Advertisement
১১ মে ২০২৪

সেতুভঙ্গে শেষ হয়নি তদন্ত, পদোন্নতি ইঞ্জিনিয়ারের

গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে মাঝেরহাট উড়ালপুলের একাংশ ভেঙে পড়ে। তার পরেই কারও গাফিলতির কারণে ওই বিপর্যয় ঘটেছিল কি না, তার তদন্ত করে দেখার নির্দেশ দেয় রাজ্য।

বিপর্যয়: এ ভাবেই ভেঙে পড়েছিল মাঝেরহাট সেতু। ফাইল চিত্র

বিপর্যয়: এ ভাবেই ভেঙে পড়েছিল মাঝেরহাট সেতু। ফাইল চিত্র

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য
শিবাজী দে সরকার শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:১৭
Share: Save:

মাঝেরহাট সেতু বিপর্যয়ের পিছনে কোনও অফিসারের গাফিলতি রয়েছে কি না, তা নিয়ে পুলিশি তদন্ত শেষ হল না ঘটনার চার মাস পরেও। সূত্রের খবর, এর মধ্যেই তদন্তের আওতায় থাকা এক আধিকারিকের পদোন্নতিও হয়ে গিয়েছে। ফলে সেই তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে প্রশাসনের অন্দরে শুরু হয়েছে জল্পনা। পুলিশের পক্ষে এ ধরনের বিপর্যয়ের প্রযুক্তিগত সমস্যা বা গাফিলতির কারণ অনুসন্ধান করা সম্ভব কি না, প্রশ্ন উঠছে তা নিয়েও।

গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে মাঝেরহাট উড়ালপুলের একাংশ ভেঙে পড়ে। তার পরেই কারও গাফিলতির কারণে ওই বিপর্যয় ঘটেছিল কি না, তার তদন্ত করে দেখার নির্দেশ দেয় রাজ্য। সেই তদন্তের দায়িত্ব পুলিশকে দিয়েছিল নবান্ন। সরকার তখন জানিয়েছিল, প্রাথমিক পর্যায়ে কর্তব্যে গাফিলতির তথ্যপ্রমাণ তাঁদের কাছে রয়েছে। তবে পুলিশের

রিপোর্ট দেখে চূড়ান্ত পদক্ষেপ করা হবে। দায় প্রমাণিত হলে কাউকেই ছাড়া হবে না। কিন্তু এখনও পর্যন্ত পুলিশের সেই তদন্ত-রিপোর্ট জমা পড়েনি বলেই খবর।

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, পূর্ত দফতরের পাঁচ জন এবং অর্থ দফতরের দু’জন আধিকারিক এই তদন্তের আওতায় রয়েছেন। কিন্তু এই তদন্ত চলাকালীনই সংশ্লিষ্ট অফিসারদের মধ্যে পূর্ত দফতরের এক ইঞ্জিনিয়ার পদোন্নতি পেয়ে চিফ ইঞ্জিনিয়ার হয়ে গিয়েছেন। এখন এই তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন আধিকারিকদের একাংশ। তাঁদেরই এক জনের কথায়, ‘‘ঘটনার পিছনে সত্যিই কারও গাফিলতি রয়েছে কি না, তা জানাটা জরুরি। কিন্তু যত দ্রুত তদন্তের রিপোর্ট জমা পড়বে বলে মনে করা হয়েছিল, তা হল না।’’ তবে প্রশাসনের একাংশের দাবি, অনুসন্ধানের মধ্যে পদোন্নতি নিয়মবিরুদ্ধ নয়। এক অফিসারের কথায়, ‘‘যাঁর পদোন্নতি হয়েছে, তিনি সত্যি কোনও অপরাধ করেছেন কি না, তা প্রমাণিত নয়। ফলে তদন্ত চলাকালীন পদোন্নতির মতো স্বাভাবিক প্রশাসনিক প্রক্রিয়া বাধাপ্রাপ্ত হওয়ার কথা নয়।’’

কোন দিকগুলি খতিয়ে দেখতে চেয়েছিল সরকার?

প্রশাসনের একাংশের ব্যাখ্যা, মাঝেরহাট সেতু মেরামত করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল অনেক আগে। কিন্তু তার পরে অনেকটা সময় কেটে গেলেও সেই কাজ শুরু করা যায়নি। শেষ পর্যন্ত সেতুর একাংশ ভেঙে পড়ে। প্রশাসনিক দীর্ঘসূত্রতা না হলে বিপর্যয় এড়ানো যেত কি না, সেই বিলম্বের পিছনে কারও গাফিলতি রয়েছে কি না, ইত্যাদি বিষয়গুলি বুঝে নিতে চাইছে নবান্নের শীর্ষমহল।

পুলিশ সূত্রের অবশ্য দাবি, তদন্তের কাজ প্রায় শেষ। শীঘ্রই রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে সরকারের কাছে। সূত্রের খবর, সব আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলার কাজ শেষ। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সেতুর বিপর্যয় ঘটেছিল কি না, তা নিশ্চিত হতে ‘ন্যাশনাল টেস্ট হাউস’-এর রিপোর্টের দিকে তাকিয়ে রয়েছে পুলিশ। তা হাতে পেলেই পূর্ণাঙ্গ তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE