Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

ভাই-বোন প্রতিবন্ধী, সম্পত্তি দখলের নালিশ

বন্দনাদেবীর দাবি, পারুলডাঙা মৌজায় ১৫৪ নম্বর দাগে ২১ কাঠা জমির মালিক তাঁরা চার জন। এ বছর জানুয়ারি মাসে সে জমি মাপজোপ করে বিক্রির চেষ্টা করলে এলাকার কয়েকজন বাধা দেন বলেও তাঁর অভিযোগ।

এই সেই জমি। নিজস্ব চিত্র

এই সেই জমি। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
পূর্বস্থলী শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০১৯ ০১:৩৮
Share: Save:

প্রতিবন্ধী ভাইবোনের সম্পত্তি বিক্রিতে বাধা ও জোর করে তা আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে পরিজনেদের বিরুদ্ধে। ওই দু’জনের মা, পূর্বস্থলী ১ ব্লকের নসরৎপুর পঞ্চায়েতের পারুলডাঙা এলাকার বন্দনা ঘোষ নাদনঘাট থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। বিচার চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন কালনার মহকুমাশাসক-সহ প্রশাসনের কর্তাদের কাছেও। তাঁর অভিযোগ, এলাকার তৃণমূল নেতা নবকুমার ঘোষের মদতে কয়েকজন এই ঘটনা ঘটিয়েছে। যদিও অভিযোগ মানেননি নবকুমারবাবু।

বৃদ্ধা বন্দনাদেবী জানান, গত বছর স্বামী মদনমোহন ঘোষের মৃত্যুর পর থেকে একশো শতাংশ প্রতিবন্ধী ছেলে ঋতমকুমার ঘোষ এবং মেয়ে মধুমিতা ঘোষকে নিয়ে থাকেন তিনি। আর এক কন্যা পারমিতার বিয়ে হয়ে গিয়েছে। বন্দনাদেবীর দাবি, পারুলডাঙা মৌজায় ১৫৪ নম্বর দাগে ২১ কাঠা জমির মালিক তাঁরা চার জন। এ বছর জানুয়ারি মাসে সে জমি মাপজোপ করে বিক্রির চেষ্টা করলে এলাকার কয়েকজন বাধা দেন বলেও তাঁর অভিযোগ। তাঁর দাবি, ওই আত্মীয়রা দাবি করে তাঁদেরও সম্পত্তির ভাগ দিতে হবে। প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় অন্য মৌজায় কিছু জমিতে চাষ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলেও তাঁর দাবি। অভিযোগে দেবব্রত ঘোষ, সঞ্জয় ঘোষ এবং শুভজিৎ ঘোষের নাম করে তিনি জানিয়েছেন, অনৈতিক দাবি তুলে হুমকি দিচ্ছে ওই তিন জন। শুভজিৎ বাবুর দাদা নবকুমারবাবু তৃণমূলের প্রভাবশালী নেতা হওয়াই তাঁরা এমন সাহস পাচ্ছে বলেও তাঁর দাবি।

ঋতমবাবু জানান, মা চোখে তেমন দেখতে পান না। দিদি মধুমিতা এবং তিনি নিজে হাঁটাচলা করতে পারেন না। ওই জমি ছাড়াও ১৫২ নম্বর দাগে একটি ৫৪ শতক জমি বিক্রির চেষ্টা করা হলেও ভয় দেখানো হয়েছে বলে তাঁর অভিযোগ। তাঁর দাবি, ‘‘আত্মীয়রা বলেছেন জমি দুটি ওঁদের নামে লিখে দিতে হবে। নাহলে খরিদ্দারদেও ভয় দেখাচ্ছেন তাঁরা।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ১৫ এপ্রিল ২১ শতক জমিটি এলাকার কিছু মানুষ বাঁশ দিয়ে ঘিরে দখল করে নেন। সেখানে একটি চালাঘরও অবৈধ ভাবে তৈরি করা হয়েছে। দুলাল ধারা, নয়ন ধারা, হারান ধারা, শীতল ধারা, শ্যামল ধারার মতো কয়েকজন এ কাজে যুক্ত বলেও তাঁর দাবি। ঋতমবাবু বলেন, ‘‘কষ্ট করে বিষয়টি নিয়ে দেখা করেছিলাম এলাকার বিধায়ক স্বপন দেবনাথের সঙ্গেও। তিনি আশ্বাস দিয়েছিলেন। তবে কাজের কিছু হয়নি।’’

তবে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সভাপতি নবকুমারবাবুর দাবি, পারিবারিক সমস্ত সম্পত্তি বাবা, কাকার নামেই কেনা হয়েছিল। পরিবারের অন্য সম্পত্তি যখন বিক্রি হয়েছে তখন ওঁদের নামে না থাকলেও টাকার ভাগ পেয়েছেন ওঁরা। এখন ওঁরা সম্পত্তি বিক্রি করে পরিবারের অন্য সদস্যদের বঞ্চিত করতে চাইছেন। তাঁর দাবি, ‘‘সম্পত্তি দখলে আমার কোনও ভূমিকা নেই। যাঁরা করেছে তাঁরাই বলতে পারবে।’’ পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Compliant Phisically Disabled
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE