শুচিস্মিতা দাস
বাস ছাড়বে। অপেক্ষায় ভিতরে বসে আছেন এক তরুণী। সহযাত্রীরা হঠাৎ দেখলেন, জানলার পাশে বসা ওই তরুণী আচমকা চিৎকার করে উঠে ডান হাত দিয়ে বাঁ হাত চেপে ধরে কাতরাচ্ছেন। আর বাঁ হাত দিয়ে রক্ত গড়াচ্ছে অঝোরে। জানলার বাইরে তাকাতেই তাঁরা দেখেন, বাসের পাশে এসে দাঁড়ানো মোটরবাইক আরোহী দুই যুবক পালিয়ে যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার দুপুর তিনটে নাগাদ এই ঘটনা ঘটেছে হাওড়া ব্রিজ সংলগ্ন হাওড়া-কলকাতা বাসস্ট্যান্ডে। ব্যস্ত ও ভিড়ে ঠাসা ওই এলাকায় এমন ঘটনা স্বাভাবিক ভাবেই পুলিশি নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। ঘটনার পরে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন ওই তরুণীর সহযাত্রীরা। খবর পেয়ে অবশ্য পুলিশ এসে ওই তরুণীকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়।
পুলিশ জানায়, এ দিন দুপুরে কলকাতা আর্ট কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী শুচিস্মিতা দাস শ্রীরামপুরের মাসির বাড়ি থেকে ট্রেনে করে হাওড়া আসেন। সেখান থেকে বাসস্ট্যান্ডে আসেন কলেজে যাওয়ার বাস ধরতে। তরুণী জানান, তিনি একটি বেসরকারি বাসে জানলার ধারে বসে ছিলেন।
শুচিস্মিতা বলেন, ‘‘হঠাৎ দেখি, হেলমেট পরা দু’টি ছেলে মোটরবাইক নিয়ে আমার জানলার কাছে এসে দাঁড়িয়েছে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই হাতে তীব্র জ্বালা অনুভব করি। দেখি, বাঁ হাত দিয়ে রক্ত ঝরছে। সেখানে ব্লেড বা ধারালো কোনও জিনিস ঢুকে গভীর ক্ষত করে দিয়েছে।’’
কিন্তু কী কারণে এই হামলা, তা ওই তরুণীর কাছে পরিষ্কার নয়। ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্য থাকলে ওই যুবকেরা তা রাস্তায় পিছু নিয়ে বা বাসে উঠে করত। কেন তাঁকে এ ভাবে আঘাত করা হল, তা ভেবে পাচ্ছেন না ওই তরুণী।
পুলিশ জানায়, এই ঘটনার খবর পেয়েই হাওড়া ব্রিজের কাছে থাকা টহলদার পুলিশ এসে ওই তরুণীকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। সঙ্গে ছিলেন তাপস রায় নামে ওই বাসেরই আর এক যাত্রী। তাপসবাবু জানান, তাঁরাও ওই মোটরবাইক আরোহী যুবকদের ঠিক মতো দেখতে পাননি। তবে হাওড়া স্টেশন সংলগ্ন এই জনবহুল জায়গায়এই ঘটনা ঘটায় তিন যথেষ্ট আতঙ্কিত। তাপসবাবু বলেন, ‘‘হাওড়া বাসস্ট্যান্ড রাতে দুষ্কৃতীদের আস্তানা হয়ে ওঠে বলে জানতাম। এখন তো দিনের বেলাতেও এ সব ঘটছে। আমরা সত্যিই আতঙ্কিত।’’
ওই তরুণীর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে গোলাবাড়ি থানার পুলিশ। সন্দেহভাজন পাঁচ দুষ্কৃতীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy