সব পরীক্ষা অসম্ভব
সকাল ১০টার অফিসটাইমের ভিড়। দমদম মেট্রো স্টেশনের টিকিট কাউন্টার ঘেঁষা স্মার্ট গেট দিয়ে যাত্রীরা ঢুকেই যাচ্ছেন সিঁড়ির দিকে। সিঁড়ির কাছেই মেটাল ডিটেক্টরের গেট পাশ কাটিয়ে যাচ্ছেন অনেকেই। পাশেই চেয়ার-টেবিল পেতে বসে কয়েক জন রেল পুলিশকর্মী। মিনিটখানেক দাঁড়িয়ে দেখা গেল, তাঁরা মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে ব্যাগ পরীক্ষা করলেন ৪০ জনের মধ্যে ৭ জনের। এক অফিসার বলেন, “অফিসটাইমে এক-এক জনের ব্যাগ দেখতে গেলে তো মার খেতে হবে!”
মুখ দেখে
কিন্তু যখন অফিসটাইমের ভিড় থাকে না, তখন? দুপুর ৩টের অপেক্ষাকৃত ফাঁকা স্টেশনে দেখা গেল, আলস্যে গা এলিয়ে রয়েছেন নিরাপত্তাকর্মী। পাশ দিয়ে দিব্যি ঢুকে যাচ্ছেন যাত্রীরা। রক্ষীদের দাবি, “সবার তল্লাশির দরকার নেই। সন্দেহজনক ব্যক্তি বেছে বেছে তল্লাশি চালাচ্ছি।”
খারাপ স্ক্যানার
এসপ্ল্যানেড স্টেশনে স্ক্যানার মেশিনের সামনের অংশটি নেই। খুঁজতে গিয়ে দেখা গেল, সেই অংশ খুলে দেওয়ালের ধারে রাখা। সেখানেই এখন মেট্রোর নিরাপত্তকর্মীদের ব্যাগ ও অন্য জিনিসপত্র রাখার জায়গা। কেন? কর্মীদের বক্তব্য, ওই মেশিনটি তো বহুদিন ধরে খারাপ। শুধু এসপ্ল্যানেডেই নয়, অনেক স্টেশনেই স্ক্যানার মেশিনে ধুলো জমেছে। মেট্রো রেলের হিসেবে, বিভিন্ন স্টেশনে রয়েছে মোট ২৪টি লাগেজ স্ক্যানার। এর মধ্যে কবি সুভাষ, গীতাঞ্জলি, মাস্টারদা সূর্য সেন, মহানায়ক উত্তমকুমার, রবীন্দ্র সরোবর, নেতাজি ভবন বা পার্ক স্ট্রিটে লাগেজ স্ক্যানার মেশিন কোথাও ঠিক মতো কাজ করে না, কোথাও ‘আউট অব অর্ডার’। একই ছবি উত্তরের স্টেশনগুলিরও।
এক দিক খোলা
রবীন্দ্র সদনে দক্ষিণ দিকের গেটে প্রত্যেক যাত্রীর ব্যাগ স্ক্যানার মেশিনে পরীক্ষা করা হচ্ছে। তাই তাড়া থাকলে ওই গেট ব্যবহার করেন না অনেকেই। এক যাত্রীর বক্তব্য, “ওই স্টেশনের অন্য প্রবেশপথে স্ক্যানার মেশিন নেই। এই তথ্য সবাই জানেন। যদি কেউ ব্যাগে বিপজ্জনক কিছু নিয়ে ঢুকতে চায়, সে কি বেছে বেছে স্ক্যানার মেশিন লাগানো গেট দিয়েই ঢুকবে?” শুধু রবীন্দ্র সদনই নয়, এক দিকে স্ক্যানার মেশিন লাগিয়ে অন্য গেট খোলা রাখার এই ‘বিচিত্র’ ব্যবস্থা মেট্রোর প্রায় সব স্টেশনেই।
মেট্রোর সাফাই
প্রতিদিন গড়ে ৬ লক্ষ যাত্রীর জন্য ৬০০ জন রেলরক্ষী কাজ করেন। সবাই অবশ্য যাত্রী নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকেন না। এই পরিকাঠামোয় কি সবার তল্লাশি সম্ভব? মেট্রো রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র বলেন, “আমাদের ৪৮টি মেটাল ডিটেক্টর, ৪৮টি ডোর ডিটেক্টর, ২৪টি স্ক্যানার মেশিন বাদেও রয়েছে ৬০০টি সিসিটিভি। বিশেষ দিনগুলোয় কর্মীর সংখ্যা বাড়ানো হয়।” একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “কয়েকটা যন্ত্র খারাপ থাকতে পারে। তবে একটি যন্ত্র খারাপ হলেই সঙ্গে সঙ্গে আর একটি নতুন যন্ত্র বসিয়ে দেওয়ার মতো এবং প্রত্যেকটি স্টেশনের সব গেটে লাগেজ স্ক্যানার মেশিন বসানোর মতো পরিকাঠামো আমাদের এখনও হয়নি।”
বিধিসম্মত সতর্কীকরণ
প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে নিরাপত্তা বৃদ্ধির বিশেষ নির্দেশ দিয়েছে সরকার।
ছবি: বিশ্বনাথ বণিক ও সুমন বল্লভ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy