Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Coronaviru in West Bengal

আশা-নিরাশার দোলাচলে মৃৎশিল্পীরা

শিল্পীরা জানান, এখনও পর্যন্ত বড় পুজোর প্রতিমার বরাত এসেছে মাত্র কুড়ি শতাংশের মতো।

এসেছে বরাত। দূর্গা প্রতিমা গড়ার কাজে ব্যস্ত শিল্পী। গ্যামনব্রিজে একটি কুমোরপাড়ায়। নিজস্ব চিত্র

এসেছে বরাত। দূর্গা প্রতিমা গড়ার কাজে ব্যস্ত শিল্পী। গ্যামনব্রিজে একটি কুমোরপাড়ায়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২০ ০০:০১
Share: Save:

করোনার সংক্রমণ ও তার জেরে তৈরি পরিস্থিতিতে দুর্গাপুজোর আকাশেও মেঘ জমেছে। ইতিমধ্যেই বড় পুজো কমিটিগুলি নিজেদের বাজেট কমিয়েছে। দুর্গাপুরের কুমোরপাড়ার অনেক শিল্পীর হাতের পাঁচ বলতে ছোট মাপের পুজো।

খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, যে সব শিল্পীরা বাড়ির, আবাসনের পুজো, পাড়ার ক্লাবের ছোট পুজোর প্রতিমা তৈরি করে থাকেন তাঁরা কিছু কিছু প্রতিমার অর্ডার পেয়েছেন। তাঁদের প্রতিমা ছোট ও গতানুগতিক। রথের পর থেকেই বরাত পেতে শুরু করেছেন, বলে জানালেন শিল্পীরা। তবে আয় মূলত নির্ভর করে বড় পুজোর প্রতিমা গড়ার উপরে। সে ক্ষেত্রে আশার আলো আপাতত তেমন দেখতে পাচ্ছেন না তাঁরা। কারণ, এ বছর ‘থিম’ পুজো বা বড় পুজো তেমন হবে না বলে মনে করছেন তাঁরা। শিল্পীরা জানান, এখনও পর্যন্ত বড় পুজোর প্রতিমার বরাত এসেছে মাত্র কুড়ি শতাংশের মতো। সেগুলিরও বাজেট অন্য বারের ভগ্নাংশ মাত্র। সব মিলিয়ে প্রতিমা গড়ে আয় তেমন হবে না বলেই মনে করছেন শিল্পীরা।

দুর্গাপুরের বহু বড় পুজোর প্রতিমা তৈরি করে থাকেন বেনাচিতির জেকে পাল গলির মৃৎশিল্পী অরুণ পাল। তিনি জানালেন, রথের পর থেকে এখনও পর্যন্ত তাঁর কাছে সাতটি দুর্গা প্রতিমার অর্ডার এসেছে। বললেন, ‘‘অন্য বছর এই সময়ে ২৫-২৬টির অর্ডার চলে আসে। পুজো কমিটির সঙ্গে কথা বলে ‘থিম’ ও চাহিদা অনুযায়ী প্রতিমা তৈরি করে থাকি। তাই অর্ডার না পেলে, আগাম প্রতিমা বানিয়ে রাখতে পারি না। মাত্র সাতটি প্রতিমা বানিয়ে লাভ হবে না।’’ তিনি জানালেন, এখনও পর্যন্ত গণেশ প্রতিমার কোনও বরাত পাননি। অথচ অন্য বছর এই সময়ে আট-ন’টি গণেশ প্রতিমারও বরাত পান।

তুলনায় ছোট শিল্পীরা কিছুটা আশায় রয়েছেন। প্রথমত, তাঁরা ছোট ক্লাব বা পারিবারিক পুজোর প্রতিমা বানিয়ে থাকেন। অর্ডার না পেলেও প্রতিমা বানিয়ে রাখেন তাঁরা। পুজোর আগে ক্রেতারা দরাদরি করে প্রতিমা কিনে নিয়ে যান। এই পরিস্থিতিতেও পারিবারিক পুজোগুলি যে হবে, সে বিষয়ে প্রায় নিশ্চিত শিল্পীরা। যেমন, গ্যামনব্রিজ এলাকার শিল্পী ভূপেন দে জানান, এখনও পর্যন্ত পাঁচটি প্রতিমার বরাত পেয়েছেন। তিনি আরও ১৫টি প্রতিমা গড়ে রাখছেন। এ ছাড়া, গণেশ ও মনসা প্রতিমার কিছু অর্ডার তিনি পেয়েছেন। সব মিলিয়ে আশার আলো দেখছেন ভূপেনবাবু। তিনি বলেন, ‘‘এক সময়ে ভেবেছিলাম, এ বার একেবারে বোধ হয় হাত গুটিয়ে বসে থাকতে হবে। তা হবে না বলেই মনে হচ্ছে। সময় যত এগোচ্ছে, তত বাজারের পরিস্থিতি ভাল হচ্ছে।’’

সব মিলিয়ে আশা-নিরাশার দোলাচলে রয়েছেন মৃৎশিল্পীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronaviru in West Bengal Durga Puja 2020
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE