দু’পক্ষের লোকজনকে সরাতে নামল পুলিশ। শনিবার দুপুরে মেমারিতে। নিজস্ব চিত্র
বিজেপির প্রচার কর্মসূচিতে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। শনিবার দুপুরে মেমারি রেলগেটের কাছে পুরপ্রধান স্বপন বিষয়ীর নেতৃত্বে এই হামলা হয় বলে অভিযোগ বিজেপি নেতাদের। তাতে এক মহিলা-সহ চার কর্মী জখম হয়েছেন বলে তাঁদের দাবি। এই ঘটনার পরে চকদিঘি-কৃষ্ণবাজার এলাকায় দু’পক্ষের লোকজনই জমায়েত করে। মাঝে ব্যারিকেড হয়ে দাঁড়ায় পুলিশ। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে সেই পরিস্থিতি চলার পরে পুলিশ লাঠি উঁচিয়ে তাড়া করে এলাকা ফাঁকা করে দেয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ দিন সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ মেমারির স্টেশনবাজার লাগোয়া এলাকা থেকে সিএএ এবং এনআরসি-র সমর্থনে বাড়ি-বাড়ি প্রচারের কর্মসূচি নিয়েছিল বিজেপি। দলের রাজ্য কমিটির সদস্য ভীষ্মদেব ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে তা শুরু হয়। অভিযোগ, সেই সময়েই রেলগেটের কাছে আনাজ বাজারে পুরপ্রধান তথা তৃণমূল নেতা স্বপনবাবু এক বক্তব্যে হুঁশিয়ারি দেন, ‘অন্যায় ভাবে’ কোনও রকম প্রচার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে দেবেন না তাঁরা। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এই বক্তব্যের পরপরই বিজেপির লোকজন ওই বাজারে পৌঁছন।
বিজেপি নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, পুরপ্রধানের নেতৃত্বে ঘিরে ধরে তাঁদের উপরে চড়াও হয় তৃণমূলের কিছু লোক। কিল, চড়, ঘুষি মারা হয়। তাতে বিজেপির মেমারি পুর-এলাকার সাধারণ সম্পাদক স্বপন মজুমদার-সহ চার জন জখম হন। খবর পেয়ে মেমারি থানা থেকে পুলিশ পৌঁছয়। ইতিমধ্যে দু’পক্ষের লোকজনও জড়ো হয়। বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা জিটি রোডের চকদিঘি মোড়ের কাছে জড়ো হন। তৃণমূলের লোকেরা কৃষ্ণবাজারে এক জায়গায় জড়ো হন। দু’পক্ষের হাতে লাঠিসোটা ছিল বলে স্থানীয় সূত্রের দাবি।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দু’পক্ষকেই বুঝিয়ে এলাকা ফাঁকা করার চেষ্টা হয়। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। উল্টে, দু’দিকেই লাঠি হাতে লোক বাড়ছিল। যে কোনও সময়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে, এই আশঙ্কায় শেষে পুলিশ লাঠি হাতে দু’পক্ষকেই তাড়া করে। তার পরে দুপুর আড়াইটে নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। আহত বিজেপি নেত্রী মুনমুন সাহা মণ্ডল পুরপ্রধানের নেতৃত্বে তাঁদের উপরে হামলা হয়েছে বলে মেমারি থানায় অভিযোগ করেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকের দাবি, ঘটনার জেরে ওই রাস্তা দীর্ঘক্ষণ বন্ধ হয়ে পড়ে। এলাকাবাসীকে ঘুরপথে যাতায়াত করতে হয়। অনেকে দোকানে ঝাঁপ ফেলেন। ব্যবসা কার্যত লাটে ওঠে বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের একাংশের। পুরভোটের আগে এ ধরনের ঘটনা আতঙ্ক তৈরি করছে বলেও দাবি তাঁদের।
বিজেপি-র উপরে হামলা চালানোর অভিযোগ মানতে চাননি পুরপ্রধান স্বপনবাবু। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমরা সারা বছর মানুষের পাশে থাকি। সেখানে হঠাৎ কেউ ভুল বার্তা দিয়ে চলে যাবে, তা হবে না। মানুষকে সঙ্গে নিয়ে গণতান্ত্রিক ভাবে শান্ত শহর অশান্ত করার প্রক্রিয়া প্রতিহত করা হবে।’’ বিজেপি নেতা ভীষ্মদেববাবুর মন্তব্য, ‘‘পুরপ্রধান তাঁর পদের মর্যাদা মাটিতে মেশালেন। আমরাও পাল্টা অভিযান চালাতে পারতাম। কিন্তু শহর অশান্ত করতে চাইনি। এ বার আমরাও প্রস্তুতি নিয়েই কর্মসূচি পালন করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy