গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
সাত সকালে ট্যাক্সি থামিয়ে ছিনতাই! তাও মধ্য কলকাতার বুকে, পুলিশের সামনে, এমনটাই অভিযোগ। রাস্তায় রাস্তায় সে সময় পুলিশি টহল চলছে। মোড়ে মোড়ে রয়েছেন ট্রাফিক সার্জেন্টরা!
হাওড়ার বঙ্গবাসী মোড়ে কাপড়ের ব্যবসা সুদীপ রঞ্জন শর্মার। আদতে ত্রিপুরার বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার সকালে হাওড়া থেকেই রওনা হয়েছিলেন বিমানবন্দরের উদ্দেশে। সুদীপ বলেন, “আমার ফ্লাইট ছিল সকাল সাড়ে ৮টায়। একটা হলুদ ট্যাক্সির সঙ্গে তিনশো টাকায় চুক্তি হয়।” তার পরের ঘটনায় তাজ্জব হয়ে গিয়েছেন এই ব্যবসায়ী।
সুদীপের কথায়: “ট্যাক্সিটা পোস্তা ফ্লাইওভারের তলা দিয়ে যাচ্ছিল। তখন ভোর সাড়ে ৬টা। উড়ালপুলের যে অংশটা ভেঙে গিয়েছে, ঠিক তার আগে হঠাৎ ট্যাক্সিচালক গাড়ি থামিয়ে দেন। আমার তাড়া ছিল। চালককে থামার কারণ জিজ্ঞাসা করতেই তিনি বলেন, পিছনে কেউ দাঁড়াতে বলছে। আমি কিছু বোঝার আগেই একটা ছেলে ট্যাক্সির পিছনের ডান দিকের দরজা খুলে ওঠার চেষ্টা করে। আমি বাধা দিই। দরজা টেনে আটকে দিই। তখন সামনের সিটে জোর করে চার জন যুবক উঠে যায়।”
আরও পড়ুন:
রাস্তা পেরোতে দেরি, ট্র্যাফিক পুলিশকে ‘মার’
সুদীপ সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদ করেন। কিন্তু ওই যুবকরা চালককে ভয় দেখাতে শুরু করে। সুদীপের এর পরের অভিযোগ আরও মারাত্মক। তাঁর দাবি, “রাস্তার ধারে এক জন ট্রাফিক কনস্টেবল দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁকে আমি চিৎকার করে বলি। কিন্তু তিনি দুষ্কৃতীদের ধরার বদলে ট্যাক্সিচালককে গাড়ি নিয়ে এগিয়ে যেতে বলেন।”
অভিযোগ, এর পরই চলন্ত ট্যক্সিতে ওই যুবকরা সুদীপের গলা থেকে সোনার হার ছিনিয়ে নেয়। সঙ্গের ব্যাগও ঘাঁটাঘাটি করতে শুরু করে। তার মধ্যে সুদীপ মোবাইলে ওই যুবকদের ছবি তোলার চেষ্টা করেন। তখন তারা মোবাইল কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু তত ক্ষণে মানিকতলা মোড়ের কাছে ট্যাক্সি ট্রাফিক সিগন্যালে দাঁড়িয়েছে। সাহস করে এ বার চিৎকার জুড়ে দেন সুদীপ। তখন ভয় পেয়ে ট্যাক্সি থেকে নেমে পালায় চার যুবক।
এই ট্যাক্সিতে উঠেই ছিনতাই করে ৪ দুষ্কৃতী। পাশে ট্যাক্সিচালক। নিজস্ব চিত্র।
বিমান ধরার তাড়া থাকায় এর পর সোজা নেতাজি সুভাষ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছন তিনি। সেখানে সিআইএসএফের সাহায্যে বিমানবন্দর থানায় অভিযোগ জানান তিনি। পুলিশ ওই ট্যাক্সিচালককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। বিধাননগর পুলিশের এক কর্তা জানিয়েছেন, “আমরা অভিযোগ জমা নিয়েছি। যেহেতু ঘটনাটি কলকাতা পুলিশ এলাকায় ঘটেছে, তাই আমরা অভিযোগপত্র কলকাতা পুলিশের কাছে পাঠিয়েছি। তারা তদন্ত করবে। আটক ট্যাক্সিচালককেও কলকাতা পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।”
কিন্তু কী ভাবে দিনের বেলায় রাস্তায় পুলিশের উপস্থিতিতে এই ঘটনা ঘটল? কলকাতা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, “আমরা ঘটনাস্থলের আশপাশে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy