Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
বোরো চাষে মুশকিল

জল দেওয়া যাবে না, প্রচার গ্রামে

জমিতে ধান পুড়িয়েও বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন চাষিরা। বোরো মরসুমে এর পুনরাবৃত্তি যেন না হয়, তা ইতিমধ্যেই প্রচার করে চাষিদের সতর্ক করছে জেলা প্রশাসন।

চাষ শুরু হয়নি, পড়ে রয়েছে জমি। আউশগ্রামে । নিজস্ব চিত্র

চাষ শুরু হয়নি, পড়ে রয়েছে জমি। আউশগ্রামে । নিজস্ব চিত্র

প্রদীপ মুখোপাধ্যায়
আউশগ্রাম শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:৩৬
Share: Save:

আমনের মরসুমে সেচের জলের জন্য বেশি কয়েকবার চাষিদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছিল প্রশাসনের কর্তাদের। আউশগ্রামের শিবদা গ্রামে ২বি জাতীয় সড়ক, বেরেন্ডায় ভেদিয়া মোরবাঁধ রাজ্য সড়ক অবরোধ হয়েছিল। ডিভিসির জল ছাড়া, প্রশাসনের সাবমার্সিবল পাম্পের জোগানের পরেও বেশ কিছু জায়গায় ধান বাঁচানো সম্ভব হয়নি। জমিতে ধান পুড়িয়েও বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন চাষিরা। বোরো মরসুমে এর পুনরাবৃত্তি যেন না হয়, তা ইতিমধ্যেই প্রচার করে চাষিদের সতর্ক করছে জেলা প্রশাসন।

স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, আউশগ্রাম ১ ব্লকের বেশ কয়েকটি পঞ্চায়েতে প্রচার করে চাষিদের জানানো হয়েছে, ‘বোরো ও রবি মরসুমে বৃষ্টি না হলে ক্যানেলের মাধ্যমে জল দেওয়া সম্ভব হবে না। কারণ জলাধারে এখন কোনও জল নেই।’ আবার বোরো ধানে যেহেতু বেশি জল লাগে, তাই বোরোর পরিবর্তে কম জলে চাষ করা যায় এমন গম, ভুট্টা বা ডাল শষ্যের চাষে জোর দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। ফোয়ারা পদ্ধতিতে সেচের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে চাষিদের। কিন্তু সরকারি প্রচারের পরে অনেক চাষিই ঝুঁকি নিয়ে মাঠে নামছেন না। তাঁদের দাবি, পঞ্চায়েত, প্রশাসনের তরফে এমন প্রচার করা মানে অলিখিত ভাবে চাষ করতে নিষেধ করা।

শিবদা গ্রামের তারক ঘোষ, উদয় ঘোষ, সুকান্ত দেওয়াসিদের অভিযোগ, ‘‘এ ভাবে মাইকে প্রচার করে প্রশাসন দায় এড়াতে চাইছে। এর ফলে অধিকাংশ জমি পতিত থাকবে।’’ তাঁরা জানান, গ্রামের চাষিরা স্থানীয় সমবায় সমিতির সাবমার্সিবল পাম্প থেকেই জল কিনে চাষ করেন। এ জন্য ফি বছর জলকরও মেটান তাঁরা। কিন্তু এ বার সভা করে সমবায় সমিতি থেকে জানানো হয়েছে, বোরো চাষের জন্য পাম্প থেকে জল দেওয়া সম্ভব নয়। তার পরেও কেউ চাষ করতে চাইলে, জলের অভাবে ধান নষ্ট হলে সমিতি দায়ী থাকবে না, বলে লিখিত জমা দিলে তবেই বীজতলার জন্য জল দেওয়া হবে ।

যদিও আউশগ্রাম ১-এর বিডিও চিত্তজিৎ বসুর দাবি, ‘‘কাউকে ধান চাষ করতে নিষেধ করা হয়নি।’’ বেরেন্ডা পঞ্চায়েতের প্রধান অন্তরা ঘোষ, উক্তা পঞ্চায়েতের প্রধান মোজাফর শেখদেরও দাবি, ‘‘আমরা কম জলে চাষের জন্য অনুরোধ করেছি। এরপরে ধান চাষ করে কেউ সমস্যায় পড়লে আমাদের কোনও দায়িত্ব থাকবে না।’’

আউশগ্রাম ১ ব্লকের সহ-কৃষি অধিকর্তা দেবতনু মাইতি জানান, বর্ষায় বৃষ্টির উপর কিছুটা নির্ভর করা গেলেও বোরো চাষ পুরোপুরি সেচখালের জল অথবা মাটির নিচের জলের উপরেই নির্ভরশীল। এ বার যেহেতু বৃষ্টি হয়নি, তাই জলাধার ফাঁকা। ফলে অন্য বছরের মত ব্যাপক হারে ধানচাষ করতে গিয়ে মাটির তলার জল তুলে নিলে ভয়ঙ্কর বিপদের সম্মুখীন হতে হবে সবাইকে। তিনি বলেন, ‘এই পরিস্থিতিতে জমি পতিত না রেখে কম জলে চাষের কথা বলা হচ্ছে চাষিদের।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rain Water Canal DVC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE