Advertisement
০৫ মে ২০২৪

অপহরণের চেষ্টা তন্ত্রের নামে, ধৃত ৩

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় একটি টোটো নিয়ে আসে ওই তিন জন। বাড়িতে তখন তরুণী ছিলেন না। তিনি কাছাকাছি এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন। অভিযুক্তেরা এসে তরুণীর বাবাকে জানায়, তারা তাঁর মেয়েকে নিয়ে যেতে এসেছেন। এক জ্যোতিষীর পরামর্শ অনুযায়ী, ওই তরুণীকে তাদের চাই।

অভিযুক্তদের আটক করে বিক্ষোভ অঙ্গদপুরে। নিজস্ব চিত্র

অভিযুক্তদের আটক করে বিক্ষোভ অঙ্গদপুরে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৯ ০২:০৪
Share: Save:

গয়না, টাকার লোভ দেখিয়ে তন্ত্রসাধনার নাম করে এক তরুণীকে অপহরণের চেষ্টার অভিযোগ উঠল দুর্গাপুরে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দুর্গাপুরের ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের অঙ্গদপুরে অভিযুক্ত এক মহিলা-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃত সমীর বিশ্বাস দুর্গাপুরের বীরভানপুর এবং নারায়ণ বিশ্বাস নদিয়ার শান্তিপুর ও জ্যোৎস্না বিশ্বাস রানাঘাটের বাসিন্দা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় একটি টোটো নিয়ে আসে ওই তিন জন। বাড়িতে তখন তরুণী ছিলেন না। তিনি কাছাকাছি এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন। অভিযুক্তেরা এসে তরুণীর বাবাকে জানায়, তারা তাঁর মেয়েকে নিয়ে যেতে এসেছেন। এক জ্যোতিষীর পরামর্শ অনুযায়ী, ওই তরুণীকে তাদের চাই। তরুণীর বাবা অভিযোগ করেন, এর আগে বেশ কয়েকবার মেয়েকে অনেক গয়না ও টাকা দেওয়ার লোভ দেখিয়ে তারা নিয়ে যেতে চেয়েছে। বাড়িতে এসে তা জানিয়েছিলেন ওই তরুণী। পুলিশকে জানালে অভিযুক্তদের সতর্কও করে দেওয়া হয়। তা সত্ত্বেও বাড়িতে এসে মেয়েকে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেওয়ায় তিনি পাড়ার ক্লাবে খবর দেন। সেখান থেকে কয়েকজন যুবক এসে তিন জনকে আটকে রেখে থানায় খবর পাঠায়। পুলিশ এসে তাদের নিয়ে যায়। পরে ওই তরুণীর অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

ওই তরুণী জানান, তিনি দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে পুরসভার একশো দিনের কাজের প্রকল্পের সুপারভাইজ়ার। তিনি অভিযোগ করেন, অভিযুক্তেরা প্রথমে হাসপাতালেই গয়না ও টাকার লোভ দেখিয়ে দু’জন তাঁকে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেয়। তাঁর উচ্চতা মাপা হয়। তিনি হাসপাতালে এক পুলিশকর্মীকে বিষয়টি জানালে তিনি তাদের সতর্ক করে দেন। তার পরেও রাস্তায় তাঁর কাছে একাধিক বার ওই প্রস্তাব দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। তাঁর অভিযোগ, ‘‘আমাকে বলা হয়, ছ’লক্ষ টাকার সোনার গয়না পরানো হবে। পুজো করা হবে। গলায়, হাতে, পায়ে লাল সুতো বাঁধতে হবে। তান্ত্রিক থাকবে। একটি মন্ত্র পড়তে হবে। তা হলেই টাকা মিলবে। আমি প্রতিবারই না বলেছি। তবু ওরা আমার বাড়িতে আসে।’’

পুলিশ জানায়, সমীর ও নারায়ণ আত্মীয়। জ্যোৎস্না নারায়ণের ভাইয়ের স্ত্রী। পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃতেরা তাদের জানিয়েছে, জ্যোৎস্নার ভাইয়ের ‘দোষ’ কাটানোর জন্যই তরুণীকে তাদের প্রয়োজন। তরুণীর পরিবারের আশঙ্কা, কৌশিকী অমাবস্যায় তাঁর ক্ষতি করাই ছিল অভিযুক্তদের মতলব। ধৃতেরা অবশ্য কোনও ক্ষতি করার চেষ্টার কথা মানতে চায়নি। স্থানীয় কাউন্সিলর স্বরূপ মণ্ডল বলেন, ‘‘কী ভাবে বহিরাগতেরা এক জনের বাড়িতে ঢুকে এমন প্রস্তাব দিতে পারে, ভেবে অবাক হচ্ছি।’’ পুলিশ জানায়, ধৃতদের ঠিক কী মতলব ছিল, তা জানার চেষ্টা চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Abduction Durgapur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE