বিশ্ব বাজারে ঝুপ করে নেমে গিয়েছে সোনার দাম। হোলির শেষে বাজার খোলার পরে একই ছবি দিল্লিতেও। শনিবার ৫২০ টাকা কমে (এ বছর সব থেকে বেশি) তা নেমে এসেছে গত তিন মাসের সর্বনিম্ন অঙ্কে। একই পথে হেঁটে কলকাতাতেও দর কমেছে সোনার। দু’দিনের মধ্যে এখানে গয়নার সোনার দাম প্রতি ১০ গ্রামে কমেছে ৩২০ টাকা। পড়েছে পাকা সোনার দরও।
শনিবার শহরে ১০ গ্রাম গয়নার সোনার (২২ ক্যারাট) দাম দাঁড়িয়েছে ২৫,২৬৫ টাকা। পাকা সোনা (২৪ ক্যারাট) ২৬,৬৩০ টাকা। অথচ দোলাযাত্রা এবং হোলির আগে গত বুধবারও এই দু’য়ের দর ছিল যথাক্রমে ২৫,৫৮৫ এবং ২৬,৯৬৫ টাকা। দাম কমেছে রুপোরও। সোনার বাজারের কারবারিদের ধারণা, আরও কিছুটা কমতে পারে দর। তবে ১ এপ্রিল থেকে নতুন অর্থবর্ষ শুরুর পরে তা ধীরে ধীরে ফের ওঠার সম্ভাবনা। বিশেষত বিয়ের মরসুম শুরু হলে, তা দ্রুত ঊর্ধ্বগামী হবে বলে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের আশা।
সোনার দর এ ভাবে কমে যাওয়ার পিছনে বেশ কয়েকটি কারণ দেখতে পাচ্ছেন ব্যবসায়ী এবং বিশেষজ্ঞরা। তার মধ্যে রয়েছে—
• আন্তর্জাতিক বাজারে (বিশেষত আমেরিকা ও ইউরোপে) সোনার দাম হ্রাস।
• ইউরোপের ব্যাঙ্কগুলিতে শীঘ্রই সুদ বাড়ার সম্ভাবনা।
• রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সোনা আমদানির বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল করায় দেশে তার জোগান বৃদ্ধি।
• মল মাস এবং একই সঙ্গে আর্থিক বছরের শেষ মাস হওয়ায় দেশে গয়নার চাহিদাও তেমন নেই।
• লগ্নিকারীদের টাকার অনেকটাই টেনে নিচ্ছে চাঙ্গা শেয়ার বাজার।
• অনেক ক্ষেত্রে সোনা কেনায় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে প্যান কার্ড ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা।
অল ইন্ডিয়া জেম অ্যান্ড জুয়েলারি ফেডারেশনের পরিচালন পর্ষদের সদস্য হর্ষদ আজমেরার মতে, সম্প্রতি সোনা আমদানিতে কড়াকড়ি কিছুটা কমেছে। ফলে জোগান বেড়েছে। কমেছে দামও। স্বর্ণ শিল্প বাঁচাও সমিতির কার্যকরী সভাপতি বাবলু দে বলেন, ‘‘এটা মল মাস। তাই বিয়ের গয়নার চাহিদা নেই। তার উপর মার্চ আর্থিক বছরের শেষ মাসও। প্রতি বছরই এই সময়ে সোনার চাহিদা কম থাকে। কারণ, কর মেটানো-সহ কিছু খরচ মেটাতে হয়। লগ্নি করতে হয় কর বাঁচাতেও। ফলে গুরুত্বের বিচারে পিছনে চলে যায় সোনা কেনা।’’
এ ছাড়া ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সোনার দরে বিরূপ প্রভাব ফেলছে বাজেটের একটি ঘোষণাও। অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, এক লক্ষ টাকার উপর গয়না কেনাবেচা করতে হলে, প্যান নম্বর উল্লেখ করতে হবে। আগে ৫ লক্ষ টাকার উপর গয়না কিনতে তা করতে হত। বাবলুবাবু ও আজমেরার দাবি, ‘‘গয়না বাজারের ৭০% ক্রেতাই আসেন আধা-শহর বা গ্রাম থেকে। কৃষি-আয়ের উপর কর না-থাকায়, অনেকেরই প্যান কার্ড নেই। ফলে অসুবিধায় পড়ছেন তাঁরা। বাবলুবাবু জানান, তাঁরা এ নিয়ে শীঘ্রই অর্থমন্ত্রীকে স্মারকলিপি জমা দেবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy