মারধর: দেগঙ্গায়। নিজস্ব চিত্র
একে একে স্কুলে ঢুকছিল পড়ুয়ারা। স্কুলের সামনে তখন ঘুরে বেড়াতে দেখা যাচ্ছিল এক ভবঘুরেকে। তা নিয়ে ‘ছেলেধরা’ বলে গুজব ছড়িয়ে পড়তেই উত্তেজনা দেখা গেল এলাকায়। অভিভাবক ও স্থানীয়েরা স্কুলে আসেন। শুরু হয় ওই ভবঘুরেকে মারধর। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার দেগঙ্গা থানার চাঁপাতলার ‘চাঁদপুর অবৈতনিক বিদ্যালয়ের’ সামনে।
এখানেই শেষ নয়, ক্ষিপ্ত মানুষ ওই ব্যক্তিকে মারধরের পরে তাঁকে আটকেও রাখে। পরে স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান, স্কুলের প্রধান শিক্ষক এসে জনতার হাত থেকে তাঁকে উদ্ধার করে স্কুলের মধ্যে নিয়ে আসেন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে ভবঘুরেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই ব্যক্তি ছেলেধরা নন, মানসিক ভারসাম্যহীন। ফলে তাঁর পরিচয়ও জানা যায়নি। কারা মারধর করল, সে ব্যাপারে খোঁজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বেশ কিছুদিন ধরেই ছেলেধরা, কিডনি পাচারকারী ঘুরে বেড়াচ্ছে এমন গুজবের জেরে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় অশান্তি ছড়াচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীও তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বিভিন্ন থানা, প্রশাসনের তরফে মানুষকে সচেতন করতে লিফলেট বিলিও চলছে। তাতেও যে কাজ হচ্ছে না, এ দিনের ঘটনাই তার প্রমাণ।
ঠিক কী ঘটেছিল এ দিন দেগঙ্গায়?
স্থানীয় বাসিন্দা আব্বাস আলি মণ্ডল বলেন, ‘‘আমি চাষের কাজে মাঠে ছিলাম। বাড়ির মহিলারা খবর দেন, স্কুলের সামনে ছেলেধরা ঘুরে বেড়াচ্ছে। তার কোনও কথা বোঝা যাচ্ছে না। খবর পেয়ে ছুটে আসি।’’ স্কুলের সামনে ছেলেধরার খবর ছড়িয়ে পড়ায় নিমেষের মধ্যে ভিড় জমে যায়। ওই ব্যক্তিকে ঘিরে ধরে চলে মারধর। সুনীতা কর্মকার নামে এক অভিভাবক বলেন, ‘‘আমার ছেলে ওই স্কুলে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। ছেলেধরার খবর শুনে আমার ছেলে কোথায় কী ভাবে আছে, জানতে ছুটে আসি।’’চাঁদপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রুহুল বায়েন বলেন, ‘‘স্কুলে এসে শুনি ছেলেধরা ধরা পড়েছে। বেশ কয়েকজন তাঁকে মারধর করছে। তাঁকে উদ্ধার করে স্কুলের মধ্যে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে আসি। পুলিশে খবর দিই।’’
স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান হুমায়ুন রেজা চৌধুরী বলেন, ‘‘ছেলেধরা ধরা পড়েছে খবর পেয়ে ছুটে আসি। দেখি মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy