Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Bakshi Family

অনুদান পেয়েছে বাড়ির পুজো, বিতর্ক

কাটোয়ার সুদপুর পঞ্চায়েতের বীজনগর গ্রামের বক্সী পরিবার টাকা পাওযার কথা মেনেছেন।

ফাইল চিত্র

ফাইল চিত্র

প্রণব দেবনাথ
কাটোয়া শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০২০ ০০:০৫
Share: Save:

পুজো অনুদানের ৫০ হাজার টাকা পাওয়ার কথা ক্লাবগুলোর। বাস্তবে অনুদান পেয়েছে বনেদি বাড়ির পুজোও।

কাটোয়ার সুদপুর পঞ্চায়েতের বীজনগর গ্রামের বক্সী পরিবার টাকা পাওযার কথা মেনেছেন। পরিবারের সদস্য সুরেশ্বর বক্সী জানিয়েছেন, তাঁর অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেছে। কিন্তু কী ভাবে পারিবারিক পুজো টাকা পেল, কী ভাবেই বা নাম বাছাই হল, তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। বিরোধীদের দাবি, ঘূর্ণিঝড় আমপানের মতো এখানেও ‘কাটমানি’ নিয়ে পুজোর নাম দেওয়া হয়েছে। যদিও প্রাথমিক ভাবে থানা এলাকা ধরে নাম পাঠানো হয়েছিল। পুলিশের দাবি, জেলায় এই ধরনের ১২টি নাম নজরে এসেছিল। সবগুলোই বাতিল করা হয়। কাটোয়ার ঘটনাটি হয়ে থাকলে, তা বিচ্ছিন্ন।

পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কী হয়েছে দেখা হবে। টাকা পেয়ে থাকলে তা ফেরত নেওয়া হবে।’’

বিরোধীদের অভিযোগ, কাটোয়া থানা এলাকায় ৩৭৩টি পুজো কমিটিকে ৫০ হাজার করে দেড় কোটি টাকার উপরে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে বেশ কিছু পুজোর নাম ‘কাটমানি’র বিনিময়ে প্রাপক তালিকায় ঢুকে গিয়েছে বলে অভিযোগ তাঁদের। তালিকা তৈরিতে সিভিক ভলান্টিয়ারদের কাজে লাগানো হয়েছে বলেও অভিযোগ।

প্রশাসনের একটা সূত্রের দাবি, পুজো অনুদান পেতে ক্লাবের কর্তাদের নির্দিষ্ট ফর্মে আবেদন করার কথা। তার সঙ্গে দমকল, পুলিশ, প্রশাসনের অনুমতি, নো অবজেকশন জমা দেওয়ার কথা। সেগুলি খতিয়ে দেখে টাকা আসে। আর গ্রামাঞ্চলে সিভিক ভলান্টিয়ারদের নাম জমা দেওয়ার কথা বলা হয়। এ ক্ষেত্রে সিভিক ভলান্টিয়ার ওই বাড়ির নাম কেন দিলেন, কী ভাবে তা চূড়ান্ত তালিকা রয়ে গেল, উঠেছে সেই প্রশ্ন।

বক্সী বাড়ির এক সদস্যের দাবি, পুজোয় সাহায্যের জন্য পুলিশের দ্বারস্থ হন তাঁরা। তবে সরকারি অনুদান পাওয়া বা বিতর্ক তৈরি হওয়ার মতো কোনও দাবি করেননি। কাটোয়া থানার দাবি, সব নাম খতিয়ে দেখা হয়েছে। এটা ‘বিচ্ছিন্ন’ ঘটনা।

কাটোয়ার সিপিএম নেতা অঞ্জন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ঘূর্ণিঝড়ের মতো পুজোয় টাকা দেওয়া নিয়েও চরম দুর্নীতি হচ্ছে। তৃণমূল নেতারা কাটমানির বিনিময়ে সিভিক ভলান্টিয়ারদের কাজে লাগিয়ে তালিকা তৈরি করছেন। জনগণের টাকা নেতাদের পকেটে ঢুকছে।’’ যদিও পুলিশের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণার পরে, থানা এলাকা ধরে তালিকা তৈরি হয়েছে। স্থানীয় সিভিক ভলান্টিয়ারেরা ওই কাজ করেছেন। কোনও ভাবে গোলমাল হয়ে থাকলে টাকা ফেরতের ব্যবস্থা করা হবে।

সুদপুর পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য তথা বীজনগর গ্রামের বাসিন্দা শীতল মণ্ডল বলেন, ‘‘বারোয়ারি পুজো ছাড়া, অনুদান পাওয়া যায় না। বক্সী বাড়ির পুজো সম্পূর্ণ পারিবারিক। তবে ওঁরা টাকা পেয়েছেন বলে শুনেছি।’’ ওই বাড়ির এক সদস্য প্রদীপ বক্সী বলেন, ‘‘অনেক শরিক টাকা না দেওয়ায় পুজোয় আর্থিক সমস্যা রয়েছে। তবে বিতর্ক হলে টাকা ফেরত দেব।’’

জেলা বিজেপি সভাপতি (কাটোয়া) কৃষ্ণ ঘোষেরও অভিযোগ, ‘‘দলের কর্মীদের পকেট ভরাতেই অনুদানের নামে দুর্নীতি করা হচ্ছে।’’ কাটোয়ার তৃণমূল বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি। প্রকৃত তথ্য গোপন করে সরকারের কাছ থেকে টাকা নেওয়া ঠিক নয়। শুনেছি, ওঁরা টাকা ফেরত দেবেন। তবে বিরোধীরা অযথা রাজনীতি করছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bakshi Family Durga Puja
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE