Advertisement
১১ মে ২০২৪

ফল বেরোতেই বিক্ষিপ্ত হামলা, অভিযুক্ত তৃণমূল

সকলকে শান্তি রক্ষার আগাম আবেদন জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা স্বয়ং। শেষ রক্ষা হল না। ভোটের ফল বেরোনোর পরে কোথাও বিরোধীদের অফিস ভাঙচুর, কোথাও কর্মীদের মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০১৫ ০২:৫৫
Share: Save:

সকলকে শান্তি রক্ষার আগাম আবেদন জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং। শেষ রক্ষা হল না। ভোটের ফল বেরোনোর পরে বিক্ষিপ্ত ভাবে কোথাও বিরোধীদের অফিস ভাঙচুর, কোথাও কর্মীদের মারধর, এমনকি, মহিলা কর্মীদের পোশাক ছিঁড়ে দেওয়ারও অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। রাতে তাঁর উপরে তৃণমূলের হামলার অভিযোগ করলেন বাগবাজারে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিজয়ী বিজেপি প্রার্থী বাপি ঘোষ। অভিযোগ মানেনি তৃণমূল।

রাতেই তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের খবর আসে ৮১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে। যার দুই প্রতিপক্ষ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের ভাই স্বরূপ বিশ্বাস ও তৃণমূল নেতা শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়।

আরও কী কী হয়েছে মঙ্গলবার?

পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন বেলা ১২টা নাগাদ আনন্দপুর থানার চৌবাগার শ্যামবাদালে বিজেপি কর্মীদের বাড়িতে চড়াও হয় একদল যুবক। আক্রান্ত পরিবারগুলির অভিযোগ, ওই যুবকেরা তৃণমূলকর্মী। অভিযোগ, বাড়ি ভাঙচুরের সঙ্গে মহিলাদের উপরেও হামলা হয়। বিজেপি কর্মী নিবেদিতা সর্দার বলেন, ‘‘মেয়েকে কোলে নিয়ে বাড়ির বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিলাম। হঠাৎ সবুজ আবির মাখা ওই যুবকেরা বাড়িতে ঢুকে কোল থেকে মেয়েকে ফেলে দিয়ে আমাকে ধরে টানতে থাকে। পোশাকও ছিঁড়ে দেয়।’’ তিনি জানান, চিৎকার শুনে ভিতর থেকে তাঁর শাশুড়ি অনুরূপাদেবী বেরিয়ে আসেন। তাঁরও পোশাক ছিঁড়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, এর পরে ওই যুবকেরা এলাকার পরিচিত বিজেপি কর্মী জগন্নাথ পাত্র, আরতি মণ্ডলের বাড়িতে ভাঙচুর চালায়। জগন্নাথের স্ত্রী করুণাদেবী বলেন, ‘‘ওরা মোটরবাইকে এসেছিল। আমাকে ও আমার ৩ বছরের মেয়েকে ঘর থেকে টেনে বার করে ভাঙচুর চালায়।’’ এর পরেই ওই দলটি আরতি মণ্ডলের বাড়িতে গিয়ে জানলা ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ। এক বাসিন্দা মাধবী পাত্র বলেন, ‘‘তৃণমূলের ছেলেরা হুমকি দিয়েছে, বিজেপি করলে খুন করে দেওয়া হবে।’’ প্রায় আধ ঘণ্টা তাণ্ডব চালিয়ে ওই যুবকেরা চলে যায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, এর পরে পুলিশ আসে। পুলিশকর্তারা জানিয়েছেন, এলাকায় পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে।

শুধু চৌবাগাতেই নয়, বিরোধী দলের কর্মীদের উপরে হামলার অভিযোগ উঠেছে দক্ষিণ দমদম পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডেও। অভিযোগ, ওই ওয়ার্ডে সিপিএমের দলীয় অফিসে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। এক সিপিএম কর্মী মঞ্জু দাস জানান, এ দিন দুপুরে ফল প্রকাশের পরেই মোটরবাইকে করে তৃণমূলের একদল কর্মী আক্রমণ চালায় বিবেকানন্দ পল্লির শিবতলার ওই অফিসে। মঞ্জুদেবী বলেন, ‘‘দলীয় অফিসে ঢুকে কার্যত তাণ্ডব চালিয়েছে তৃণমূলের কর্মীরা। সব আসবাবপত্র গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।’’ বেলেঘাটার ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে সিপিএমের যুব সংগঠনের কর্মী তন্ময় দাশগুপ্তের বাড়িতে ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। শ্যামপুকুরে কয়েক জন সিপিএম কর্মীকে রাস্তায় ফেলে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের জয়ী প্রার্থী, সিপিআইয়ের করুণা সেনগুপ্ত। তিনি বলেন, ‘‘ভোটে হেরে তাণ্ডব চালাচ্ছে তৃণমূল। এই ঘটনায় তিন জন আহত হয়েছেন।’’

এই সব ঘটনার পরে কী বলছেন তৃণমূল নেতারা? তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কোথাও কোনও অশান্তি হয়নি। যেখানে যেটুকু অভিযোগ উঠেছে, সেখানে জনসমর্থন হারানো বিরোধীরা খবরে থাকার জন্যই এ ধরনের কাজ করেছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE