Advertisement
১১ মে ২০২৪
High Court

বকেয়া মামলার পাহাড়, আদালত খোলা অনিশ্চিতই

আইনজীবীদের একাংশের বক্তব্য, লকডাউন ঘোষণা হওয়ার পর থেকে শুধু জরুরি মামলার শুনানি হয়েছে।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০২০ ০২:৪১
Share: Save:

আগামী সপ্তাহ থেকে পরীক্ষামূলক ভাবে ছন্দে ফেরার চেষ্টা করবে কলকাতা হাইকোর্ট। কিন্তু রাজ্যের নিম্ন আদালতগুলিতে স্বাভাবিক কাজকর্ম কবে থেকে শুরু হবে? আদালত সূত্রের খবর, নিম্ন আদালতের কাজকর্ম স্বাভাবিক ছন্দে ফেরা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছিল। কিন্তু আলিপুর আদালতের দুই বিচারকের করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ার পরে সেই প্রক্রিয়ায় একটি প্রশ্নচিহ্ন দেখা দিয়েছে। শনিবার রাত পর্যন্ত এ নিয়ে কোনও সমাধানসূত্র বেরোয়নি বলেই হাইকোর্ট সূত্রের খবর। এ নিয়ে সর্বশেষ যে বৈঠক হয়েছিল, তাতে ৮ জুনের পরে পরিস্থিতি যাচাই করে জেলা বিচারকদের সিদ্ধান্ত নিতে বলেছিল কলকাতা হাইকোর্ট।

আলিপুর আদালতের খবর, দুই বিচারক-সহ আলিপুর আদালতের সাত জনকে কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়েছে। দুই বিচারক ছাড়া বাকিদের লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। তাঁদের রিপোর্ট আসার পরে বাকি আইনজীবী ও কর্মীদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আদালতের একটি সূত্রের দাবি, শনিবার বিকেল পর্যন্তও দুই বিচারকের চেম্বার ও এজলাস জীবাণুমুক্ত করা হয়নি। সোমবার আলিপুর জজ কোর্টে কয়েকটি জরুরি মামলার শুনানি রয়েছে। সেই শুনানিগুলিও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বলে আইনজীবীদের একাংশের দাবি।

আইনজীবীদের একাংশের বক্তব্য, লকডাউন ঘোষণা হওয়ার পর থেকে শুধু জরুরি মামলার শুনানি হয়েছে। এর বাইরে রোজকার যে কাজ (যেমন গ্রেফতারের পরেই এজলাসে ধৃতকে হাজির করানো) তা-ও হয়েছে। কিন্তু বাকি শুনানি না-হওয়ায় মার্চের শেষ থেকে মামলার নিষ্পত্তির হার কার্যত শূন্যে গিয়ে ঠেকেছে। ন্যাশনাল জুডিশিয়াল ডেটা গ্রিড অনুযায়ী, শুধু কলকাতা হাইকোর্টেই বকেয়া রয়েছে ২২,৪১৭টি মামলা। রাজ্যের নিম্ন আদালতগুলির মোট বকেয়া মামলার সংখ্যা ২৩ লক্ষেরও বেশি। ফলে লকডাউন চলতে থাকলে সেই বকেয়া মামলাগুলির নিষ্পত্তি হবে না। আলিপুর আদালতের আইনজীবী প্রশান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘সব কিছুই খুলে যাচ্ছে। কিন্তু ৭০ দিনের বেশি হয়ে গেল আদালত বন্ধ। সব খুললে আদালত খুলে দিতেই বা দোষ কী?’’ আইনজীবীদের অনেকে বলছেন, বহু আইনজীবী নোটারি বা হলফনামা পেশের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করেন। তাঁদের আর্থিক সমস্যা ক্রমশ বাড়ছে। আইনজীবীদের অফিসে যাঁরা করণিকের কাজ করেন, তাঁরাও সমস্যার মুখে। এই পরিস্থিতিতে সেটাও বিবেচনা করা উচিত। শুধু তা-ই নয়, আইনজীবীদের একাংশও লকডাউনের জেরে আর্থিক সমস্যায় পড়েছেন। তবে করোনা সংক্রমণ নিয়ে আতঙ্কের কথাও বলছেন আইনজীবীদের অনেকে। আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা অবশ্য বলছেন, ‘‘পরিস্থিতির কথাও মাথায় রাখা উচিত। হাইকোর্ট যা নির্দেশ দেবে, সেটা মেনেই চলতে হবে।’’

আরও পড়ুন: লকডাউনে বাড়তি ফি কেন, বিক্ষোভ স্কুলে স্কুলে

কলকাতা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল রাই চট্টোপাধ্যায় যে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন, তাতে দেখা গিয়েছে, আপাতত ১১, ১৫, ১৭ ও ১৯ জুন হাইকোর্টের কয়েকটি এজলাস খোলা হবে। তবে করোনা সংক্রমণ ঠেকানোর সব বিধি মেনেই কাজ চলবে। সামাজিক দূরত্ব-বিধি না-মানলে বিনা নোটিসে আদালত বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে। আদালতে বিচারপতিরা ছাড়া তিন জন আধিকারিক এবং একসঙ্গে সর্বোচ্চ আট জন আইনজীবী হাজির থাকতে পারবেন। বার ও লাইব্রেরিতেও সামাজিক দূরত্ব-বিধি মেনে চলতে বলা হয়েছে। অপ্রয়োজনে হাইকোর্ট চত্বরে ভিড় করা যাবে না। হাইকোর্টের কোন কোন ঘরে শুনানি হবে এবং কোন কোন গেট খোলা থাকবে তা-ও বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।

আইনজীবীদের অনেকে বলছেন, নিম্ন আদালতেও এ ভাবে কাজ করা সম্ভব। প্রয়োজনে গেটে কড়া পাহারাও বসিয়ে দেওয়া যেতে পারে।

আরও পড়ুন: কাজ শুরু করলেও ধাপার চুল্লি ফের খারাপ হওয়ার আশঙ্কা

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

High Court Arrear Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE