চাবি এনে শৌচালয় খোলার ঝকমারি পোহাতে চান না অনেকেই। নিজস্ব চিত্র।
শিশু কোলে এ দিক-ও দিকে ঘোরাঘুরি করছিলেন এক মহিলা। শৌচালয় খুঁজছিলেন। দোকানিদের জিজ্ঞাসা করে দূরে কেবিন ঘরের পাশে গুমটি ঘরের মতো একটি মহিলা শৌচালয়ের দেখা মিলল ঠিকই। কিন্তু তাতে তালা ঝোলানো।
শিয়ালদহ-নামখানা শাখার মথুরাপুরের ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে মহিলাদের শৌচালয় ব্যবহার করতে হলে কেবিন কর্মীদের কাছ থেকে চাবি চেয়ে ব্যবহার করতে হয়। আর যদি সে সময়ে ট্রেন চলে আসে তা হলে শৌচালয় যেতে পারেন না মহিলারা। সে দিনও ওই মহিলার শৌচালয়ে যাওয়া হয়নি। ট্রেন এসে গিয়েছিল।
দক্ষিণ পূর্ব রেলওয়ে শিয়ালদহ থেকে নামখানা স্টেশন পর্যন্ত প্রায় ৯০ কিলোমিটার। সময় লাগে প্রায় পৌনে ৩ ঘণ্টা। মথুরাপুর স্টেশন থেকে নামখানা প্রায় ৪০ কিলোমিটার পথ। ১২টি স্টেশন রয়েছে। এর মধ্যে নামখানা ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে একটা সুলভ শৌচালয়, লক্ষ্মীকান্তপুর স্টেশনের ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে একটি মহিলা শৌচালয় ছাড়া বাকি স্টেশনে মহিলাদের কোনও শৌচালয় নেই। উদয়রামপুর, কুলপি, করঞ্জলি, নিশ্চিন্তপুরহাট, নিশ্চিন্তপুর, মাধবনগর, কাশীনগর, কাকদ্বীপ ও উকিলেরহাট স্টেশনগুলিতে ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে পুরুষ শৌচালয় থাকলেও মহিলা শৌচালয় নেই। পুরুষ শৌচালয়গুলিও রক্ষাণাবেক্ষণের অভাবে নোংরা। মল-মূত্রও পড়ে থাকে কোথাও কোথাও। দুর্গন্ধে পাশ দিয়ে নাক চেপে যাতায়াত করতে যাত্রীদের।
ওই শাখায় যাতায়াত করেন মথুরাপুরের কারবলা গ্রামের মৌমিতা ভান্ডারী। কলকাতা কলেজ পড়ুয়া ওই ছাত্রীর অভিযোগ, এই শাখায় অধিকাংশ স্টেশনে কোনও মহিলা শৌচালয় নেই। ফলে অনেক সময়ে অসুবিধায় পড়তে হয়। একই কথা জানালেন লক্ষ্মীকান্তপুরের একটি অফিসের কর্মী বনলতা কর্মকার। তিনি বলেন, ‘‘কোনও স্টেশনে যদিও বা মহিলা শৌচালয় রয়েছে, তা-ও অপরিচ্ছন্ন। ব্যবহার করা যায় না। স্যানিটারি ন্যাপকিন বদলানোর প্রয়োজন হলে সমস্যায় পড়তে হয়।’’
তবে এ ভাবে প্রসাব চেপে যাওয়া-আসা করা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। এ ভাবে বাসা বাঁধতে পারে রোগ। ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপার রমাপ্রসাদ রায় বলেন, ‘‘নোংরা শৌচালয় ব্যবহার করলে বা দীর্ঘ সময় প্রস্রাব চেপে রাখলে মহিলাদের নানা শারীরিক সমস্যা হতে পারে।’’ — নিজস্ব চিত্র
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy