Advertisement
E-Paper

এক লক্ষ গাড়ি ফেরাচ্ছে মারুতি

এ বার মারুতি-সুজুকি। যন্ত্রাংশের ত্রুটি নিখরচায় মেরামত করে দিতে তিনটি মডেলের এক লক্ষেরও বেশি গাড়ি ফেরাচ্ছে দেশের বৃহত্তম গাড়ি সংস্থাটি। সম্প্রতি বিভিন্ন যন্ত্রাংশের ত্রুটি মেরামতের জন্য নিজেদের নানা মডেলের গাড়ি ফিরিয়েছে টয়োটা, ফোর্ড, জিএম, নিসান, মহীন্দ্রার মতো সংস্থা। এ বার ওই একই পথে হাঁটল মারুতিও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০১৪ ০২:৫৮

এ বার মারুতি-সুজুকি।

যন্ত্রাংশের ত্রুটি নিখরচায় মেরামত করে দিতে তিনটি মডেলের এক লক্ষেরও বেশি গাড়ি ফেরাচ্ছে দেশের বৃহত্তম গাড়ি সংস্থাটি।

সম্প্রতি বিভিন্ন যন্ত্রাংশের ত্রুটি মেরামতের জন্য নিজেদের নানা মডেলের গাড়ি ফিরিয়েছে টয়োটা, ফোর্ড, জিএম, নিসান, মহীন্দ্রার মতো সংস্থা। এ বার ওই একই পথে হাঁটল মারুতিও। বছর চারেক আগে অন্য একটি যন্ত্রাংশে ত্রুটির কারণে অবশ্য পৌনে দু’লক্ষেরও বেশি ‘এ-স্টার’ গাড়ি ফিরিয়েছিল তারা। এ দেশে এক লপ্তে গাড়ি ফেরানোর ক্ষেত্রে এখনও পর্যন্ত যা সব থেকে বেশি। গাড়ি শিল্পের দাবি, এই উদ্যোগ ক্রেতাদের প্রতি সংস্থাগুলির দায়বদ্ধতারই নিদর্শন।

শুক্রবার মারুতি জানিয়েছে, ২০১৩ সালের ১২ নভেম্বর থেকে গত ৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তৈরি হওয়া ডিজায়ার, সুইফ্ট এবং আর্টিগার মোট ১,০৩,৩১১টি গাড়ি ফেরানো হবে। কারণ, তাদের ট্যাঙ্কে তেল ভরার টিউবের মতো অংশে (ফুয়েল ফিলার নেক) ত্রুটি রয়েছে। ট্যাঙ্কের ঢাকনা পর্যন্ত (বা ‘অটো কাট লেভেল’-এর চেয়ে বেশি) তেল ভরলে, গাড়িগুলিতে তেলের গন্ধ পাওয়ার অথবা তেল চুঁইয়ে পড়ার (লিক) সম্ভাবনা আছে। গাড়ি তৈরির ব্যবস্থায় নিয়মিত নজরদারির সময় বিষয়টি সামনে আসার কারণেই এখন এই সিদ্ধান্ত। তবে তেলের অপচয় রুখতে যে কোনও গাড়িরই ট্যাঙ্কের ঢাকনার মুখ পর্যন্ত কানায় কানায় তেল না-ভরার পরামর্শ দিচ্ছে তারা।

সংস্থা জানিয়েছে, উল্লিখিত তিনটি মডেলের যে সব গাড়িতে ত্রুটি রয়েছে, তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন সংশ্লিষ্ট ডিলাররা। নিখরচায় ওই ত্রুটিযুক্ত যন্ত্রাংশ বদলে দেওয়া হবে। ক্রেতারাও সংস্থার ওয়েবসাইটে গিয়ে গাড়ির চেসিস নম্বর দিয়ে দেখতে পারেন যে, তা ওই তালিকায় পড়ছে কিনা।

মারুতির গাড়ি ফেরানো নিয়ে কিছু দিন ধরেই জল্পনা ছিল বাজারে। কিন্তু সেই সময় এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হয়নি তারা। এ দিন সংস্থা সূত্রে দাবি, ডিলারদের কাছে নতুন যন্ত্রাংশ পৌঁছনোর আগে এ নিয়ে কথা বললে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হত।

কিন্তু ভারতে একের পর এক সংস্থা এ ভাবে গাড়ি ফেরাচ্ছে কেন? তা হলে কি গাড়ি তৈরির ব্যবস্থা এখানে যথেষ্ট উন্নত নয়?

এ বিষয়ে মারুতির সুরেই পুরো গাড়ি শিল্পের বক্তব্য, কোনও সংস্থাই ত্রুটিযুক্ত গাড়ি তৈরি করতে চায় না। কিন্তু একশো শতাংশ নজরদারি সত্ত্বেও কখনও-সখনও ত্রুটি থেকেই যায়। বিশেষত যেখানে একটি গাড়ি তৈরিতেই প্রায় ২০ হাজার যন্ত্রাংশ লাগে। বরং তাদের পাল্টা দাবি, সাম্প্রতিক কালে নোকিয়া ছাড়া অন্য কোনও শিল্পের কোনও সংস্থা ত্রুটিযুক্ত পণ্য ফেরানোয় এমন উদ্যোগ দেখায়নি।

অনেক বিশেষজ্ঞও মনে করছেন, ভারতে গাড়ির উৎপাদন ব্যবস্থা খারাপ নয়। পশ্চিমী দুনিয়া-সহ উন্নত দেশগুলিতেও গাড়ি ফেরানোর চল রয়েছে। কিন্তু আগে ভারতীয় ক্রেতারাই এ ধরনের ভাবনায় খুব একটা স্বচ্ছন্দ্য ছিলেন না। সে ক্ষেত্রে সংস্থাও মনে করত, ত্রুটির কথা সবার সামনে তুলে ধরলে নির্মাতা হিসেবে বিক্রি ও ব্র্যান্ড ক্ষতিগ্রস্ত হবে তাদের। কিন্তু ধীরে ধীরে সেই মানসিকতা বদলাচ্ছে। কড়া নজরদারি ও সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থাতেও যে কিছু ত্রুটি থেকে যেতে পারে, তা মেনে নিচ্ছেন অনেকে। বুঝছেন যে, তার সঙ্গে পণ্যের সার্বিক গুণমানের তুলনা করা চলে না। আর তাই গাড়ি ফেরানোকে দোষ হিসেবে না-ভেবে বরং ক্রেতাদের কাছে নিজেদের দায়বদ্ধতা প্রমাণের সুযোগ হিসেবে দেখছে সংস্থাগুলিও। হয়তো এ কারণেই সদ্য বাজারে আনা গাড়ি ‘ইকো স্পোর্ট’-এর কিছু গাড়ি ফেরাতেও দ্বিধা করেনি ফোর্ড ইন্ডিয়া।

তবে উন্নত দুনিয়ায় গাড়ি ফেরানোর চল যেমন রয়েছে, তেমনই সেখানে এ সম্পর্কে নিয়মকানুনও বেশ কড়া। ভারতে কিন্তু এ নিয়ে এখনও কোনও নির্দিষ্ট নীতি নেই। ফলে এই ব্যবস্থা বাধ্যতামূলকও নয়। তবে উন্নত দেশগুলিতে এ সব ক্ষেত্রে যেমন জরিমানার চল আছে, গাড়ি শিল্পের সংগঠন সিয়াম ভারতে তা চালু করার বিরোধী। তাদের যুক্তি, ত্রুটি নির্ণয়ের পরেও যদি সংস্থা যথাযথ ব্যবস্থা না-নেয়, একমাত্র তবেই তারা তাকে জরিমানা করার পক্ষপাতী।

maruti cars
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy