গাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত প্রবীণ। নিজস্ব চিত্র
নার্সারি তৈরি করে ‘নিয়ম মেনে’ সেখানে গাছ বিক্রি করেন। আবার বিক্রি করা গাছের জায়গায় নতুন করে রোপণ করেন চারা। এ ভাবেই এখনও পর্যন্ত প্রায় লাখখানেক গাছ রোপণ করে ফেলেছেন বলে দাবি পাণ্ডবেশ্বরের আলিনগর গ্রামের বাসিন্দা বছর সত্তরের রাধেশ্যাম গড়াইয়ের।
বিষয়টি নিয়ে জেলা মুখ্য বনাধিকারিক (ডিএফও) মৃণালকান্তি মণ্ডল বলেন, “শুনেছি, রাধেশ্যামবাবু গাছ লাগিয়ে কৃত্রিম অরণ্য তৈরি করেছেন। কেউ এ ভাবে গাছের নার্সারি তৈরি করে গাছ বিক্রি করতে পারেন। উনি সহযোগিতা চাইলে আমরা পাশে থাকব।’’
কিন্তু কী ভাবে একাধারে রুজির সংস্থান এবং অন্য দিকে পরিবেশ রক্ষায় এই কাজ করছেন রাধেশ্যামবাবু?
আলিনগর, ভুরি, চিচুরিয়া, নিমসার সাতটি জায়গায় ভাড়া বা ‘চুক্তির’ ভিত্তিতে জমি নিয়ে কৃত্রিম অরণ্য তৈরি করা মানুষটি জানান, রেডিয়োয় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধীর ‘বৃক্ষমিত্র’ নিয়ে বক্তব্য শুনে কয়েক দশক আগে অরণ্য তৈরির ভাবনা মাথায় আসে। এর পরে ১৯৮৯-এ আলিনগর গ্রামে আত্মীয়দের প্রায় ১২ একর পতিত জমিতে ইউক্যালিপটাস, সোনাঝুরি, শিশু, নিম, অর্জুন ও গামার গাছের চারা রোপণ করে অরণ্য তৈরি করেন।
২০০০ সাল থেকে এই অরণ্য থেকেই সংস্থান হয় রুজির, জানান রাধেশ্যামবাবু। তিনি জানান, গাছ বিক্রির টাকাতেই দুই মেয়ের বিয়েও দিয়েছেন। প্রবীণ এই বৃক্ষপ্রেমী বলেন, ‘‘কোনও একটা গাছ কাটা হলে সেই জায়গাতেই ফের চারা রোপণ করে সেগুলি বড় করে তুলি। এ ভাবে ওই সাতটি জায়গার প্রায় তিরিশ একর জমিতে অরণ্য একই রকম থেকে যায়।’’ বাবার এই উদ্যোগে পাশে রয়েছেন ছেলে সুকুমার ও সাধন গড়াই। তাঁরা এবং রাধেশ্যামবাবু বলেন, ‘‘গাছ আমাদের লক্ষ্মী। শাক চাষ আর বৃক্ষরোপণ করি আমরা। এই কাজে পরিবেশ রক্ষাও হয়। আবার আমাদের পরিবারের অভাবও মেটে।’’
তবে এই সমস্ত উদ্যোগে প্রশাসনের থেকে এ পর্যন্ত কোনও সাহায্য মেলেনি বলে জানান রাধেশ্যামবাবু। স্থানীয় শ্যামলা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তারিণ গাড়ি অবশ্য বলেন, “অত্যন্ত ভাল উদ্যোগ। উনি এলাকায় ‘গাছপাগল’ হিসেবেই পরিচিত। তবে উনি পঞ্চায়েতের কাছে সহযোগিতা চাননি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy