খুশির উচ্ছ্বাস। বুধবার বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের শেয়ার ব্রোকাররা। ছবি: পিটিআই
অরুণ জেটলির ভোকাল টনিকে তেতে উঠল শেয়ার বাজার। সেনসেক্স বুধবার ছুঁয়ে ফেলল ২৮ হাজারের মাইলফলকও। যদিও শেষ পর্যন্ত সেখানে থিতু হতে পারেনি সূচক। বাজার বন্ধের সময়ে আগের দিনের থেকে ৫৫.৫০ পয়েন্ট বেড়ে দৌড় শেষ করেছে ২৭,৯১৫.৮৮ অঙ্কে।
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি এ দিন ঘোষণা করেছেন, আর্থিক সংস্কারের তালিকায় অগ্রাধিকার পাবে বিমায় বিদেশি বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমা বৃদ্ধি, শ্রম আইন সংশোধন এবং জমি আইনের সংস্কার। এর পাশাপাশি লোকসানে চলা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বেসরকারিকরণ হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
জেটলির ওই ঘোষণাতেই এ দিন চাঙ্গা হয়ে ওঠে শেয়ার বাজার। বিশেষ করে বিদেশি লগ্নি সংস্থাগুলি এতে প্রবল ভাবে উৎসাহিত হয়েছে। অবশ্য এই মুহূর্তে জেটলির ওই ঘোষণা ছাড়াও শেয়ার বাজারকে চাঙ্গা করে তোলার জন্য আরও বেশ কিছু কারণ লক্ষ করা যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বাজার বিশেষজ্ঞরা।
যেমন, আন্তর্জাতিক বাজারে অশোধিত তেলের মূল্য হ্রাস। গত পরশু দিনই লন্ডনের বাজারে ডিসেম্বরে সরবরাহের জন্য উঁচুমানের তেল ‘ব্রেন্ট’-এর দর নেমে যায় চার বছরের মধ্যে সবচেয়ে নীচে। ব্যারেল প্রতি দাম দাঁড়ায় ৮২.০৮ ডলার, যা ২০১০ সালের অক্টোবরের পর থেকে সবচেয়ে কম। মার্কিন বাজারেও অশোধিত তেল ‘লাইট ক্রুড’-এর দাম দাঁড়িয়েছে ৭৬ ডলারের মতো। তেলের দাম এতটা নেমে আসার মূল কারণ বিশ্বের প্রধান তেল রফতানিকারী দেশ সৌদি আরবের পক্ষ থেকে আমেরিকাকে কম দামে তেল বিক্রির সিদ্ধান্ত।
বস্তুত, গত বেশ কিছু দিন ধরেই আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমছে। এর ফলে ভারতের অর্থনীতি যে-বিশেষ ভাবে উপকৃত হবে, সে ব্যাপারে নিশ্চিত বিশেষজ্ঞরা। কারণ, এর ফলে এক দিকে আমদানি খাতে বৈদেশিক মুদ্রার খরচ কমবে। যার হাত ধরে কমবে দেশের বাণিজ্য ঘাটতি। অন্য দিকে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে মূল্যবৃদ্ধির উপরেও। অনেকেরই আশা, পরিস্থিতি এই রকম চলতে থাকলে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সুদ কমানোর রাস্তায় হাঁটতে পারে।
পাশাপাশি, জাপানের আর্থিক অবস্থার উন্নতি এবং আমেরিকায় এখনই সুদের হার বৃদ্ধির সম্ভাবনা না-দেখা দেওয়ার খবরও ভারতের শেয়ার বাজারের পক্ষে ভাল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সংস্কারের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রস্তাবিত কর্মসূচি এবং দ্রুত ভারতের আর্থিক অবস্থার উন্নতি এই দু’টি বিষয়ের দিকে তাকিয়ে এ দেশের বাজারে টানা বিনিয়োগ করে চলেছে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি। সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের খবর অনুযায়ী ওই সব সংস্থা গত সোমবারই বাজারে বিনিয়োগ করেছে ১ হাজার ৪১৩ কোটি ৩৪ লক্ষ টাকা।
তবে বুধবার অবশ্য এশিয়ার বেশ কিছু শেয়ার বাজারে সূচকের মুখ ছিল নীচের দিকে। সংবাদ সংস্থার খবর, চিনের আর্থিক অবস্থা নিয়ে কিছু নেতিবাচক তথ্য প্রকাশ পাওয়ার জেরেই এশিয়ার কয়েকটি দেশের শেয়ার বাজার এ দিন পড়েছে। চিন ছাড়াও সূচক পড়েছে হংকং, তাইওয়ান, এবং দক্ষিণ কোরিয়ায়। যদিও সিঙ্গাপুর এবং জাপানের শেয়ার সূচকের মুখ এই দিন ছিল উপরের দিকেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy