সুযোগ কাজে লাগাতে তড়িঘড়ি ঘোষণা করা হয়েছিল, বকেয়া রাজস্ব জমা দেওয়া যাবে বাতিল নোটেই। ফলও মিলেছে হাতেনাতে। বাতিল নোটে ভর করে রেকর্ড পরিমাণ রাজস্ব আদায় করেছে আসানসোল পুরসভা।
কেন্দ্রের পাঁচশো-হাজার টাকার নোট বাতিলের প্রতিবাদে আন্দোলনে নেমেছেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আসানসোলেও তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা রাস্তায় নেমেছেন। সামিল হয়েছেন শহরের তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি নিজেও। কিন্তু এই বাতিল নোটে জমা পড়ে রাজস্বে পুর কর্তৃপক্ষ এতটাই খুশি যে প্রাথমিক ভাবে ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত তা জমা নেওয়া হবে জানানো হলেও এখন সময়সীমা আরও বাড়ানো হয়েছে।
নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত জানার পরেই মেয়র ঘোষণা করেছিলেন, তাঁরা বাতিল নোটেই রাজস্ব জমা নেবেন। যাঁদের বহু বছরের রাজস্ব বাকি পড়ে রয়েছে বা যাঁরা আগামি পাঁচ বছরের রাজস্ব অগ্রিম জমা দিতে চান, সকলেই বাতিল নোটে তা জমা করতে পারবেন। পুরসভা সূত্রে জানা যায়, এই ঘোষণার পরেই পুরসভায় করদাতাদের লম্বা লাইন পড়ে যায়। পুরসভার রাজস্ব বিভাগের আধিকারিক শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় জানান, ওই ঘোষণার পরে বারো দিনে প্রায় তিন কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। পুরসভার ইতিহাসে এই পরিমাণ টাকার রাজস্ব আদায় রেকর্ড বলে দাবি করেন তিনি। তা দেখে পুরসভার আধিকারিকেরা বাতিল টাকায় কর আদায়ের মেয়াদ আরও কয়েক দিন বাড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
পুরসভার আধিকারিকেরা জানান, অনেকেরই বছরের পর বছর কর বাকি পড়ে থাকে। মেটানোর ব্যাপারে খুব একটা আগ্রহ দেখান না ওই নাগরিকেরা। এমন অনেকে তাড়াতাড়ি বকেয়া রাজস্ব হিসেবে বাতিল নোট জমা দিয়ে গিয়েছেন। এ ছাড়া এমন অনেক নাগরিক আছেন যাঁরা এখন এই শহরে নিয়মিত বসবাস করেন না। অথচ, শহরে তাঁদের স্থাবর সম্পত্তি রয়েছে। নিয়মিত শহরে না থাকার ফলে তাঁদের কর বাকি পড়ে যায়। তাঁরা পুরসভার কাছে অনেক বারই অগ্রিম কর জমা নেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। কিন্তু পুর কর্তৃপক্ষ এত দিন তাঁদের এই আবেদন কার্যকর করতে পারেননি। বাতিল নোটে অগ্রিম কর জমা নেওয়ার প্রক্রিয়ায় সেই আবেদন কার্যকর করা সম্ভব হয়েছে। পুরসভায় গিয়ে দেখা গিয়েছে, প্রায় প্রতি দিনই কর জমা দেওয়ার জন্য লম্বা লাইন। পুরসভা চত্বর ছাড়িয়ে তা বাইরে চলে গিয়েছে।
পুসভার এই সিদ্ধান্তে খুশি বাসিন্দারাও। বাতিল নোটে এককালীন অগ্রিম বা বকেয়া জমা দিয়ে তাঁরা অনেকটাই ভারমুক্ত হলেন বলে জানিয়েছেন। এমনই এক বাসিন্দা প্রেমবিহারি যাদব বলেন, ‘‘ব্যাঙ্কে গিয়ে টাকা পাল্টানোর ঝক্কি থেকে রেহাই পেলাম, আবার রাজস্বও মিটিয়ে দেওয়া গেল! পুরসভার এমন পদক্ষেপে আমাদের সুবিধে হয়েছে।’’ মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, ‘‘এলাকার উন্নয়নের জন্য টাকা দরকার। সে জন্য রাজস্ব আদায়ের পরিমাণও বাড়াতে হবে। তাই পুরসভা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy