ভাঙাচোরা: দুর্ঘটনাগ্রস্ত সেই গাড়ি। রবিবার, জেমস লং সরণিতে। নিজস্ব চিত্র
ভোরের শহরে ফের গাড়ি দুর্ঘটনা। যদিও ওই দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ি থেকে আহত বা মৃত অবস্থায় কোনও ব্যক্তিকে উদ্ধার করা হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার, জেমস লং সরণিতে। কিন্তু কী ভাবে দুর্ঘটনা ঘটল, গাড়ির চালকই বা কোথায় গেলেন, রাত পর্যন্ত তার কোনও স্পষ্ট উত্তর মেলেনি।
তখন সবে ভোরের আলো ফুটেছে। বেহালা থানায় খবর যায়, ঠাকুরপুকুর থেকে তারাতলা যাওয়ার পথে জেমস লং সরণির কাছে একটি সাদা রঙের গাড়ি রাস্তার ধারের বাতিস্তম্ভে ধাক্কা মেরেছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখে, গাড়ির ধাক্কায় বাতিস্তম্ভটি দুমড়ে এক দিকে হেলে গিয়েছে। গাড়ির চাপে বাতিস্তম্ভের আগেই ফুটপাতের সিমেন্টের কিছুটা অংশ ভেঙে গিয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানিয়েছে, গাড়িটির গতি এতই বেশি ছিল যে, বাতিস্তম্ভে ধাক্কা লাগার পরে সেটি উল্টো দিকে ঘুরে দাঁড়িয়ে পড়ে। পুলিশকর্মীরা জানাচ্ছেন, গাড়ির বাঁ দিকের অংশ দুমড়ে গিয়েছে। চাকা বেঁকে বনেটের ভিতরে ঢুকে গিয়েছে। ঘটনার আকস্মিকতায় দু’টি এয়ারব্যাগও খুলে গিয়েছিল গাড়িটির। খোঁজ মেলেনি চালক বা আরোহীদের। গাড়িতে কোনও রক্তের দাগও মেলেনি বলে দাবি পুলিশের।
এর পরেই তদন্তে নামেন স্থানীয় ট্র্যাফিক গার্ড ও বেহালা থানার পুলিশকর্মীরা। তাঁরা স্থানীয় কয়েক জনের সঙ্গে কথা বলেন। পুলিশের কাছে ওই প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, গাড়িটিতে চালক-সহ চার জন ছিলেন। ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ রাস্তার এক দিকে গাড়ি দাঁড় করিয়ে তাঁরা মদ্যপান করছিলেন। এর পরেই স্থানীয় একটি দুধের ডিপোয় গিয়ে ঝামেলা করেন বলে অভিযোগ। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, দুধের প্যাকেট, দইয়ের কন্টেনার জোর করে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন তাঁরা। কর্মীরা বাধা দিতে গেলে গাড়ি নিয়ে চম্পট দেওয়ার চেষ্টা করেন অভিযুক্তেরা। গতি বাড়িয়ে পালাতে গিয়েই গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাতিস্তম্ভে ধাক্কা মারে। এর পরেই আরোহীরা নেমে পালিয়ে যান বলে স্থানীয়দের দাবি।
পুলিশ অবশ্য অন্য কয়েকটি সূত্র থেকে খোঁজ নিয়ে জেনেছে, গাড়িতে শুধু চালকই ছিলেন। তাঁর খোঁজ করা হচ্ছে। আদৌ গাড়িটিতে কত জন আরোহী ছিলেন, তা জানতে গাড়ির নম্বর ধরে মালিকের সঙ্গেও কথা বলার চেষ্টা হচ্ছে। গাড়িটিতে সরকারি দফতরের বোর্ড লাগানো ছিল। সেই দফতরের সঙ্গেও কথা বলে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। গাড়িতে চড়ে হাঙ্গামার অভিযোগের স্বপক্ষে সিসি ক্যামেরার কোনও ফুটেজও এখনও পুলিশের হাতে আসেনি। এই দুর্ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে শহরের নিরাপত্তা নিয়ে।
তবে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, এটি একটি দুর্ঘটনা। চালকের খোঁজ পেলে ছবিটা পরিষ্কার হবে বলে মত পুলিশ আধিকারিকদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy