Advertisement
০২ মে ২০২৪

কলকাতার কড়চা

এটা শুধুমাত্র ছবির প্রদর্শনীই নয়, ইতিহাসকে ছোঁয়াও! ‘আর্লি বেঙ্গল স্কুল’ থেকে শুরু করে হেমেন মজুমদার, অতুল বসু, এমনকী যামিনী রায়ের ছবিও চিত্রকূট আর্ট গ্যালারিতে ‘রেস্টোর্ড ট্রেজার্স’ শীর্ষক প্রদর্শনীতে দেখা যাচ্ছে (চলবে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত, রোজ ৩-৮টা)।

শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৬ ০০:০৫
Share: Save:

সংরক্ষিত ছবির সূত্রে এক টুকরো ইতিহাস

এটা শুধুমাত্র ছবির প্রদর্শনীই নয়, ইতিহাসকে ছোঁয়াও! ‘আর্লি বেঙ্গল স্কুল’ থেকে শুরু করে হেমেন মজুমদার, অতুল বসু, এমনকী যামিনী রায়ের ছবিও চিত্রকূট আর্ট গ্যালারিতে ‘রেস্টোর্ড ট্রেজার্স’ শীর্ষক প্রদর্শনীতে দেখা যাচ্ছে (চলবে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত, রোজ ৩-৮টা)। প্রদর্শিত সাতাশটি ছবির মধ্যে বেশ কিছু দুষ্প্রাপ্য ছবিও আছে। যেমন, রাজা নবকৃষ্ণ দেবের সেই বিখ্যাত ছবি। প্রদর্শনীটি কিউরেট করেছেন ‘শিল্প সংরক্ষণ’-এ অভিজ্ঞ উদ্ধৃতি দাস। ব্রিটেনের টেট থেকে শিখে আসা শিল্পীর মতে, ‘জলরঙের ছবির চেয়ে তেল রঙের ছবির সংরক্ষণ করা সহজ। কেননা, তেল রঙের ছবি আঁকার অনেকগুলি ধাপ থাকে। আস্তে আস্তে সেই সব ধাপ পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত ছবিটিকে সংরক্ষণ করে রাখা যায়।’ তিনি রাধাকৃষ্ণের একটি সংরক্ষিত ছবি দেখালেন, যে ছবিটি অনেকগুলো টুকরো হয়েছিল। এখন সংরক্ষিত হওয়ার পরে একটি পূর্ণ ছবির মাত্রা পেয়েছে।

এই প্রদর্শনীতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আমলে আঁকা তাজমহলের একটি ছবি আছে যেখানে তাজমহলের সামনে অজস্র সারিবদ্ধ গাছ। উদ্ধৃতি জানালেন, ‘টমাস ড্যানিয়েলের মতো শিল্পীরা যে ছবি এঁকেছেন, তাতে ইতিহাসের অনেক উপকরণ আছে। তাঁরা সাধারণত ‘রিয়েল লাইফ’-এর ছবিই আঁকতেন।’ চিত্রকূটের কর্ণধার প্রকাশ কেজরীবাল বলেন, ‘আমাদের কাছে আরও অনেক সংরক্ষণ করার মতো ছবি রয়েছে। কলকাতার শিল্পপ্রেমী মানুষদের জন্য আমরা তা ধীরে ধীরে প্রদর্শিত করব।’ শিল্পী আরও জানালেন ‘এই কাজ করতে হলে অনেক ধৈর্যের দরকার। রাধাকৃষ্ণের ছবিটি আমি সংরক্ষণ করেছি চার মাস ধরে। সামান্য ভুলত্রুটিতে ছবি নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও থাকে।’ শুধু ছবি নয় ছবির ফ্রেমগুলোও দেখা গেল সেই আমলেরই রয়ে গিয়েছে। ফলে ছবি ও ফ্রেম মিলিয়ে যেন এক টুকরো ইতিহাস প্রদর্শিত হচ্ছে। সঙ্গে সংরক্ষণের নানা পর্যায়ে নবকৃষ্ণের সেই ছবি।

সেই বই

একদা বিদ্যাসাগর ও নবজাগরণ নিয়ে বাঙালিকে নতুন চিন্তার সন্ধান দেওয়া বই প্রায় চার দশক পরে ফিরে এল। অশোক সেন-এর ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর অ্যান্ড হিজ ইলিউসিভ মাইলস্টোনস ১৯৭৭ সালে প্রথম বেরিয়েছিল। তার আগে কলকাতা দেখেছে উত্তাল দিন, গোলদিঘিতে বিদ্যাসাগরের মূর্তির মাথা কেটে নিয়েছে নকশালরা। তাদের অভিযোগ, সিপাহি বিদ্রোহের সময় সংস্কৃত কলেজে কোম্পানির সেনাকে থাকতে দিয়েছিলেন বর্ণপরিচয়-স্রষ্টা। বিদেশি শাসকের দালালি করাই তাঁর শ্রেণিচরিত্র। মার্ক্সীয় দর্শনে বিশ্বাসী অশোকবাবুর মনে হয়, বিদ্যাসাগরের নতুন মূল্যায়ন জরুরি। সেন্টার-এ মাঝে মাঝে পড়ে শোনান এক-একটি অধ্যায়, তাঁকে ঘিরে প্রশ্ন উগরে দেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, বরুণ দে, গৌতম ভদ্রের মতো জিজ্ঞাসু তরুণেরা। বিদ্যাসাগরের ট্রাজেডি কি শুধুই ব্যক্তির? নাকি, বাঙালির উনিশ শতক এটাই? অশোকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহায়তায় পার্মানেন্ট ব্ল্যাক ফের নতুন সংস্করণে নিয়ে এল সেই বই। বছর কয়েক আগে এশিয়াটিক সোসাইটিতে অশোকবাবু এই বিষয়ে একটি বক্তৃতা দেন, সেটির সঙ্গে এই বইয়ে উপরি পাওনা দীপেশ চক্রবর্তীর সুলিখিত ভূমিকা।

সুবর্ণজয়ন্তী

আম বাঙালিকে ইংরেজি শেখাবেন বলে কলম ধরেছিলেন কিন্তু সেই কলমই যে ইতিহাস তৈরি করবে তা বোধ হয় নিজেও কখনও ভাবেননি। সকলের প্রিয় ‘মাস্টারমশাই’ প্রফুল্লকুমার দে সরকারের পোশাকি পরিচিতি পি কে দে সরকার নামেই। ১৯১১-য় রংপুরের নীলফামারিতে জন্ম। রাজশাহি কলেজ থেকে বিএ পাশ করে চলে আসেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। এখান থেকেই এমএ। তারপর মার্টিন বার্ন কোম্পানিতে চাকরি। সেখানেই লাইব্রেরিতে ইংরেজি কাগজ পড়তে গিয়ে বাধা পান, কারণ সেগুলি কেবল সাহেবদের জন্যে। অপমানিত ক্ষুব্ধ মানুষটি চাকরি ছেড়ে মন দেন ইংরেজি গ্রামার বই লেখায়। ১৯২৬-এ প্রকাশ পায় তাঁর যুগান্তকারী বই আ টেক্সট বুক অব হায়ার ইংলিশ গ্রামার, কম্পোজিশন অ্যান্ড ট্রান্সলেশন। আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। স্বাধীনতার পর কলকাতায়। ১৯৭৪-এ জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি তার একমাত্র সম্বল বইটির উন্নতির জন্য সচেষ্ট ছিলেন। তাঁর প্রয়াণের পর পরিবারের তরফে বইটির সংস্কার সাধন চলেছে। আজ বিকেলে প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে প্রকাশিত হবে সুবর্ণজয়ন্তী সংস্করণ।

পুনর্মিলন

ফিরে পাব, ফিরে দেখব, চলে যাব ছেলেবেলায়। আগের মতো। বন্ধুদের হাত ধরে সবুজ দরজা পেরিয়ে, আমবাগান, চ্যাপেলের পাশ দিয়ে, স্কুলের অডিটোরিয়ামে। দমদমের ক্রাইস্ট চার্চ অ্যালামনি অ্যাসোসিয়েশন আগামী ১৫ জানুয়ারি, রবিবার আবার ডাক দিয়েছে পুনর্মিলনের। সকাল সাড়ে ন’টা থেকে প্রাক্তনীদের সম্মিলিত অনুষ্ঠান ছাড়াও থাকবে পল্লব কীর্তনিয়ার গান।

অন্য থিয়েটার

প্রতি বছরের মতো এ বছরও ‘অন্য থিয়েটার’ বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ৩১ ডিসেম্বর দিনভর ও ১ জানুয়ারি সন্ধ্যায় যথাক্রমে অ্যাকাডেমি ও মধুসূদন মঞ্চে। সকাল সাড়ে ১০টায় ‘বাংলা থিয়েটারে হাসির নাটকের এন্তেকাল ঘটেছে’ বিষয়ে বলবেন চন্দন সেন, মেঘনাদ ভট্টাচার্য, সৌমিত্র বসু, তীর্থঙ্কর চন্দ, দেবেশ চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। সঙ্গে দেখা যাবে দেবাশিসের নিবেদন ব্রাত্য বসুর নাটক ‘জীবজন্তু’। বিকেল ৩টেয় কৌশিক চট্টোপাধ্যায়ের নির্দেশনা ও নাটক ‘কোজাগরী’। সন্ধে সাড়ে ৬টায় অনসূয়া মজুমদার ও বিপ্লব দাশগুপ্ত-র অভিনয়ে ‘এক মঞ্চে শেক্‌সপিয়র-রবীন্দ্রনাথ’ ও সীমা মুখোপাধ্যায়কে সম্মাননা জ্ঞাপন। পরের দিন মধুসূদন মঞ্চের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে ব্রাত্য বসুকে ‘শ্রেষ্ঠ নাট্যনির্মাণ সম্মান’ প্রদান করা হবে এবং ‘ইন্দ্ররঙ্গ’-র সৌজন্যে ‘অদ্য শেষ রজনী’ নাটকটি মঞ্চায়ন হবে। এবং ‘জীবনকৃতি সম্মান’ জ্ঞাপন করা হবে অরুণ মুখোপাধ্যায়কে।

স্মারক বক্তৃতা

সত্য কী? মন যাকে অবধারণ করে, তা-ই কি সত্য? না কি সত্য-র অধিষ্ঠান মনের বাইরে কোথাও? পরম বা চিরন্তন সত্য বলে আদৌ কিছু আছে কি? মুক্তি কী? রবীন্দ্রনাথ যখন বলেন, আমার মুক্তি সর্বজনের মনের মাঝে, তখন ঠিক কী বোঝাতে চান তিনি? আবার কোনও ধর্মসাধক যখন বলেন, এই ঘৃণ্য মনুষ্য জন্ম যদি আর না ধারণ করতে হয়, তবেই মুক্তি, তারই বা অর্থ কী? এই সব দার্শনিক প্রশ্ন নিয়ে মাথা ঘামিয়েছিলেন মনোরোগ-বিশেষজ্ঞ ধীরেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায়। মন ছিল তাঁর বিশেষ ক্ষেত্র। আর দর্শন সেই মনের চলার ছন্দ। কাজেই দর্শন বাদ দিয়ে সমাজকে, মনকে বোঝা যায় না বলে তিনি মনে করতেন। তাঁর স্মরণে পাভলভ ইনস্টিটিউট আর মানবমন পত্রিকা এ বারেও ‘ডাক্তার ধীরেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায় স্মারক বক্তৃতা’র আয়োজন করেছে। জীবনানন্দ সভাঘরে ৩১ ডিসেম্বর, সন্ধ্যা ৫টায় বক্তা: বিশিষ্ট দর্শনবেত্তা মৃণালকান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। বিষয়: ‘ভারতীয় দর্শনে মুক্তির স্বরূপ’। সভাপতিত্ব করবেন রামকৃষ্ণ ভট্টাচার্য।

আশিতে পা

চিত্র-সাংবাদিক সুনীল কে দত্ত ১৯৬৫ সালের এক ‘রেল অবরোধ’-এর ছবি তোলা দিয়ে কাজ শুরু করেছিলেন। এর পর মাদার টেরিজা, দুর্গাপুজো, কলকাতা, রবীন্দ্রনাথের কবিতা, শান্তিনিকেতন প্রভৃতি নানা বিষয়ের ওপর বাহান্ন বছর ধরে কাজ করে চলেছেন। তাঁর ছবি দেশে তো বটেই, বিদেশেও প্রদর্শিত ও গৃহীত। পেয়েছেন বেশ কিছু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সম্মানও। সামথিং বিউটিফুল ফর গড, কলকাতা ক্যানভাস, দুর্গা পূজা, মাদার টেরিজা— ডাউন মেমরি লেন, রবির আলোয় আলোকচিত্র প্রভৃতি বই তাঁর তোলা ছবি দিয়েই প্রকাশিত। কলকাতায় বড় হওয়া সুনীল ৩১ ডিসেম্বর আশি বছরে পা দেবেন।

শিল্পী

পণ্ডিত রাধিকামোহন মিত্র, পণ্ডিত জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষ, সত্যজিৎ রায় প্রমুখের হাত থেকে ‘সারা বাংলা সংগীত প্রতিযোগিতা’য় তিনি প্রথম পুরস্কার গ্রহণ করেছেন। পারফর্ম করেছেন উস্তাদ জাকির হুসেন, পণ্ডিত স্বপন চৌধুরী, পণ্ডিত অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ শিল্পীর সঙ্গে। দেবাশিস ভট্টাচার্যের ঝুলিতে ‘বি বি সি প্ল্যানেট’ ও ‘সং লাইন্স মিউজিক’ নামক দু’দুটো আন্তর্জাতিক পুরস্কার, গ্র্যামি-র জন্য নমিনেশন দু’বার। তালিম পেয়েছেন পণ্ডিত গোকুল নাগ, পণ্ডিত ব্রিজভূষণ কাবরা, উস্তাদ আলি আকবর খান এবং পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীর কাছে। তবে সংগীতের হাতেখড়ি বাবা সুনীলকুমার ও মা মঞ্জুশ্রী দেবীর কাছেই। সম্প্রতি তাঁর উদ্যোগেই আই সি সি আর-এ হয়ে গেল ‘বসুন্ধরা মহোৎসব-২০১৬’ শীর্ষক ‘ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল গিটার ফেস্টিভাল’। দেশবিদেশের শিল্পীরা উৎসবে যোগ দিয়েছিলেন।

কালিয়

তিন দশকের উপর নিয়মিত বেরোচ্ছে, এমন ছোট পত্রিকা এ রাজ্যে খুব বেশি নেই। আর তা যদি হয় প্রতিবন্ধীদের জন্য, প্রতিবন্ধীদের নিয়ে পত্রিকা, তা হলে ‘কালিয়’ একক। পত্রিকাটি আরও পুরনো, তবে ১৯৮৩ থেকে ‘প্রতিবন্ধী ও তাঁদের সহমর্মীদের জন্য’ বেরোতে থাকে পত্রিকাটি। সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, সাংবাদিক সুদেব রায়চৌধুরী, অস্থি-বিশেষজ্ঞ সুনীল ঠাকুর, আইএএস জহর সরকার, অনেকেই কলম ধরেছেন কালিয়-র জন্য। পুরনো সংখ্যাগুলো থেকে স্পষ্ট, প্রতিবন্ধীদের জীবনের সম্পূর্ণ ব্যাপ্তি ধরতে চেয়েছে এই কাগজ। চিকিৎসা, পুনর্বাসন থেকে কাজের অধিকার, কবিতা থেকে ধারাবাহিক উপন্যাস, কিছুই বাদ যায়নি। প্রতিবন্ধীদের জন্য আইন এবং সরকারি নির্দেশ সহজ ভাষায় প্রকাশ করা হত। মন ছুঁয়ে যায় পাঠকের চিঠিগুলিও। একজন লিখছেন, ন’টি কৃত্রিম পা ব্যবহার করে একটিতেও আরাম পাননি। সম্পাদক আশুতোষ গুপ্ত দীর্ঘ আন্দোলন করেছেন প্রতিবন্ধীদের অধিকার আদায়ে। এই পত্রিকা সেই লড়াইয়ের সঙ্গী। তাঁর ডাকে এ বার নতুন প্রজন্ম এগিয়ে আসছে হাল ধরতে। আশা, শীঘ্র নবকলেবরে প্রকাশিত হবে কালিয়।

ব্যতিক্রমী

অতিভঙ্গুর সম্পর্কের সময়েও তাদের তিন বছর হল যুগ্ম ভাবে পথচলা! ‘অহর্নিশ’ এবং ‘কমিক্স ও গ্রাফিক্স’ দুই পত্রিকার উদ্যোগে ২৮ ডিসেম্বর, জীবনানন্দ সভা ঘরে, বিকেল সাড়ে ৫টায় আবার একটি ব্যতিক্রমী সন্ধ্যা। অনুপম রায় প্রকাশ করবেন ‘কমিক্স ও গ্রাফিক্স’-এর তৃতীয় সংখ্যা। থাকছেন নারায়ণ দেবনাথ। পুরস্কার পাবেন কমিক্স গ্রাফিক্স শিল্পীর সঙ্গে সংগ্রাহকও! আবার বুক ফার্ম কমিক্স সিরিজ-এর তিনটি বই গৌতম কর্মকারের ‘ওয়ার্ল্ড ক্লাসিকস’, ময়ূখ চৌধুরীর ‘গোয়েন্দা রহস্য গ্রাফিক নভেল ১’ এবং তুষার চট্টোপাধ্যায়ের ‘গোয়েন্দা রহস্য গ্রাফিক নভেল ১’ প্রকাশ পাবে। দ্বিতীয় পর্ব ‘অহর্নিশ ২০ বছর উদযাপন সমাপ্তি অনুষ্ঠান’। রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত বিশিষ্ট গ্রন্থবাঁধাই শিল্পী নারায়ণ চক্রবর্তীর হাতে তুলে দেওয়া হবে ‘অহর্নিশ ২০ সম্মাননা’। শিল্পীর সঙ্গে কথোপকথনে অনির্বাণ রায় ও শিলাদিত্য সিংহ রায়। শিল্পী বলবেন ‘লাইব্রেরি বাইন্ডিং: এ দেশে তার প্রয়োজনীয়তা এবং ভবিষ্যৎ’ নিয়ে।

পৌষ উৎসব

পৌষ মাস তো শুধুমাত্র বাঙালির জিভের ‘পোয়া বারো’ই নয়, উৎসবের মরসুমও বটে! আর সেই কারণেই পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগের উদ্যোগে মোহরকুঞ্জ এবং হেদুয়া পার্কে শুরু হয়েছে ‘পৌষ উৎসব’। চলবে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত। উৎসবে থাকছে বাংলার নানাপ্রকার হস্তশিল্প, রকমারি খাবারের স্টল ও সঙ্গে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আর মোহরকুঞ্জ স্টলে পাওয়া যাবে ‘রাঁধুনি পাগল’, ‘তুলাইপাঞ্জি’, ‘কালো নুনিয়া’, ‘গোবিন্দভোগ’, ‘দুধকলমা’, ‘রাধাতিলক’-এর মতো ঐতিহ্যবাহী চাল ও বিন্নি ধানের খই।

ত্রিবেণী সঙ্গম

চি ড়িয়াখানা-য় উত্তমকুমারের অভিনয় নায়ক-এর থেকেও ভাল।’ মনে করেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, ‘উনি যে কত বড় অভিনেতা, ‘চিড়িয়াখানা’ দেখলে বোঝা যায়। ওই আন্ডারটোন-এ নীচের দিকে কথা বলা, সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে একটা মাত্র ছবি ‘নায়ক’ করেই তিনি সেগুলো ডেমনস্ট্রেট করেছিলেন ‘চিড়িয়াখানা’য়। ব্যোমকেশ-এর যে চিন্তাশীল মানুষের অভিনয়, গভীর ভাবে ভাবছেন, ঠান্ডা-চুপচাপ, আস্তে কথা বলছেন— এগুলো আগে উত্তমকুমারের অভিনয়ে দেখিইনি বলতে গেলে... কনশাসলি অভিনয়টা করেছিলেন।’ শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাহিনি অবলম্বনে ‘চিড়িয়াখানা’ ছবির চিত্রনাট্য ও সংগীত পরিচালনা করবেন, তেমনটাই কথা দিয়েছিলেন সত্যজিৎ, নিজের ফিল্ম ইউনিটের মানুষজনের কাছে, তাঁরাই উদ্যোক্তা ছিলেন এ ছবির। উত্তম নিজেও রাজি হয়ে যান সত্যজিতের ইউনিট জড়িয়ে আছে বলে। ‘মুশকিল হল, উত্তমবাবু রাজি হতেই বাবার কর্মসঙ্গীরা বুঝতে পারলেন, উত্তমকুমারকে হ্যান্ডেল করা বোধহয় একটু কঠিনই হয়ে যাবে। ব্যস্‌, বাবাকে এসে ধরলেন। সে সময় গুগাবাবা-র কাজ একটু পিছিয়ে যাওয়ায় বাবাও রাজি হয়ে গেলেন, আবার উত্তমবাবুও মানিকদা পরিচালনা করবেন শুনে বেশ উৎসাহ পেলেন।’ সন্দীপ রায়ের কথায় উঠে এল এ-ছবি তৈরির ইতিবৃত্ত। শরদিন্দু-সত্যজিৎ-উত্তমের এই ত্রিবেণী সঙ্গম মুক্তি পেয়েছিল ১৯৬৭-র ২৯ সেপ্টেম্বর, সুবর্ণজয়ন্তী বর্ষ শুরু হয়ে গিয়েছে ছবিটির। ‘চিড়িয়াখানা’ আর ‘অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি’তে অভিনয়ের সুবাদেই ১৯৬৮-তে ভারত সরকারের সেরা অভিনেতার সম্মান ‘ভরত পুরস্কার’ পান উত্তমকুমার। সঙ্গের ছবিটি সন্দীপ রায়ের সৌজন্যে।

শতবর্ষে

দীর্ঘ ২২ বছর যে মানুষটি ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি এবং টানা সাত বছর প্রধান বিচারপতি, তাঁর জন্মশতবর্ষের সূচনা ২৬ ডিসেম্বর। ৫ হ্যারিসন রোডে ১৯১৭-র ওই দিনটিতে শংকরপ্রসাদ মিত্রের জন্ম। পিতা মণীন্দ্রনাথ ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিশিষ্ট সলিসিটর, পিতামহ লালবিহারী খ্যাতনামা চিকিৎসক। কেমব্রিজের ট্রিনিটি কলেজ থেকে স্নাতক হয়ে লন্ডনের লিংকনস্-ইন্ থেকে ব্যারিস্টারি পাশ শংকরপ্রসাদের। ১৯৪২-এ ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ভারতের স্বাধীনতার সমর্থনে বক্তব্য পেশ। ১৯৪৪-এ হাইকোর্টে যোগ দেন এবং ১৯৫৭-য় বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন। ১৯৫২-য় পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার নির্বাচিত সদস্য এবং ১৯৫৬-য় ভূমি, ভূমি রাজস্ব, আইন ও বিচার দফতরে পূর্ণমন্ত্রী। ১৯৮১-তে রাজ্যসভার নির্দল সদস্য। ১৯৭৪-এ পশ্চিমবঙ্গের কার্যনির্বাহী রাজ্যপাল। শংকরপ্রসাদ গাঁধী মেমোরিয়াল কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব সামলান আজীবন। বহু প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তিনি ঘনিষ্ঠ ভাবে যুক্ত ছিলেন। বহু মনীষীর জীবনী লিখেছেন। ১৯৮৬-র ৯ অগস্ট দিল্লিতে প্রয়াত হন। তাঁর জন্মশতবর্ষ পালনে ‘জাস্টিস শংকরপ্রসাদ মিত্র বার্থ সেন্টিনারি সেলিব্রেশন কমিটি’ তৈরি হয়েছে, যার নেতৃত্বে প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি চিত্ততোষ মুখোপাধ্যায়। ঠাকুরপুকুরের সরোজ গুপ্ত ক্যানসার সেন্টােরর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন শংকরপ্রসাদ, সেখানেই রোগীদের মধ্যে ফল মিষ্টি বিতরণ করে উদ্‌যাপনের সূচনা ২৬ ডিসেম্বর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkatar Korcha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE