প্রতীকী ছবি।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে কলকাতা পুরসভার বিভিন্ন ট্র্যাফিক সিগন্যালে রবীন্দ্রসঙ্গীত বাজানো শুরু হয়েছিল। এ বার একই পথে হেঁটে দক্ষিণ দমদম পুরসভার ৩৫টি ওয়ার্ডে বাতিস্তম্ভে লাগানো স্পিকার বক্সের মাধ্যমে নাগরিকদের রবীন্দ্রসঙ্গীত শোনানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি চেয়ারম্যান পরিষদের বৈঠকে এই সংক্রান্ত প্রস্তাব পাশ হয়ে গিয়েছে বলে সূত্রের খবর।
পুরসভার আলো বিভাগের চেয়ারম্যান পারিষদ প্রবীর পাল বলেন, ‘‘চেয়ারম্যান পরিষদের বৈঠকে প্রস্তাব পাশ হয়ে গিয়েছে। আজ, বৃহস্পতিবার পুরবোর্ডের বৈঠকে সবুজ সঙ্কেত পেলেই কাজ শুরু করে দেব।’’ পুরসভা সূত্রের খবর, শুধু রবীন্দ্রসঙ্গীত নয়, ‘বিজ্ঞাপন’ বিরতিতে শোনা যেতে পারে স্থানীয় কাউন্সিলরের আর্জি। গানে ছেদ পড়তেই হয়তো জনপ্রতিনিধি বলতে শুরু করলেন, ‘আমি আপনাদের কাউন্সিলর বলছি। অযথা জল অপচয় করবেন না’। অথবা শোনা যেতে পারে যত্রতত্র আবর্জনা না ফেলার আবেদন। পুরসভা সূত্রের খবর, ডেঙ্গি নিয়ে প্রচার, কাউন্সিলরদের পুর পরিষেবা সংক্রান্ত আবেদনের পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেওয়া বিভিন্ন বার্তা ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের প্রচারও স্পিকার বক্সে বাজানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
দমদমবাসীদের অভিযোগ, খেলা-মেলা-উৎসবের উদ্বোধন ঘিরে এমনিতে সারা বছরই মাইকের উৎপাত চলে। তার উপরে আবার পাড়ায় পাড়ায় এমন ‘চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত’ কেন সেই প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরাও। তাঁদের যুক্তি, পাড়ার মধ্যে সর্বক্ষণ গান, সচেতনতা প্রচার বা কাউন্সিলরের আর্জি শুনতে কারও কারও না-ও ভাল লাগতে পারে। সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য পলাশ দাস বলেন, ‘‘পরীক্ষার সময়টুকু বাদ দিয়ে সারা বছর দমদমে যে ভাবে মাইক বাজে তাতে মানুষ অতিষ্ঠ। এর উপরে বাড়ির সামনে এ ভাবে বছরভর স্পিকার বক্স লাগানোর ব্যবস্থা হলে সাধারণ মানুষের অসুবিধা হবে।’’
প্রবীরবাবু বলেন, ‘‘মাইকের দাপট বলতে যা বোঝায়, বিষয়টি কিন্তু তা নয়। মৃদু স্বরে রবীন্দ্রসঙ্গীত চললে মন্দ কী! তা ছাড়া অনেক নাগরিক আছেন যাঁদের কর প্রদান সম্পর্কে অনেক প্রশ্ন থাকে। জল সরবরাহ বন্ধ থাকলে সেই তথ্যও পাওয়া যাবে। পুর পরিষেবা সম্পর্কিত যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মানুষ নিজের পাড়াতেই জানতে পারবেন। এই দিকটাও তো আছে।’’
যদিও এই ব্যবস্থায় সাধারণ মানুষের সুবিধার চেয়ে প্রচারের আধিক্যই দেখছেন বিরোধীরা। তাঁদের বক্তব্য, ফ্লেক্স-হোর্ডিংয়ে ভরে রয়েছে পুর এলাকার বিভিন্ন মোড়। এর পরেও কার্যত প্রচারের পথ প্রশস্ত করতেই পাড়ায় পাড়ায় এই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সিপিএম নেতা পলাশ দাসের কথায়, ‘‘এই ব্যবস্থায় যা খরচ হবে, তা দিয়ে মানুষকে আরও ভাল পরিষেবা দেওয়া যেত। তা না করে সারা ক্ষণ মানুষকে কিছু শুনতে বাধ্য করা ঠিক নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy