Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার, আমল দিচ্ছে না তৃণমূল

বিজেপি এবং সিপিএম এ বার সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ভোটের প্রচারে জোর দিচ্ছে। আসন্ন লোকসভা ভোটে ঘরে বসেই ‘নিঃশব্দ পরিবর্তন’ই তাদের লক্ষ্য।

স্মার্ট প্রচার শুরু করবে তৃণমূলও।

স্মার্ট প্রচার শুরু করবে তৃণমূলও।

  সীমান্ত মৈত্র
বনগাঁ শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৯ ০৩:০৩
Share: Save:

বিজেপি এবং সিপিএম এ বার সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ভোটের প্রচারে জোর দিচ্ছে। আসন্ন লোকসভা ভোটে ঘরে বসেই ‘নিঃশব্দ পরিবর্তন’ই তাদের লক্ষ্য। যদিও বিরোধীদের এ হেন পদক্ষেপকে গুরুত্ব দিতে নারাজ উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। জেলা তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘এ রাজ্যের মানুষ সরাসরি প্রচার ও উন্নয়ন দেখতে চান। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার এখানে কার্যকরী হবে না।’’
জেলা বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় নির্বাচনী প্রচার চালানোর জন্য দলের তরফে ইতিমধ্যেই ‘আইটি সেল’ খোলা হয়েছে। লোকসভা, বিধানসভা ছাড়াও ‘মণ্ডল’, ‘শক্তিকেন্দ্র’ এবং বুথভিত্তিক আলাদা আলাদা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করছে বিজেপি। প্রতিটি পর্যায়ে একজন আইটি ইন-চার্জ থাকছেন। তাঁরাই গোটা বিষয়টি পরিচালনা করছেন।
কারা থাকছেন ওই সব হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে?
দলের বারাসত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দলের নেতা-কর্মীরা ছাড়াও এলাকার বিশিষ্ট মানুষকে এতে যুক্ত করা হচ্ছে। গ্রুপের মাধ্যমে কেন্দ্রের উন্নয়নমূলক কাজ, প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ, দলীয় কর্মসূচি, এবং যে কোনও বিষয়ে দলের বক্তব্য খুব সহজেই সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া যাচ্ছে।’’
কেন এমন পদক্ষেপ?
প্রদীপ বলেন, ‘‘বর্তমানে বহু মানুষ ফেসবুক, টুইটার, হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করেন। সহজেই এঁদের কাছে পৌঁছে যাওয়াই আমাদের লক্ষ্য। তা ছাড়া ২০১৪ সালে দেশের বিভিন্ন এলাকায় দলের তরফে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার চালিয়ে সুফল মিলেছিল। সেই চেষ্টাটিকেই এ বার আরও সংগঠিত ভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছে।’’
বিজেপি’র বারাসত সাংগঠনিক জেলার মধ্যে দু’টি লোকসভা আসন রয়েছে— বারাসত ও বনগাঁ। দলের সহ-সভাপতি বিপ্লব হালদার বলেন, ‘‘লোকসভা, বিধানসভা, মণ্ডল, শক্তিকেন্দ্র ও বুথস্তরের জন্য আলাদা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরির কাজ প্রায় শেষ। আমরা প্রচারও শুরু করে দিয়েছি। সাড়াও মিলতে শুরু করেছে।’’ বিজেপি সূত্রে জানানো হয়েছে, ওই সব হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যে সব সাধারণ মানুষকে যুক্ত করা হচ্ছে, তাঁরা যদি কখনও গ্রুপে থাকতে না চান, তখন স্বেচ্ছায় গ্রুপ থেকে বেরিয়ে যেতে পারেন। যদিও বিপ্লব জানান, এখনও পর্যন্ত যাঁদের যুক্ত করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে খুব কম সংখ্যকই গ্রুপ থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন।
সিপিএম সূত্রে জানা গিয়েছে, তারাও লোকসভা, বিধানসভা ও বুথভিত্তিক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করছে। এর জন্য জেলা সিপিএম নেতৃত্বের তরফে কর্মীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারের জন্য বুথভিত্তিক কমিটি তৈরি করা হচ্ছে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ ঘোষ বলেন, ‘‘আধুনিক প্রযুক্তিকে এখন আর অস্বীকার করা সম্ভব নয়। প্রযুক্তির মাধ্যমে সহজেই মানুষের কাছে পৌঁছনো যায়।’’ ইতিমধ্যেই ফেসবুকে চোখ রাখলেই দেখা যাচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রীর বিভিন্ন মন্তব্য নিয়ে তারা ব্যাপক প্রচার শুরু করে দিয়েছে।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

তবে বিরোধীদের দাবি, পঞ্চায়েত ভোট থেকে শিক্ষা নিয়ে তারা দেখেছে, শাসকদলের সন্ত্রাসের ভয়ে বহু মানুষ ইচ্ছা থাকলেও প্রকাশ্যে মিটিং-মিছিলে আসতে পারেন না। নিজের পছন্দের দলকে প্রকাশ্যে সমর্থন জানাতে পারেন না। তাঁদের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া খুবই কার্যকর হবে।
তৃণমূল যদিও বিজেপি এবং সিপিএমের এই সোশ্যাল মিডিয়া-নির্ভর প্রচারকে তেমন গুরুত্ব দিচ্ছে না, তবু দলীয় সূত্রে জানানো হয়েছে, তারাও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ভোট-প্রচার শুরু করবে।
সব মিলিয়ে আগামী কিছুদিন ভোট-যুদ্ধে সরগরম থাকবে সোশ্যাল মিডিয়ার দুনিয়া।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Politics Lok Sabha Election 2019
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE