বন্ধ মেট্রো। চাঁদনি চক স্টেশনে অপেক্ষায় যাত্রীরা। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
হাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কালবৈশাখী ঝড়ের স্থায়িত্ব ছিল মাত্র এক মিনিট। ওই এক মিনিটের ঝড়েই লন্ডভন্ড হয়ে গেল শহর। বিভিন্ন এলাকায় পড়ল ছ’টি গাছ। এক জায়গায় আবার গাছের ডাল মাথায় পড়ে আহত হলেন এক পথচারী। ঝড়ের পরে দেখা যায়, এক দিকে রাস্তায় যানজট, অন্য দিকে মেট্রোয় যান্ত্রিক গোলযোগ। সব মিলিয়ে কঠিন পরিস্থিতি।
আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, ঘণ্টায় ৭০ কিলোমিটার গতিবেগের ওই ঝড় গোটা কলকাতার উপর দিয়েই বয়ে গিয়েছে। সেই সঙ্গে ছিল বজ্রবিদ্যুৎ-সহ জোরালো বৃষ্টি। সারা দিনের অস্বস্তিকর গরমের পরে সন্ধ্যার ঝড়-বৃষ্টিতে তাপমাত্রা একটু কমলেও বাড়ি ফিরতে গিয়ে কার্যত নাস্তানাবুদ হন বহু মানুষ।
পুরসভা ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গোটা কলকাতায় গাছ পড়েছে ছ’টি জায়গায়। বর্ধমান রোডে গাছ পড়ে এক জন পথচারী আহত হয়েছেন। চৌরঙ্গি রোড, বিডন স্ট্রিট ও ডোভার লেনের কাছে রমনী চ্যাটার্জি স্ট্রিটে একটি করে গাছ পড়ে। রসা রোডেও দু’টি গাছ পড়েছে। গাছ পড়ায় ওই রাস্তাগুলিতে স্বাভাবিক ভাবেই যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। তবে পুরসভার মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার জানান, গাছ পড়ার খবর পেয়েই পুরকর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে যান। সল্টলেকেও তিনটি গাছ পড়েছে। ঝড়ে হরিদেবপুরের একটি অনুষ্ঠানের প্যান্ডেল উড়ে গিয়ে পাশের বাড়ির চালে পড়ায় এক মহিলা আহত হন।
দুর্যোগের পরে রাস্তায় যানজট দেখে যাঁরা মেট্রো ধরতে যান, তাঁরাও নাকাল হন। মেট্রো সূত্রের খবর, ঝড়বৃষ্টির সময়ে সেন্ট্রাল স্টেশনে এক দিকের থার্ড লাইনে বিদ্যুৎ চলে যায়। সেই সময়ে ওই স্টেশনে একটি এসি ট্রেন দাঁড়িয়ে ছিল। ওই ট্রেন আটকে পড়ায় সেন্ট্রাল থেকে দমদমের মধ্যে পরপর সব ক’টি ট্রেন দাঁড়িয়ে যায়। ফলে ৭টা ৪০ থেকে ৮টা পর্যন্ত সেন্ট্রাল থেকে দমদম পর্যন্ত মেট্রো চলেনি। ওই লাইনে ট্রেন বন্ধ থাকায় দমদমমুখী ট্রেন পরিষেবাও বিপর্যন্ত হয়। এর পরে ট্রেন চালু হলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে বেশ কিছু ক্ষণ সময় লাগে।
ঝড়ের দাপটে এ দিন শিয়ালদহ-ব্যারাকপুর এবং চক্ররেলের পথে ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়। ওভারহেড তারে বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় দমদম, শিয়ালদহ, টিটাগড় এবং কলকাতা স্টেশনে ট্রেন আটকে পড়ে। বালিঘাট ও বিরাটি স্টেশনেও একই ঘটনা ঘটে। এ ছাড়াও, হাওড়া থেকে কর্ড ও মেন লাইনে ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়।
ঝড়বৃষ্টিতে বিমান ওঠানামাও ঘণ্টাখানেক বন্ধ রাখতে হয়। বহু বিমান নামতে না পেরে আকাশে চক্কর কাটতে থাকে। কলকাতা থেকে অন্য শহরের উড়ানগুলিও দেরিতে ছাড়ে। বিমানবন্দর সূত্রের খবর, এ দিন কলকাতার আকাশে এসে বেশ কিছু ক্ষণ চক্কর কাটার পরেও নামতে না পেরে তিনটি উড়ান ভুবনেশ্বরে চলে যায়। তাদের মধ্যে একটি ছোট ভাড়া করা বিমান আসছিল মুম্বই থেকে। অন্য দু’টি আসছিল বেঙ্গালুরু ও দিল্লি থেকে। রাতে আকাশ পরিষ্কার হলে ওই তিনটি বিমান শহরে এসে নামে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy