Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

নদী থেকে মৃতদেহ উদ্ধার বিজেপি নেতার

ঢোলাহাটের কাকদ্বীপ পঞ্চায়েত সমিতির রবীন্দ্র পঞ্চায়েতের কোয়াবেড়িয়া গ্রামের ঘটনা।

কাদের আলি মোল্লা

কাদের আলি মোল্লা

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাকদ্বীপ শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০১৯ ০৫:৩১
Share: Save:

বাড়ির কাছে নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছিলেন কাকদ্বীপ এলাকার বিজেপি নেতা। তিন দিন পর রবিবার সকালে মৎস্যজীবীদের জালে আটকাল ওই ব্যক্তির মৃতদেহ।

ঢোলাহাটের কাকদ্বীপ পঞ্চায়েত সমিতির রবীন্দ্র পঞ্চায়েতের কোয়াবেড়িয়া গ্রামের ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, ওই ব্যক্তির নাম কাদের আলি মোল্লা (৬২)। তিনি ওই এলাকার বিজেপির বুথ সভাপতি ছিলেন। তাঁকে খুন করে নদীতে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ তুলে দেহ আটকে বিক্ষোভ দেখান গ্রামের মানুষ। অভিযুক্তদের গ্রেফতার এবং সিবিআই তদন্তের দাবি তোলেন তাঁরা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আগে বাম জমানায় তিনি ওই এলাকায় সিপিএমের নেতৃত্ব দিতেন। ২০১৩ সালে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। এলাকায় তার নেতৃত্বেই বিজেপির বাড়বাড়ন্ত হচ্ছিল বলে পরিবারের দাবি। সে নিয়ে শাসকদলের পক্ষ থেকে তাঁকে শাসানো হচ্ছিল বলেও পরিবারের অভিযোগ। এমনকী কাদের আলিকে খুনের হুমকি দেওয়া হচ্ছিল বলেও তাঁরা দাবি করেন।

এলাকাবাসী জানান, কাদের এলাকায় দাপুটে নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তার হাত ধরে বিজেপির ভোট ব্যাঙ্ক বেড়েছে। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপি, সিপিএম ও কংগ্রেসের সমর্থনে নির্দল প্রার্থী সামান্য কিছু ভোটে শাসকদলের কাছে পরাজিত হয়েছিল। এই কারণে শাসকদলের লোকজন তাঁর উপর ক্ষিপ্ত ছিলেন বলে অভিযোগ।

পুলিশ জানিয়েছে, তাঁর পেশা ছিল নদীতে মাছ ধরা। শুক্রবার সকালে বাড়ির কাছেই কালনাগিনী নদীতে নৌকায় মাছ ধরতে বেরিয়েছিলেন কাদের। রাতে আর ফেরেননি। পরেরদিন শনিবার পরিবারের লোকজন এবং গ্রামবাসীরা খোঁজখবর শুরু করেন। কিন্তু তাঁর হদিস মেলেনি। এরপরেই ঢোলাহাট থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। রবিবার সকাল ৭টা নাগাদ ওই নদীর বৈকন্ঠপুর ও কামারহাট গ্রামের কাছে এক মৎস্যজীবীর জালে অটকায় কাদেরের দেহ। সে খবর পান পরিবারের লোকজন।

পুলিশ জানিয়েছে, কাদেরের কপালে ও মুখে আঘাতের চিহ্ন ছিল। মুখ দিয়ে রক্ত বেরোচ্ছিল। গলায় কালশিটে দাগ। পরিবারের লোকজনের দাবি, ওঁকে খুন করে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে। নিহতের ভাই সওকত আলি মোল্লা বলেন, ‘‘দাদা বিজেপি-র নেতৃত্ব দেওয়ায় শাসকদলের কয়েকজন শাসাচ্ছিল। আতঙ্কের মধ্যে থাকতেন দাদা। কয়েক বছর আগেও শাসকদলের কয়েকজনের সঙ্গে জমি সংক্রান্ত বিবাদে জড়িয়ে ছিল দাদা।’’ নিহতের স্ত্রী তাহেরন বিবি বলেন, ‘‘এলাকায় বিজেপির বাড়বাড়ন্ত শাসকদলের কয়েকজন নিতে পারেননি। আমার স্বামীকে ওরা খুন করে নদীতে ফেলে দিয়েছে।’’

এ দিন নিহত কর্মীর বাড়িতে যান বিজেপি জেলা সভাপতি অভিজিৎ দাস। তাঁর দাবি, ‘‘কাদেরের জন্য এলাকায় তৃণমূল ছেড়ে আমাদের দলে যোগ দিচ্ছিলেন অনেকে। তা শাসকদলের নেতারা কোনও ভাবেই মেনে নিতে পারেনি। তাই ওকে খুন করে নদীর জলে ভাসিয়ে দিয়েছে। আমরা সিবিআই তদন্ত দাবি করছি।’’ খুনিদের গ্রেফতার না হলে আন্দোলনে নামা হবে বলে তিনি জানান।

কাদেরকে খুনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূলের নেতারা। তাঁদের দাবি, পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে বিবাদের জেরে খুন হয়েছেন কাদের। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। পুলিশ জানিয়েছে, খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Murder BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE