দেবীর মন্দির। নিজস্ব চিত্র
অষ্টমী পর্যন্ত কিছুটা রাশ থাকলেও তা আলগা হয়ে গিয়েছিল নবমী ও দশমীতে। কাটোয়ার নানা পুজো মণ্ডপে দর্শনার্থীদের ভিড় দেখা গিয়েছিল ওই দু’দিন। প্রতিমা বিসর্জনের ঘাটগুলিতেও মাস্ক ছাড়া, স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে অনেককে ঘুরতে দেখা গিয়েছে। এই অভিজ্ঞতার পরে কাটোয়ার ঐতিহ্যবাহী খেপি মায়ের পুজোয় ভিড় আটকাতে নানা পদক্ষেপের কথা ভাবা হয়েছে বলে জানাল প্রশাসন। মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার বৈঠক করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে ইতিমধ্যে পুলিশের তরফ থেকে নানা সচেতনতামূলক পদক্ষেপ করার কথা পুজো কমিটিকে জানানো হয়েছে।
পুলিশ-প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কোনও মতেই মন্দির চত্বরে ভিড় জমতে দেওয়া যাবে না। মন্দিরে যাওয়ার একমুখী রাস্তা করে দেওয়া হবে। সংক্রমণ আটকাতে অঞ্জলি বন্ধ রাখা হবে। শোভাযাত্রা কী ভাবে করা হবে বা আদৌও করা যাবে কি না, সে নিয়েও সংশয় রয়েছে।
কয়েকশো বছরের প্রাচীন খেপি মায়ের পুজোয় কাটোয়া শহর তো বটেই, মহকুমার নানা প্রান্ত থেকে বহু মানুষ মন্দির চত্বরে আসেন। দেবীর নামেই ওই পাড়া খ্যাপাকালীতলা বলে পরিচিত। সারা বছর রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দেবী দর্শনের জন্য মানুষের আনাগোনা লেগে থাকে। পুজো কমিটি সূত্রে জানা যায়, লকডাউনের সময়ে দিনের পর দিন মন্দির বন্ধ থাকায় অনেকে হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। তাই করোনা আবহে কী ভাবে পুজো সম্পন্ন করা যায়, তা নিয়ে গোড়া থেকেই পুজো কমিটি ও প্রশাসন চিন্তায় রয়েছে। কারণ, প্রতি বছরই কালীপুজোর সময়ে ভিড় সামাল দিতে কমিটি থেকে পুলিশ, সবাইকে হিমশিম খেতে হয়। এ ছাড়া শোভাযাত্রার সময়ে দর্শনার্থীর ঢল নামে। এ বার ভিড়ে লাগাম না টানা গেলে সংক্রমণ আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছে প্রশাসন।
‘খ্যাপাকালী মাতা পুজো সমিতি’র সম্পাদক অশোক সরকার বলেন, ‘‘করোনা সংক্রমণ রুখতে এ বার আমরা যাবতীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনেই পুজো করব। ইতিমধ্যে পুলিশের কথামতো কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছি। একমুখী রাস্তা করা হবে। পুজো দিতে এক সঙ্গে ১০-১৫ জনের বেশি জনকে মন্দিরে ঢুকতে দেওয়া হবে না। ভক্তেরা এ বার অঞ্জলিও দিতে পারবেন না। এক কথায়, অনাড়ম্বর ভাবে পুজো হবে। শোভাযাত্রা আদৌও হবে কি না, তা নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।’’
কাটোয়ার বিধায়ক তথা পুরসভার প্রশাসক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘খেপি মায়ের পুজো কাটোয়ার বাসিন্দাদের কাছে আবেগের বিষয়। পুজো যাবতীয় নিয়ম মেনেই হবে। তবে এ বার ভিড় করা যাবে না। কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ মহকুমাশাসক (কাটোয়া) প্রশান্তরাজ শুক্ল বলেন, ‘‘পুজোয় যাতে স্বাস্থ্যবিধি বজায় থাকে, তা নিয়ে সোমবার বৈঠক করে কিছু নির্দেশ পুজো কমিটকে জানিয়ে দেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy