Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Village

গ্রামের কাছে বাঘের হানায় মৃত্যু

বনদফতর ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই পঞ্চায়েতের দক্ষিণ দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা গোষ্ঠ নাইয়া (৩০) এ দিন সকালে তিন সঙ্গীর সঙ্গে গ্রামের কাছেই জঙ্গল সংলগ্ন নদী খাঁড়িতে মাছ ধরছিলেন।

উদ্ধার: আনা হচ্ছে গোষ্ঠকে। তবে বাঁচানো যায়নি শেষমেশ। ছবি: সুমন সাহা

উদ্ধার: আনা হচ্ছে গোষ্ঠকে। তবে বাঁচানো যায়নি শেষমেশ। ছবি: সুমন সাহা

সমীরণ দাস
কুলতলি শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০২০ ০৫:০৫
Share: Save:

গ্রামের কাছেই বাঘের হানায় মৃত্যু হল এক মৎস্যজীবীর। শনিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে কুলতলির দেউলবাড়ি পঞ্চায়েত সংলগ্ন জঙ্গলে।

বনদফতর ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই পঞ্চায়েতের দক্ষিণ দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা গোষ্ঠ নাইয়া (৩০) এ দিন সকালে তিন সঙ্গীর সঙ্গে গ্রামের কাছেই জঙ্গল সংলগ্ন নদী খাঁড়িতে মাছ ধরছিলেন। হঠাৎ তাঁকে আক্রমণ করে রয়্যাল বেঙ্গল। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘাড় ধরে গোষ্ঠকে জঙ্গলে টেনে নিয়ে যায় বাঘটি। গ্রামের কাছেই ঘটনাটি ঘটে। ফলে বাঘের আওয়াজ শুনেই ঘটনা আঁচ করে অনেকে ছুটে আসেন। পাশাপাশি, গোষ্ঠর সঙ্গীরা চেঁচিয়ে গ্রামের আরও লোক জড়ো করেন। দল বেঁধে লাঠি নিয়ে বাঘের পিছু ধাওয়া করে জঙ্গলে ঢোকেন তাঁরা। এত লোক দেখে শিকার ছেড়ে পালায় বাঘটি। তবে ততক্ষণে গোষ্ঠর দেহে আর প্রাণ ছিল না। গ্রামবসীরা দেহটি উদ্ধার করে গ্রামে ফেরেন। পরে বনদফতরের লোকজন এসে দেহটি ময়নাতদন্তে পাঠায়।

সুন্দরবনের গভীরে নদী খাঁড়িতে মাছ-কাঁকড়া ধরতে গিয়ে প্রায়ই বাঘের আক্রমণের শিকার হতে হয় মৎস্যজীবীদের। কিন্তু গ্রামের এত কাছে বাঘের আক্রমণের ঘটনা সচরাচর ঘটেনা বলেই জানাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। দেউলবাড়ি ও সংলগ্ন এলাকায় এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় নাইয়া পড়ার বাসিন্দা মিঠুন মণ্ডল বলেন, “অনেক আগে একবার রাতে গ্রামে ঢুকে গরু তুলে নিয়ে গিয়েছিল বাঘ। কিন্তু দিনের আলোয় গ্রামের এত কাছে বাঘের আক্রমণের ঘটনা কোনও দিন শুনিনি। গ্রামবাসীদের চেঁচামেচিতে বাঘটি শিকার ফেলে পালিয়েছে।’’ অনেকেই বলছেন, রক্তের স্বাদ পেয়ে যাওয়ায় সে আবার আক্রমণ করতে পারে। মানুষ খুবই আতঙ্কে রয়েছেন।

স্ত্রী এবং তিন সন্তান রয়েছে গোষ্ঠর। নদীতে মাছ কাঁকড়া ধরেই কোনও রকমে সংসার চালাতেন। তাঁর মৃত্যুতে পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও নিরাপত্তা দেওয়ার দাবি তুলেছে মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর। এ দিন দক্ষিণ দুর্গাপুরে গোষ্ঠর বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন প্রাক্তন মন্ত্রী কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়, স্থানীয় বিধায়ক রামশঙ্কর হালদাররা। আর্থিক সাহায্য দেন কান্তি। ছেলেমেয়েদের দেখভালের প্রতিশ্রুতিও দেন।

বনদফতরের চিতুরি রেঞ্জের আধিকারিক পূষণ দত্ত বলেন, “বনদফতরের অনুমতি ছাড়াই ওই মৎস্যজীবীরা সংরক্ষিত জঙ্গলে ঢুকেছিলেন। মৃতের দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। ক্ষতিপূরণের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করবেন।” গ্রামবাসীকে আশ্বস্ করে তিনি বলেন, “বনকর্মীরা সজাগ আছেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Village Tiger Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE