আদালতের-পথে অভিযুক্ত পুলিশ অফিসার জাহাঙ্গির আলম।—ফাইল চিত্র।
হাড়োয়া কাণ্ডের পর থেকে ভয়ে স্কুলে আসছে না পড়ুয়া ও শিক্ষকরা। বন্ধ রয়েছে ক্লাস। ক্ষতি হচ্ছে পড়াশোনার। এলাকায় পুলিশ টহলও চলছে।
এমন পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য মাইকে প্রচার চালাল পুলিশ। হাড়োয়া থানার এক অফিসার বলেন, ‘‘স্কুলের ক্লাস যাতে দ্রুত শুরু হতে পারে, সে জন্য মঙ্গলবার সব পক্ষকে নিয়ে আলোচনা করা হবে। সে বিষয়েই মাইকে প্রচার করা হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে দু-এক দিনের মধ্যেই ক্লাস শুরু হবে।’’ পুলিশ জানিয়েছে, তদন্তে দুই সিভিক ভলান্টিয়ারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
বাছড়া এমসিএইচ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক গোবিন্দচন্দ্র সরকার বলেন, ‘‘পড়ুয়ারা আসছে না দেখে ক্লাস বন্ধ রাখা হয়েছে। একটি অপ্রীতিকর ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্ষিপ্ত জনতা এবং পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। তার জেরে পড়ুয়ারা ভীত হয়ে পড়েছে। স্কুলে আসতে পারছে না। তারা স্কুলে আসলেই ক্লাস শুরু হবে।’’
শুক্রবার হাড়োয়ার হরিণহুলোর একটি স্কুলে অনুষ্ঠান হচ্ছিল। সে সময়ে একাদশ শ্রেণির দুই ছাত্রীকে হাড়োয়া থানার এক পুলিশ অফিসার চাকরির লোভ দেখিয়ে ফাঁকা ঘরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। এই ঘটনার কথা চাউর হতেই এলাকায় ক্ষিপ্ত জনতা ওই পুলিশ অফিসার জাহাঙ্গির আলমকে মারধর শুরু করে। পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করতে গেলে জনতার সঙ্গে মারামারি বেধে যায়। আহত হন কয়েকজন পুলিশ কর্মী-সহ বেশ কিছু গ্রামবাসী। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জাহাঙ্গির। তাঁর দাবি, মিথ্যা মামলায় তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। এই ঘটনার পর থেকে স্কুলে আর ছাত্রছাত্রীরা আসেনি। এ দিকে নতুন করে যাতে গন্ডগোল না বাধে তার জন্য পুলিশি টহল চলছে গ্রামে। কিন্তু তবুও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে না। গ্রামের মানুষ আতঙ্কে রয়েছেন। ভয়ে ছাত্রছাত্রী এবং শিক্ষকদের অধিকাংশ না আসায় ক্লাস বন্ধ রয়েছে। এ ভাবে পড়ুয়ারা পিছিয়ে পড়বে বলে জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষক। এক ছাত্রীর কথায়, ‘‘স্কুলের মধ্যে যে ঘটনা ঘটেছে, তা যথেষ্ট রহস্যজনক। ওই দিন ঠিক কী কারণে গন্ডগোল হয়েছিল, তা পুলিশ খতিয়ে দেখছে। স্কুল বন্ধ। ক্লাস করতে পারছি না বলে খারাপ লাগছে।’’ এক অভিভাবকের কথায়, ‘‘সে দিন কী ঘটনা ঘটেছিল, সত্যি জানতে আমরা সবাই আগ্রহী। সে দিনের ঘটনায় যে ভাবে বাড়ি ভাঙচুর এবং মারধর করা হল তাতে আমরা সকলে আতঙ্কিত। কিন্তু এ কথাও ঠিক স্কুল বন্ধ থাকায়, পড়ুয়াদের ক্ষতি হচ্ছে।’’ পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন জাহাঙ্গিরকে বসিরহাটের এডিজেএ স্পেশ্যাল আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে ৪ দিনের জন্য জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy