কেতুগ্রাম থানার সামনে বিজেপির বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র
বিজেপি কর্মী খুনের ঘটনায় নিহতের দেহ আটকে বিক্ষোভ দেখালেন বিজেপি সমর্থকেরা। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে শুক্রবার কেতুগ্রাম থানা ঘেরাও করেন শ’তিনেক বিজেপি কর্মী। এক অভিযুক্তকে গ্রেফতারও করে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার বাড়ির কাছে দলের পতাকা লাগানোর সময়ে পড়শি তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে বচসার পরে বিজেপি কর্মী সুশীল মণ্ডলকে ছুরির কোপ মারা হয় বলে অভিযোগ নিহতের স্ত্রী অপর্ণাদেবীর। স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বেরও দাবি, পাণ্ডুগ্রাম পঞ্চায়েতে বিজেপি ভাল ফল করায় মোদীর শপথের দিনে এলাকায় বিজয় মিছিল বের করার পরিকল্পনা ছিল। তা আটকাতেই এই হামলা। পরে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি, পাশের মালুন গ্রামের লক্ষ্মণ মণ্ডল, রাজকুমার ঘোষ ও জগন্নাথ ঘোষের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন অপর্ণাদেবী। পুলিশ ধরেছে রাজকুমারকে। পুলিশের দাবি, প্রাথমিক তদন্তে খুনে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে ধৃত। শুক্রবার তাকে কাটোয়া আদালতে তোলা হলে সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
বছর দুয়েক আগে তৃণমূলের কেতুগ্রাম ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জাহের শেখ খুনের পর থেকেই ভাঙন ধরে দলে। একাধিক নেতা কর্মী নানা মামলায় জড়িয়ে নিষ্ক্রীয় হয়ে পড়েন। সভা, বৈঠকে ডাক না পাওয়ায় পুরনো নেতাদের অেকে দল বদলে বিজেপিতে ভিড়েছেন বলেও তৃণমূল সূত্রের খবর। গত এক বছরে কেতুগ্রাম ১ ব্লকে বিজেপির পাঁচটি দলীয় কার্যালয় গড়ে ওঠে। বিজেপির ওই ব্লকের সভাপতি বুদ্ধদেব রায় বলেন, ‘‘বিজেপির প্রচার, বিজয়মিছিলে ভয় পেয়ে তৃণমূল নেতারা এলাকায় প্রায়ই বাইকবাহিনী নিয়ে ভয় দেখাচ্ছে। পথেঘাটে হামলা করা হচ্ছে। সবটাই হচ্ছে বিধায়কের অঙ্গুলী হেলনে।’’ বিজেপির একাংশের দাবি, নানুরের তৃণমূল নেতা কাজল শেখ এত দিন নিষ্ক্রীয় থাকায় কেতুগ্রাম শান্ত ছিল। তিনি ফের দলে গুরুত্ব পাওয়ায় তাঁর ঘনিষ্ঠ কেতুগ্রামের বিধায়ক শেখ সাহানেওয়াজের দলবল এলাকায় অশান্তি ছড়াচ্ছে। এ বার পাণ্ডুগ্রামের দুটি বুথে বিজেপি ‘লিড’ পাওয়ায় এই হামলা বলেও তাঁদের দাবি। যদিও খুনের ঘটনার সঙ্গে রাজনৈতিক যোগ উড়িয়ে দিয়ে দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানিয়েছেন বিধায়ক শেখ সাহানেওয়াজ।
এ দিনও পুলিশি টহল চলে পাণ্ডুগ্রামে। বিজেপির জেলার অন্যতম সাধারণ সম্পাদক অনিল দত্ত বলেন, ‘‘বিজেপি করার অভিযোগে আগেই সুশীলকে তৃণমূলের পতাকা ছেঁড়ার মামলায় ফাঁসানো হয়েছিল। এ বার ওকে খুন করল তৃণমূল কর্মীরা। আমরা দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি ও থানার আইসির স্বেচ্ছাচারিতার জন্য তাঁর অপসারণ দাবি করেছি।’’ পুলিশ গ্রেফতারের আশ্বাস দিলে সকাল ৯টা থেকে চলা বিক্ষোভ ওঠে বেলা ১১টায়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) সৈকত ঘোষ বলেন, ‘‘ তদন্ত চলছে। তবে আইসিকে অপসারণের কোনও দাবি আমি পাইনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy