Advertisement
E-Paper

দিনভর অস্থিরতা, ফের ২২ হাজার ছুঁল সূচক

অনিশ্চিত বাজারে অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে সূচকের গতিবিধিতে। যার প্রকৃষ্ট প্রমাণ হিসেবে মঙ্গলবারও সেনসেক্স ২২ হাজারের ঘরে গিয়ে ফিরে এল। বাজার বন্ধের সময়ে থিতু হল ২১,৮৩২.৬১ অঙ্কে। আর এই নিয়ে অল্প ক’দিনের মধ্যেই সেনসেক্সকে বার তিনেক ২২ হাজারের ঘরে গিয়ে ফিরে আসতে দেখা গেল। অবশ্য শুধু শেয়ার সূচকই নয়, এ দিন তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে ওঠা-পড়া করে টাকার দরও।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০১৪ ০১:০৫

অনিশ্চিত বাজারে অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে সূচকের গতিবিধিতে। যার প্রকৃষ্ট প্রমাণ হিসেবে মঙ্গলবারও সেনসেক্স ২২ হাজারের ঘরে গিয়ে ফিরে এল। বাজার বন্ধের সময়ে থিতু হল ২১,৮৩২.৬১ অঙ্কে। আর এই নিয়ে অল্প ক’দিনের মধ্যেই সেনসেক্সকে বার তিনেক ২২ হাজারের ঘরে গিয়ে ফিরে আসতে দেখা গেল।

অবশ্য শুধু শেয়ার সূচকই নয়, এ দিন তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে ওঠা-পড়া করে টাকার দরও। লেনদেনের শুরুতে শেয়ার কেনার জন্য বিদেশি লগ্নিকারীদের মধ্যে ছিল টাকার বাড়তি চাহিদা। যা মেটাতে গিয়ে প্রতি ডলার পৌঁছে যায় ৬১.০২ টাকায়। পরে টাকার দাম আরও বেড়ে যায়। এক ডলারের দর দাঁড়ায় ৬০.৮৮ টাকা। তবে দিনের শেষে সূচকের নিম্নগতি কিছুটা টেনে নামায় টাকার দামকে। বাজার বন্ধের সময়ে প্রতি ডলার ফিরে এসেছে ৬১.১৯ টাকায়। এই দাম এর আগের সর্বশেষ লেনদেনের দিন অর্থাৎ শুক্রবারের বাজার বন্ধকালীন দরের সমান। বাজার সূত্রের খবর, আমদানিকারীদের ডলারের চাহিদা বৃদ্ধিও টাকার নেমে আসার অন্যতম কারণ।

এ দিকে, বিশেষজ্ঞদের মতে, সাধারণত শেয়ার সূচকের ওঠা-নামা করা উচিত বাজারের মৌলিক উপাদানগুলির পরিবর্তনের সঙ্গে তাল রেখে। ওই উপাদানগুলির মধ্যে যেমন পড়ে মূল্যবৃদ্ধির হার, তেমনই বাণিজ্য ঘাটতি, টাকার দাম ইত্যাদি। কিন্তু এই মুহূর্তে শেয়ার সূচকের ওঠা-নামা বাজারের মৌলিক উপাদানগুলির উপর নির্ভর করে হচ্ছে না। পুরোটাই হচ্ছে, বিশেষজ্ঞদের ভাষায় বাজারের ‘সেন্টিমেন্ট’-এর উপর নির্ভর করে।

কী সেই সেন্টিমেন্ট?

শেয়ার বাজারের নিয়ম-কানুন সংক্রান্ত বিশারদ এবং এসকেপি সিকিউরিটিজের ম্যানেজিং ডিরেক্টর নরেশ পাচিসিয়া বলেন, “লোকসভা নির্বাচনে এ বার নরেন্দ্র মোদীর নেত্ৃত্বে বিজেপি ক্ষমতায় এসে কেন্দ্রে স্থায়ী সরকার গঠন করবে, এই স্বপ্নের ভেলায় ভর করেই এই মুহূর্তে শেয়ার বাজার ভেসে বেড়াচ্ছে।”

পাচিসিয়ার মন্তব্য খতিয়ে দেখলে যে-বিষয়টি পরিষ্কার হচ্ছে তা হল, যে-সব কারণের উপর নির্ভর করে শেয়ার সূচকের ওঠা-নামা করা উচিত, এখন তা আদৌ হচ্ছে না। অর্থাৎ হালে সূচকের যে উত্থান ঘটেছে, তার পিছনে কোনও আর্থিক কারণ নেই। আছে, দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশা। তবে এই আশার ভিত আসলে কতটা মজবুত, বিতর্ক আছে তা নিয়েও।

পাচিসিয়া বলেন, “এর ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে। এই মুহূর্তে শেয়ার কেনাবেচা কোনও ব্যাকরণ মেনে হচ্ছে না।” তাঁর মতে, লগ্নিকারীদের মধ্যে একটি শ্রেণি মনে করছেন, কেন্দ্রে স্থায়ী সরকার গড়তে পারবে বিজেপি এবং সেটা হলে শেয়ার বাজারের সমস্যা অর্ধেক মিটে যাবে। তাঁদের এই চিন্তার মধ্যে কতটা বাস্তব আছে, তা আমি বলতে পারব না। তবে ওই ধারণা নিয়ে যাঁরা চলছেন, তাঁরা টানা বিনিয়োগ করছেন, বিশেষ করে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি। অন্য দিকে লগ্নিকারীদের মধ্যে আর এক শ্রেণি মনে করছেন, বর্তমানে বাজারে যে ‘বুল ফেজ’ বা তেজী অবস্থা চলছে, তা ভিত্তিহীন। এই ধারণা নিয়ে যাঁরা চলছেন, তারা অল্প কিছু মুনাফা হতে দেখলেই শেয়ার বেচে লাভের টাকা ঘরে তুলে নিচ্ছেন। এই দুই কারণ একসঙ্গে কাজ করার ফলে শেয়ার সূচক উপরের দিকে উঠলেও বাজারে কিছুতেই স্থিতিশীলতা আসছে না।

পাচিসিয়া বলেন, “আমার মনে হয়, এ সবের জন্যই সেনসেক্স বার বার ২২ হাজারের ঘরে গিয়েও সেখানে থিতু হচ্ছে না। কিন্তু পাশাপাশি এটাও অস্বীকার করার উপায় নেই যে, ২২ হাজারের অঙ্কটি আদৌ ছোট নয়।”

উল্লেখ্য, এ দিনও লেনদেনের শুরুতে বাজার হু হু করে বাড়ছিল। এক সময়ে সেনসেক্স ২২,০৪০.৭২ অঙ্কে পৌঁছে উপরে ওঠার নতুন রেকর্ডও সৃষ্টি করে ফেলে। কিন্তু লেনদেনের মাঝামাঝি সময় থেকে লাভের টাকা তুলে নেওয়ার জন্য লগ্নিকারীদের মধ্যে শেয়ার বিক্রির ধুম পড়ে যায়। সূচকের পারাও নেমে আসে দ্রুত।

এ দিকে খুব শীঘ্রই আমেরিকার শীর্ষ ব্যাঙ্ক ফেডারেল রিজার্ভের কর্তারা বৈঠকে বসছেন। আর্থিক ত্রাণ প্রকল্প, অর্থাৎ বাজার থেকে বন্ড কেনার কর্মসূচি আরও সঙ্কুচিত করা হবে কি না, তা নিয়ে ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, আমেরিকার সরকার যদি বন্ড কেনার পরিমাণ কমিয়ে দেয়, তা হলে ভারতের বাজারে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলির বিনিয়োগ কমতে পারে।

তবে আমেরিকার পরামর্শদাতা সংস্থা গোল্ডম্যান স্যাক্স ভারতের মূল্যায়ন বাড়িয়ে দিয়েছে। অনেকের আশা, এর ফলে শেয়ার বাজার আরও কিছুটা চাঙ্গা হবে।

sensex index bse nifty
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy