পোলিয়োর পর দেশ থেকে হাম ও রুবেলা দূর করতে উদ্যোগী হয়েছে কেন্দ্র সরকার। সেই কর্মসূচিতে ন’মাস থেকে ১৫ বছর বয়স পর্যন্ত ১২ লক্ষ ছেলেমেয়েকে টিকাকরণের আওতায় আনার পরিকল্পনা নিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতরও। কিন্তু দেড় মাসের মধ্যে এত ছেলেমেয়েকে ইঞ্জেকশন দেওয়ার জন্য যাঁদের দরকার, ঘাটতি রয়েছে সেই প্রশিক্ষণ নার্সদের। ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসন ও বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ওই দফতরের কর্তারা।
আগামী ২৯ নভেম্বর থেকে ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত জেলা জুড়ে এই কর্মসূচি চলবে। স্বাস্থ্যকর্তাদের দাবি, ১২ লক্ষ শিশু ও কিশোরকে পোলিয়োর মতো দু’ফোঁটা ওষুধ খাইয়ে দিলেই হবে না, ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে টিকা দিতে হবে। তার জন্যে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নার্সের প্রয়োজন। কিন্তু গোটা জেলায় এই কর্মসূচিতে রয়েছেন মাত্র বারশো নার্স। এ ছাড়াও ২৯ ও ৩০ নভেম্বর পূর্ব ও পশ্চিম দুই জেলায় প্রশাসনিক ও প্রকাশ্য সভা করবেন মুখ্যমন্ত্রী। ফলে, প্রথম দু’দিনেই টিকাকরণ কর্মসূচি কতটা সফল হবে তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন স্বাস্থ্য আধকারিকেরাই।
পোলিয়ো, ফাইলেরিয়া কিংবা ডেঙ্গি রোধে স্বাস্থ্য দফতর গ্রামীণ এলাকায় যতটা সফল, সেই তুলনায় শহরে পিছিয়ে থাকে। কারণ খুঁজতে গিয়ে দেখা গিয়েছে, শহরের বিভিন্ন এলাকায় পোলিয়ো খাওয়াতে গিয়ে বাধা পেয়েছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। আবার গ্রামের তুলনায় শহরে ডেঙ্গি বা মশাবাহিত রোগের প্রকোপ বেশি। সে কারণে স্বাস্থ্য দফতর ঠিক করেছে, দুই বর্ধমানের ৮টি পুরসভায় স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে মেডিক্যাল কলেজের প্রশিক্ষিত চিকিৎসক ও নার্সরাও থাকবেন। মেডিক্যাল কলেজের এক শিক্ষক-চিকিৎসকের দাবি, ‘‘শহরে স্বাস্থ্য দফতরের কোনও পরিকাঠামোই নেই। তাই বেশির ভাগ কর্মসূচি সফল হয় না। জেলা স্বাস্থ্য দফতর আমাদের কাছে চিকিৎসক-নার্স চেয়েছে। আমরা পুর এলাকায় চিকিৎসক, নার্স পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’
বর্তমানে হাম প্রতিরোধের জন্য দু’ডোজের টিকা চালু থাকলেও, ২০১৫ সালে গোটা দেশে ৪৯ হাজারেরও বেশি শিশু হাম ও রুবেলা সংক্রমণে মারা যায়। তার পরেই এই কর্মসূচি নেয় সরকার। নতুন ব্যবস্থায় দু’টি ডোজের পরিবর্তে একটি ডোজ নেবে শিশু-কিশোরেরা। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায় বলেন, ‘‘রুবেলা নিজে খুব ভয়ঙ্কর নয়। কিন্তু শরীরে রুবেলা ভাইরাস থেকে গেলে গর্ভস্থ শিশুর জন্মগত নানা রোগ দেখা দিতে পারে।’’ জানা গিয়েছে, দু’সপ্তাহের ওই অভিযানে প্রথম পর্যায়ে প্রতিটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র, প্রাথমিক স্কুল ও তার আশেপাশের বাড়িতে টিকারকণ করা হবে। দ্বিতীয় পর্যায়ে মাধ্যমিক স্কুলে ওই টিকাকরণ করবেন নার্সরা। এতে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের স্বাভাবিক কমর্সূচি ব্যহত হবে না?
প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা ডেপুটি সিএমওএইচ (৩) জয়ব্রত দেবের কথায়, ‘‘কোনও কিছুই ব্যহত হবে না। বরং আমারা ইঞ্জেকশনের ভয় দূর করার জন্য আগে থেকেই নানা রকম ব্যবস্থা নিচ্ছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy