Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

বিটকয়েন এক্সচেঞ্জের প্রাক্তন কর্তা ধৃত

গ্রেফতার হলেন ইন্টারনেটে ব্যবহার করার জন্য তৈরি হওয়া বিকল্প মুদ্রা ব্যবস্থা বিটকয়েনের অন্যতম বড় এক্সচেঞ্জ ‘এমটি গক্স’-এর প্রাক্তন কর্তা মার্ক কার্পেলেস।

সংবাদ সংস্থা
টোকিও শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৫ ০২:৫১
Share: Save:

গ্রেফতার হলেন ইন্টারনেটে ব্যবহার করার জন্য তৈরি হওয়া বিকল্প মুদ্রা ব্যবস্থা বিটকয়েনের অন্যতম বড় এক্সচেঞ্জ ‘এমটি গক্স’-এর প্রাক্তন কর্তা মার্ক কার্পেলেস। এক্সচেঞ্জ থেকে কোটি ডলার মূল্যের বিটকয়েন চুরি হওয়া এবং সেই সংক্রান্ত ১০ লক্ষ ডলার জালিয়াতির ঘটনাতেই শনিবার টোকিওতে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর।

এর আগে গত বছরই টোকিওতে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ডিজিটাল মুদ্রা বিটকয়েনের এক্সচেঞ্জ এমটি গক্স। প্রায় ৮.৫০ লক্ষ বিটকয়েন (বর্তমান বাজার দর প্রায় ৪০ কোটি ডলার) চুরি হওয়াকেই যার কারণ হিসেবে মনে করছিল সংশ্লিষ্ট মহল। তার পরই বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়। জাপানের সংবাদপত্রের খবর অনুসারে, কার্পেলেস এই পুরো বিষয়টি জানতেন এবং গ্রাহকদের না-জানিয়ে তাঁর একটি অ্যাকাউন্টেই বিটকয়েনগুলি পাঠানো হয়েছিল বলে অনুমান পুলিশের। পাশাপাশি, এক্সচেঞ্জের মুদ্রা ভাণ্ডার বাড়িয়ে দেখানোর জন্য কার্পেলেস জালিয়াতি করেছিলেন বলেও মনে করছেন তদন্তকারীরা। এই সব কারণেই তাঁকে এ দিন গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রথম থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন কার্পেলেস। তাঁর দাবি, হ্যাকিং-এর মাধ্যমেই গ্রাহকদের বিটকয়েন চুরি করা হয়েছে। এমনকী এই ঘটনার পরে প্রায় ২ লক্ষ বিটকয়েন তিনি উদ্ধার করা গিয়েছে বলেও দাবি জানিয়েছেন তিনি।

বিটকয়েনের শুরুটা হয়েছিল কিছুটা উল্কার গতিতে, ২০০৯ সালে। ঠিক তার আগের বছরই শাতোশি নাকামোতো-র লেখা একটি প্রবন্ধে যার প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায়। কিন্তু কে এই শাতোশি নাকামোতো? সে কি এক জন মানুষ? নাকি একটি গোষ্ঠী? কোন দেশীয়? গত পাঁচ বছর ধরে হাজার চেষ্টা করেও এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর বের করা যায়নি। তার মধ্যেই মন্দার সঙ্গে যখন বিভিন্ন দেশের লড়াই চলছে, তখন কোনও দেশের সরকার দ্বারা স্বীকৃত না হওয়া সত্ত্বেও, নানা প্রান্তে ছড়িয়ে গিয়েছে বিটকয়েনের ব্যবহার।

কিন্তু তা বলে বিতর্ক পিছু ছাড়েনি এই নয়া মুদ্রা ব্যবস্থার। ইন্টারনেটে বেআইনি লেনদেনে বিটকয়েনের ব্যবহার, এর সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে সরব হয়েছে বিভিন্ন দেশের সরকার। চিন-সহ বেশ কয়েকটি দেশে লেনদেনের ক্ষেত্রে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বিটকয়েন। আমেরিকায় ২০১৩ সালেই ঝামেলায় পড়ে প্রাথমিক ভাবে একটি কার্ড গেম-এর সাইট হিসেবে তৈরি হওয়া ‘এমটি গক্স’-ও। ২০১১ সালেই যা পুরদস্তুর বিটকয়েন এক্সচেঞ্জ হিসেবে কাজ করতে শুরু করে।

গত বছর বন্ধের সময় বিশ্বের ৮০ শতাংশ বিটকয়েন লেনদেন হত এই এক্সচেঞ্জেই। কিন্তু চুরির কারণে বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর শেষ পর্যন্ত জাপানে এবং আমেরিকায় নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করে এমটি গক্স। তখন তাদের দাবি ছিল, মূলত হ্যাকিং-এর মাধ্যমে প্রায় ৮.৫০ লক্ষ বিটকয়েন (সারা বিশ্বের প্রায় ৭%) চুরি হওয়াতেই লগ্নিকারীদের টাকা ফেরত দিতে পারেনি তারা। যার মধ্যে লগ্নিকারীদের প্রায় ৭.৫০ লক্ষ বিটকয়েন রয়েছে। বাকিটা সংস্থার নিজস্ব। তখনকার বাজার দরে (৫৬৫ ডলার) যার মোট মূল্য প্রায় ৪৮ কোটি ডলার। পাশাপাশি, জাপানে তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও হ্যাক করা হয়েছে বলেও দাবি করেছিল সংস্থা। তবে চুরির অভিযোগ করার পরও, সংস্থার ব্যবস্থার মধ্যে ত্রুটি রয়েছে বলে কার্যত স্বীকার করে নিয়েছিলেন এমটি গক্সের সিইও মার্ক কার্পেলেস।

বিটকয়েন কী?

• অনলাইন লেনদেনে ব্যবহার করার জন্য এক ধরনের মুদ্রা ব্যবস্থা (ডিজিটাল কারেন্সি)

• ব্যবহার করা যায় মোবাইল, কম্পিউটার মারফত

• কোনও দেশের সরকার দ্বারা স্বীকৃত নয়

• ব্যবহার করা যায় না সব ওয়েবসাইটেও

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE