সঞ্জু দাস
পুলিশের সামনেই এক যুবক এলোপাথাড়ি ছুরি চালাচ্ছে আর এক যুবকের উপরে। রক্তে ভেসে যাচ্ছে আক্রান্ত যুবকের শরীর। শেষে আক্রমণকারী নিজেই নিজের গলায় ছুরি চালিয়ে চিৎকার করে বলল, ‘‘আমি প্রমাণ করে দেব, তুই আমাকে গলা কেটে খুন করতে চেয়েছিলি। তাই তোকে মেরেছি।’’
শনিবার দুপুরে চোখের সামনে এই দৃশ্য দেখে হতবাক হয়ে যান হাওড়া কোর্ট লক-আপ এবং হাওড়া জেলা হাসপাতালের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা লোকজন। হতচকিত হয়ে যান কোর্ট লক-আপে আসামিদের নিয়ে আসা পুলিশকর্মীরাও। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই আক্রমণকারী যুবকের সঙ্গে থাকা এক তরুণী তাকেই মারধর করতে শুরু করেন। এর পরেই পুলিশ রক্তাক্ত দুই যুবককে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করে। গ্রেফতার করা হয় আক্রমণকারী যুবককে।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারী যুবকের নাম সঞ্জু দাস। বছর তিরিশের সঞ্জু গোলাবাড়ির ট্যান্ডেলবাগান এলাকার কুখ্যাত দুষ্কৃতী। তার বিরুদ্ধে ডাকাতি, ছিনতাই ও মারামারির একাধিক মামলা রয়েছে। পুলিশ জানায়, বেলুড়ের বাসিন্দা এক যুবকের স্ত্রীর সঙ্গে সম্প্রতি ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে ওই দুষ্কৃতীর। কিছু দিন ধরে সেই তরুণী সঞ্জুর সঙ্গেই থাকছিলেন।
পুলিশ জানায়, এ দিন দুপুর একটা নাগাদ হাওড়া কোর্ট সংলগ্ন এলাকায় পাঁচ বছরের ছেলেকে নিয়ে আসেন বেলুড়ের সেই যুবক। সেখানেই তাঁর সঙ্গে দেখা হয়ে যায় স্ত্রী ও তাঁর প্রেমিক সঞ্জুর। স্ত্রীকে বাড়ি ফিরে যেতে বলেন ওই যুবক। কিন্তু তরুণী তাতে রাজি হননি। ওই যুবক স্ত্রীকে জোর করে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে দু’জনের হাতাহাতি বেধে যায়। সেই সময়ে ওই যুবককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে সঞ্জু। তার পরে নিজেই নিজের গলায় ছুরি চালিয়ে দেয়।
এই ঘটনায় কোর্ট লক-আপের সামনে ভিড় জমে যায়। থমকে যায় যানবাহন। যে পুলিশকর্মীরা এতক্ষণ দর্শকের ভূমিকা নিয়েছিলেন, পরিস্থিতি বেগতিক দেখে তাঁরা সক্রিয় হয়ে ওঠেন। বিবদমান দুই পক্ষকেই ধরে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান তাঁরা। দু’জনকেই ভর্তি করা হয় সেখানে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy