ভোট দেওয়াকে কেন্দ্র করে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষ বাধল। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার দুপুরে, সন্দেশখালির খুলনা পঞ্চায়েতের শিতলিয়ার গোলাবাড়ি গ্রামে। হিঙ্গলগঞ্জ, ন্যাজাট এবং সন্দেশখালি থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষের জেরে জখমদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থাও করে পুলিশ।
অভিযোগ, তৃণমূলের সঙ্গে থেকে প্রচার করলেও ভোট দিয়েছেন বিজেপি প্রার্থীকে— এই ‘অপরাধে’ এক প্রভাবশালী নেতার নেতৃত্বে গ্রামে ঢুকে একটি পরিবারে হামলা চালায় তৃণমূল। গুলিও চলে। ওই নেতা ও তাঁর দাদা-সহ কয়েকজনকে গণধোলাই দেওয়া হয়। হামলাকারীদের ব্যবহৃত বাইকেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
পুলিশ জানায়, তৃণমূলের স্থানীয় পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সত্যজ্যোতি ও তাঁর দাদা দেবজ্যোতি-সহ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁদের দীর্ঘক্ষণ আটকে রাখা হয়। পরে তিন থানার পুলিশ গিয়ে উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করে তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। গুরুতর জখম একজনকে কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। গ্রামে পুলিশি টহল শুরু হয়েছে।
অভিযোগ, এ দিন দুপুর ১টা নাগাদ কয়েকটি বাইকে করে প্রায় ২০ জনের একটি সশস্ত্র দল গোলাবাড়ি ও কলোনিপাড়ায় যায়। অভিযোগ, বিজেপি প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার অপরাধে স্থানীয় তৃণমূল নেতারা কল্পনা বিশ্বাস, বিশ্বজিৎ বিশ্বাস, তপতী মাইতি-সহ কয়েকজনের বাড়িতে গিয়ে তাঁদের মারধর করেন এবং বাড়ি ভাঙচুর করেন।
গ্রামবাসীরা একজোট হয়ে প্রতিবাদ করেন। ভয় পেয়ে তৃণমূলের পক্ষে কয়েক রাউন্ড গুলি চালানো হয় বলে অভিযোগ। এতে উত্তেজনা আরও বাড়ে। গ্রামের মহিলারা বেরিয়ে এসে প্রতিরোধ করলে হামলাকারী পালাতে যায়। কয়েকজনকে ধরে ফেলেন গ্রামবাসীরা। তাঁদের একটি ঘরে আটকে রেখে মারধর করা হয়। কয়েকজনকে বেঁধেও রাখা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, লোকসভা ভোটের ফলাফলের পরে দেখা যায়, খুলনা পঞ্চায়েতের ১৮৩ ও ১৮৪ বুথ দু’টিতে বিজেপি বেশি ভোট পেয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা ভবেন মণ্ডল, কমল মিস্ত্রি, পারুল দাসের দাবি, নির্বাচনের আগে থেকেই আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে হুমকি, মারধর ও বাড়ি ভাঙচুর করছিলেন তৃণমূলের উপপ্রধান এবং তাঁর সঙ্গীরা। সে জন্য মানুষ ক্ষুব্ধ ছিলেন। এ দিন ওঁরা বাহিনী নিয়ে গ্রামে এলে আত্মরক্ষার্থে সকলে প্রতিরোধ করেছেন। গ্রামবাসীদের বক্তব্য, পুলিশের পক্ষে আগে থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হলে হয় তো ঘটনাটি এত দূর পৌঁছত না।
বিজেপির জেলা সভাপতি গণেশ ঘোষ বলেন, ‘‘তৃণমূল নেতা সত্যজ্যোতি ও তাঁর বাহিনী বিজেপি প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার অপরাধে গ্রামের মানুষকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে মারধর ও তাঁদের বাড়ি ভাঙচুর করতে গেলে মহিলারা প্রতিরোধ করেন।’’
তৃণমূল নেতা ফিরোজ কামাল গাজি বলেন, ‘‘আমাদের দলের একজনকে মারধর করা হয়েছিল। সেই খোঁজ নিতে গিয়েছিলেন উপপ্রধান ও তাঁর দাদা দেবজ্যোতি-সহ কয়েকজন কর্মী। সেখানে পরিকল্পনা করে বিজেপি-আশ্রিত দুষ্কৃতীরা আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে চড়াও হয়। বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশকে বলা হয়েছে।’’
দু’পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy