান্স শিট) তুলতে হয়নি তাদের। বরং অনুৎপাদক সম্পদ খাতে যে ৩৮ কোটি টাকা তুলে রাখা হয়েছিল, তা মুনাফার ঘরে ঢোকাতে পেরেছে ব্যাঙ্কটি। আর এই সব কিছুর ফসল হিসেবেই সাড়ে চারশো কোটি টাকা পেরিয়ে গিয়েছে তাদের লাভের অঙ্ক। ২০১২-’১৩ আর্থিক বছরের শেষ ত্রৈমাসিকেও যা ছিল মাত্র ৩১ কোটি।
চতুর্থ ত্রৈমাসিকে ভাল ফল করলেও, গত অর্থবর্ষে সব মিলিয়ে ইউবিআইয়ের লোকসান হয়েছে ১,২১৩ কোটি টাকা। কিন্তু দুই এগ্জিকিউটিভ ডিরেক্টর সঞ্জয় আর্য এবং দীপক নারাঙের বিশ্বাস, “এক বার যখন মুনাফার পথে ফেরা গিয়েছে, তখন আর পিছন ফিরে তাকাতে হবে না। মুনাফা ক্রমশ বাড়বে।” ক্ষতির টাকা সংরক্ষিত তহবিল থেকে বাদ দিয়ে ব্যালান্স শিট লোকসানহীন করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। সঞ্জয়বাবুর দাবি, ব্যবসা থেকে মুনাফা তাঁদের সব সময়ই হয়েছে। কিন্তু অনুৎপাদক সম্পদ খাতে সংস্থান রাখতে গিয়েই লোকসানে পড়েছিলেন তাঁরা।
ইউবিআই কর্তৃপক্ষের দাবি, আলোচ্য ত্রৈমাসিকে নগদ ৬৪৫ কোটি টাকার অনুৎপাদক সম্পদ আদায় করা গিয়েছে। এ ছাড়াও ঢেলে সাজা হয়েছে ১,৪৮৮ কোটি টাকার অনুৎপাদক সম্পদ। অনুৎপাদক সম্পদ আদায়ের দায়িত্বে থাকা ইউবিআইয়ের জেনারেল ম্যানেজার মানস ধর বলেন, “গত চার মাসে টাকা বাকি রাখা ১.৪৬ লক্ষ ঋণগ্রহীতার সঙ্গে বৈঠক করেছি। আমাদের অনুৎপাদক সম্পদ বড় ঋণগ্রহীতার তুলনায় ছোট ঋণগ্রহীতাদের কাছেই বেশি আটকে ছিল। এ ধরনের ঋণের টাকা আদায়ে বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতের কাছ থেকেও সহায়তা পেয়েছি।” গত অর্থবর্ষে ৫.৩৬% বেড়ে ব্যাঙ্কের ব্যবসাও ১.৭৯ লক্ষ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
সঞ্জয়বাবুর দাবি, ঋণ দিতে যথেষ্ট অনুপাতে মূলধন না-থাকার (ক্যাপিটাল অ্যাডিকোয়েসি রেশিও কমে যাওয়া) কারণে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বড় অঙ্কের ঋণ দেওয়ায় ইউবিআইয়ের উপর যে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল, তা তুলে নিতে এ বার আর্জি জানাবেন তাঁরা। তবে জোর দেবেন গৃহঋণ-সহ বিভিন্ন খুচরো ঋণ এবং কৃষি ও ছোট-মাঝারি সংস্থাকে ধার দেওয়ার উপর। একই সঙ্গে, নতুন করে কোনও ঋণ যাতে ফের অনুৎপাদক সম্পদে পরিণত না-হয়, সে দিকেও কড়া নজর রাখা হবে বলে জানিয়েছে ইউবিআই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy