বিপত্তি: ভেঙে পড়েছে কোয়ার্টার। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়
চটকল বন্ধ প্রায় তিন বছর। মিল খুলবে এই আশায় শ্রমিকেরা পড়ে রয়েছেন বন্ধ কলের আবাসনে। গত চল্লিশ বছরে ভাটপাড়া নদিয়া জুটমিলের ওই আবাসনে কোনও মেরামতি হয়নি। তেমনই একটি কোয়ার্টার ভেঙে জখম হলেন এক শ্রমিক পরিবারের পাঁচ সদস্য। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সকলেই। তার মধ্যে দু’জনের চোট গুরুতর।
এই ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পডে়ছেন আবাসনের অন্যান্য আবাসিক শ্রমিকেরা। আতঙ্কে অনেকেই ঘর ছাড়তে শুরু করেছেন। পুলিশ আবাসিকদের ওই ভগ্নপ্রায় আবাসন ছেড়ে দিতে বলেছে। ভাঙা আবাসনের অনকেই পাশের একটি ক্লাবে আশ্রয় নিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতের খাবার খেয়ে শুয়ে পড়েছিলেন রামপ্রীত কুশওয়া এবং তাঁর পরিবারের সদস্যেরা। রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ আচমকাই বাড়ির একটি অংশ ভেঙে পড়ে। রামপ্রীতের স্ত্রী সোনা দেবী ছাড়া পরিবারের সকলেই দেওয়াল চাপা পড়ে যান।
বাড়ি ভেঙে পড়ার শব্দে ছুটে আসেন আবাসনের অন্যান্যেরা। ঘটনাস্থলে আসেন পাড়ার বাসিন্দারাও। স্থানীয় ক্লাবের সদস্যেরা জখমদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। রামপ্রীত ছাড়া জখম হয়েছেন তাঁর তিন ছেলে রামেশ্বর, রাজ, কুণাল এবং মেয়ে পিঙ্কি। কোনও রকমে রক্ষা পান সোনা। রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। বিপজ্জনক বাড়ি ছাড়ার কথা বলেন পুলিশ কর্মীরা।
স্থানীয় ক্লাবের সদস্য আনন্দ সাউ জানান, ওই আবাসনের কোয়ার্টারগুলিতে প্রায় ৭০০ মানুষ বসবাস করেন। অনেকেই কোয়ার্টার ছেড়ে বিহার বা উত্তরপ্রদেশে নিজের বাড়িতে চলে গিয়েছেন। আবাসনের দেওয়াল অনেক দিন ধরেই ভেঙে পড়েছিল। কিন্তু অন্য কোথাও যাওয়ার জায়গা না থাকায় এবং একদিন চটকল খুলবে এই আশায় অনেকেই আবাসনে রয়ে গিয়েছেন।
আনন্দ জানান, বার বার বলার পরেও বিপজ্জনক বাড়ি ছেড়ে যাননি আবাসিকেরা। বৃহস্পতিবার রাতে দোতলার যে কোয়ার্টারটি ভেঙে পড়ে, সেটির অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। তিনি বলেন, ‘‘ভেঙে পড়ার পড়ে আমরা যখন ছুটে যাই, তখন পা রাখতেই ভয় করছিল। কোনও রকমে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই।’’
আশেপাশের কোয়ার্টারগুলির বাসিন্দাদের ক্লাবের ছেলেরাই বের করে আনেন। অনেক পরিবার আপাতত সেই ক্লাবেই ঠাঁই নিয়েছেন। রামপ্রীতদের প্রথমে ভাটপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে দু’জনকে নদিয়ার কল্যাণী জেএনএম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার সকালে আবাসিকদের অনকেই বাড়ি ভাড়া করে উঠে গিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy