প্রতীকী ছবি।
ছিল ফুড কোর্ট তৈরির প্রস্তাব। আর সে প্রস্তাব জমা দিতে গিয়েই প্রকাশ্যে চলে এল কয়েক কোটি টাকার বকেয়া সম্পত্তিকরের বিল। সেই বকেয়া বিলের পুরোটাই ভুল বলে মেনে নিয়েছে কলকাতা পুরসভা। অবশেষে প্রস্তাবিত ফুড কোর্টের সৌজন্যে সায়েন্স সিটির নামে জমা হওয়া দীর্ঘদিনের বকেয়া সম্পত্তিকরের ভুল শোধরাল পুরসভা।
পুরসভা সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও সংস্থার কাছ থেকে সম্পত্তিকর নেওয়ার বিষয় পুর আইনে নেই। আগে সায়েন্স সিটির একটি অ্যাসেসি নম্বর ছিল। ২০০৭ সালের আগে ওই নম্বর অনুযায়ী একটি সাসপেন্স অ্যাকাউন্টে সম্পত্তিকর বাবদ কিছু টাকা জমা পড়ত। ২০০৭ সালে মেয়র পরিষদের এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে, আইন মেনে সায়েন্স সিটির কাছ থেকে সম্পত্তিকর নেওয়া হবে না। পুরসভা শুধু ‘সার্ভিস চার্জ’ নেবে। এই প্রেক্ষিতেই ‘ন্যাশনাল কাউন্সিল অব সায়েন্স মিউজিয়াম, কলকাতা’র সঙ্গে পুরসভার একটি চুক্তি হয়েছিল। তা মেনে সায়েন্স সিটির থেকে শুধু সার্ভিস চার্জই নিয়ে এসেছে পুরসভা। ২০১৮-’১৯ সালের সার্ভিস চার্জও বরাবরের মতো জমা দিয়েছে সায়েন্স সিটি।
কিছু দিন আগে সায়েন্স সিটির তরফে নতুন ফুড কোর্ট তৈরির প্রস্তাব পুরসভায় জমা পড়তেই গোল বাঁধে। বর্তমানে কোনও নির্মাণের অনুমতি দেওয়ার আগে কর্তৃপক্ষ খতিয়ে দেখেন সংশ্লিষ্ট আবেদনকারীর সম্পত্তিকর ‘আপডেট’ করা রয়েছে কি না বা কোনও বকেয়া আছে কি না। অনুমতি দিতে গিয়েই পুর কর্তৃপক্ষ দেখেন, সায়েন্স সিটির নামে ৪২ কোটি ৭০ লক্ষ টাকার সম্পত্তিকর বকেয়া। তা-ও ১৯৯৮-’৯৯ সাল থেকে ২০১০-’১১ সাল, এই দীর্ঘ সময়ের! পুরসভার ওয়েবপোর্টালে তার উল্লেখও রয়েছে। অথচ তা থাকার কথাই নয়।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
পুর আধিকারিকদের একাংশ বুঝতে পারেন, বড় ত্রুটি হয়েছে। অতীতে হয়তো কোনও সময়ে সায়েন্স সিটি সম্পত্তিকর দিত। তাই তাদের অ্যাসেসি-নম্বর অনুযায়ী সেই কর জমা হয়ে রয়েছে। কিন্তু ২০০৭ সালের সিদ্ধান্তের পরে সম্পত্তিকরের তালিকা থেকে যে তাদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে, সেই তথ্য ‘আপডেট’ হয়নি।
পুর প্রশাসনের একাংশের অবশ্য বক্তব্য, দীর্ঘদিন আগেই বিষয়টি নজরে পড়েছিল পুরসভার। কিন্তু গা-ছাড়া মনোভাবের কারণে সংশোধন করা হয়নি। ফুড কোর্ট তৈরির আবেদনটি জমা না পড়লে হয়তো সেটা এত দিনেও হত না! এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, ‘‘বিষয়টি অনেক দিন ধরেই জানা ছিল। করছি-করব বলে করা হয়নি। যাই হোক শেষ পর্যন্ত সংশোধন করা হয়েছে।’’
সায়েন্স সিটি সূত্রের খবর, প্রস্তাবিত ফুড কোর্টের জন্য দমকলে আবেদন করা হয়েছিল। সেই ছাড়পত্র পাওয়ার পরেই পুরসভার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তখনই বকেয়া সম্পত্তিকরের কারণে ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ পাওয়ার প্রক্রিয়া পিছোতে থাকে। সায়েন্স সিটির এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘আমরা তো কেন্দ্রীয় সরকারী সংস্থা। নির্দিষ্ট নিয়মের মধ্যে কাজ করতে হয়। দরপত্র প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতেও নিয়ম মানতে হয়। একটু দেরি হল। তবে সমস্যা মিটেছে।’’ সায়েন্স সিটির অধিকর্তা শুভব্রত চৌধুরী বলেন, ‘‘১৫ দিনের মধ্যেই ওই নতুন ফুড কোর্ট তৈরির কাজ শুরু হবে বলে আশা করছি। পুরসভা বিষয়টি নিয়ে সহযোগিতা করেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy