Advertisement
১১ মে ২০২৪

চোরাই বাইককে ভ্যানো, ধৃত তিন 

নিউ টাউনশিপ থানার পুলিশ জানায়, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি বিজড়া গ্রামে শ্বশুরবাড়ি থেকে কাঁকসা থানার জাটগড়িয়ার বাসিন্দা শেখ সাইদুলকে মোটরবাইক চুরির সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। সাইদুলকে দুর্গাপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক ধৃতের ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।

বাঁ দিকে, উদ্ধার হওয়া মোটরবাইক। ডান দিকে, চুরির অভিযোগে গ্রেফতার। নিজস্ব চিত্র

বাঁ দিকে, উদ্ধার হওয়া মোটরবাইক। ডান দিকে, চুরির অভিযোগে গ্রেফতার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৯ ০১:১৯
Share: Save:

মোটরবাইক চুরি করে তা দিয়ে ভ্যানো তৈরির চক্র সক্রিয় রয়েছে জেলায়। এমন অভিযোগ বেশ কিছু দিন ধরেই উঠছিল বলে পুলিশ সূত্রের খবর। দুর্গাপুরের নিউ টাউনশিপ থানা জানায়, এলাকায় বাইক চুরির তদন্তে নেমে দিন কয়েক আগে এক জনকে ধরা হয়। তাঁকে জেরা করে এমনই একটি চক্রের খোঁজ মেলে। উদ্ধার হয়, চুরি যাওয়া মোট ১৩টি বাইক। গ্রেফতার করা হয়েছ আরও দু’জনকে।

নিউ টাউনশিপ থানার পুলিশ জানায়, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি বিজড়া গ্রামে শ্বশুরবাড়ি থেকে কাঁকসা থানার জাটগড়িয়ার বাসিন্দা শেখ সাইদুলকে মোটরবাইক চুরির সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। সাইদুলকে দুর্গাপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক ধৃতের ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। পুলিশ জানায়, ধৃতকে জেরা করে ফরিদপুর (লাউদোহা) থানা এলাকার রাঙামাটির শেখ নাজিমুল ও জাটগড়িয়ার সালাম মণ্ডলের নাম জানা যায়। মঙ্গলবার তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের দাবি, ধৃতদের জেরা করে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তল্লাশি চালিয়ে পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বাঁকুড়া ও বীরভূমের বিভিন্ন এলাকা থেকে চুরি যাওয়া মোট ১৩টি বাইক উদ্ধার করা গিয়েছে। চুরি যাওয়া বাইকগুলির মালিকের খোঁজ চলছে। তবে পুলিশের অনুমান, বাইক চুরি চক্রের সঙ্গে আরও অনেকে যুক্ত রয়েছেন। ধৃতদের জেরা করে তাঁদের বিষয়েও খোঁজ করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

কিন্তু কী ভাবে হতো মোটরবাইক চুরি? পুলিশ জানায়, জেরায় ধৃতেরা তাঁদের কাছে জানিয়েছেন, প্রথমে বাসে করে ভিড় বেশি থাকে এমন এলাকায় যেতেন। কিছুক্ষণ আশপাশে নজর রেখে সুযোগমতো ‘মাস্টার কি’ দিয়ে মোটরবাইকের তালা খুলে চম্পট দিতেন অভিযুক্তেরা। মাঝ রাস্তায় নম্বর প্লেট বদলে নকল নম্বর প্লেট লাগানো হতো। কখনও বা ঝুঁকি এড়াতে রাস্তার ধারের কোনও গ্যারাজে চুরি করা মোটরবাইক রেখে দেওয়া হতো। দিনকয়েক পরে সুযোগ বুঝে তা সরিয়েও ফেলা হতো।

কিন্তু, উদ্ধার হওয়া মোটরবাইকগুলির মধ্যে বেশ কয়েকটিতে গঠনগত পরিবর্তন দেখা গিয়েছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। ঝাঁকুনি এড়াতে বাইকের পিছনের চাকায় দু’দিকে একটি করে ‘সকার’ থাকে। কিন্তু তিনটি বাইকে দু’দিকে তিনটি হিসেবে মোট ছ’টি করে সকার দেখা গিয়েছে। একটিতে আবার দু’দিকে দু’টি করে মোট চারটি সকার রয়েছে। এগুলি দেখে তদন্তকারীরা নিশ্চিত, ভারী পণ্য পরিবহণের যান তৈরির জন্যই এমন পরিবর্তন।

পুলিশ জানায়, ধৃতেরা জেরায় তাঁদের কাছে জানিয়েছেন, চুরি করা মোটরবাইকের যন্ত্রাংশ দিয়ে ভ্যানো তৈরি করা হতো। এক বার তা তৈরি হয়ে গেলে বাইকের আর কোনও অস্তিত্বই থাকত না। থাকত না ধরা পড়ার ভয়ও। বেশ কিছু গ্যারাজে এই কাজ হতো। সেই গ্যারাজ মালিকেরাও চক্রের সঙ্গে জড়িত বলে অনুমান পুলিশের। ধৃতদের জেরা করে সেই গ্যারাজগুলিরও খোঁজ করা হবে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Transport Crime Car
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE