Advertisement
১১ মে ২০২৪

বৈদ্যুতিন সাক্ষ্যপ্রমাণ নষ্টের আশঙ্কায় জামিন নামঞ্জুর

সাইবার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কম্পিউটার, স্মার্টফোনের মতো বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম এবং ইন্টারনেটের ব্যবহার বৃদ্ধির ফলে খুন, চুরি, ডাকাতির মতো অপরাধেও সাইবার আইন যুক্ত হচ্ছে। অপরাধ প্রমাণেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে সাইবার ও বৈদ্যুতিন তথ্যপ্রমাণ।

—প্রতীকী ছবি।

—প্রতীকী ছবি।

কুন্তক চট্টোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:১০
Share: Save:

খুনের মামলাতেও এ বার গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে বৈদ্যুতিন সাক্ষ্যপ্রমাণ! সেই সাক্ষ্যপ্রমাণ নষ্ট হয়ে যেতে পারে, এই যুক্তিতে জগদ্দলের এক কিশোর খুনে অভিযুক্তদের জামিনের আর্জি খারিজ করলেন ব্যারাকপুরের চতুর্থ ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক তাপস মিত্র।

সাইবার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কম্পিউটার, স্মার্টফোনের মতো বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম এবং ইন্টারনেটের ব্যবহার বৃদ্ধির ফলে খুন, চুরি, ডাকাতির মতো অপরাধেও সাইবার আইন যুক্ত হচ্ছে। অপরাধ প্রমাণেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে সাইবার ও বৈদ্যুতিন তথ্যপ্রমাণ। কিন্তু এই তথ্যপ্রমাণ দীর্ঘদিন যথাযথ ভাবে সংরক্ষণ করা যায় না। কারণ, সাইবার প্রযুক্তি দ্রুত উন্নত হচ্ছে এবং বহু ক্ষেত্রেই পুরনো প্রযুক্তি কার্যত বাতিল হচ্ছে। ফলে বছরের পর বছর এই নথি ফেলে রাখলে তা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। গত ১৩ ডিসেম্বর এমনই এক মামলার শুনানিতে জামিনের বিরোধিতা করতে গিয়ে এই যুক্তি দেন বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি বিভাস চট্টোপাধ্যায়। তিনি আদালতকে জানান, এ ক্ষেত্রেও অভিযুক্তেরা জামিন পেলে তথ্য প্রমাণ নষ্ট করে দিতে পারে।

গত জানুয়ারিতে অপহরণ করা হয়েছিল জগদ্দলের কিশোর অভিষেক চৌবেকে (১৭)। পরে গঙ্গা থেকে তার দেহ মেলে। পুলিশ সূত্রের দাবি, শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় অভিষেককে। সেই ঘটনায় জাহিদ হুসেন, মহম্মদ ওয়াকিল, মহম্মদ সরফরাজ নামে অভিষেকের তিন বন্ধু গ্রেফতার হয়। পুলিশের দাবি, অভিষেককে খুন করে গঙ্গায় ফেলে দিয়েছিল তারা। তার পরে তার মোবাইল থেকে ফোন ও ফেসবুক মারফত অভিষেকের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে টাকা হাতানোর পরিকল্পনা করেছিল। পুলিশ সূত্রের খবর, অভিষেকের মোবাইলে ফেসবুক খোলা ছিল। সেখান থেকেই তাঁর ফেসবুক ব্যবহার করেছিল অভিযুক্তেরা। অভিষেক যে বেঁচে রয়েছে এবং তাকে ফিরে পেতে বাড়ির লোক যাতে মুক্তিপণ দেয়, সেটাই ছিল উদ্দেশ্য। সেই কারণে খুনের পাশাপাশি সাইবার আইনে হ্যাকিংয়ের ধারাও যুক্ত করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ হয়েছে সাইবার তথ্যপ্রমাণ।

বিভাসবাবু বলছেন, ‘‘শুধু এই মামলাই নয়, এমন বহু মামলাতেই সাইবার তথ্যপ্রমাণ জড়িত রয়েছে। সেই সব মামলার শুনানিতেও এই যুক্তি দিয়েছি। দ্রুত বিচার শেষের আর্জিও জানিয়েছি।’’ অভিষেক হত্যা মামলার শুনানির রায়ে বিচারক তাপস মিত্র জানিয়েছেন, মামলাটির বিচার দ্রুত শেষ করার চেষ্টা করছে কোর্ট। গত সাড়ে চার মাসে ১৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণও হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Court Bail Electronic Evidence
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE