এমন অবস্থা ধানখেতের। কাঁকসায়। —নিজস্ব চিত্র
ফসল ঘরে তোলার সময় থেকেই ঝড়-বৃষ্টিতে বিপাকে পড়েছিলেন পশ্চিম বর্ধমান জেলার চাষিরা। এ বার তার সঙ্গে যোগ দিয়েছে ঘূর্ণিঝড় ‘আমপান’-এর তাণ্ডব।
বুধবার সকাল থেকে বৃষ্টির পাশাপাশি ঝোড়ো হাওয়া শুরু হওয়ায় আতঙ্ক বাড়িয়েছে চাষিদের। কারণ, এখন ধানের পাশাপাশি বহু মাঠে আনাজও পড়ে রয়েছে। এতে ব্যাপক আকারে ক্ষতির আশঙ্কা করছেন চাষিরা।
পশ্চিম বর্ধমান জেলা মূলত শিল্পাঞ্চল বলে পরিচিত হলেও, জেলার বহু ব্লকে কৃষিকাজই প্রধান। জেলার প্রায় ১২ হাজার হেক্টর জমিতে সারা বছর বিভিন্ন ধরনের আনাজ চাষ করে থাকেন চাষিরা। উদ্যানপালন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঁকসা, দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকে আনাজ চাষের পরিমাণ সব থেকে বেশি। কিছুটা জামুড়িয়া ব্লকেও আনাজ চাষ হয়ে থাকে। এই সময়ে মূলত ঝিঙে, ঢ্যাঁড়শ, টোম্যাটো, পটলের মতো আনাজ চাষ করা হচ্ছে। কিন্তু লাগাতার বৃষ্টিতে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে চাষিদের মধ্যে। তাঁদের দাবি, এপ্রিল মাসের শেষ থেকে প্রায় দিনই ঝড়-বৃষ্টি হচ্ছে জেলায়। ফলে, মাঠেই আনাজ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। কাঁকসার আনাজ চাষি দিবাকর চৌধুরী, বিনোদ পালরা বলেন, ‘‘জমিতে জল জমে গেলে আনাজ নষ্ট হয়ে যাবে। শেষ পর্যন্ত ঘরে কতটা ফসল নিয়ে যেতে পারব জানি না!’
জেলা উদ্যানপালন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জমিতে যাতে জল না জমে সে দিকে নজর দিতে বলা হয়েছে চাষিদের। পাশাপাশি মাচাগুলিও শক্ত করে বাঁধার জন্য পরামর্শ দেওয়াও হয়েছে তাঁদের। দফতরের জেলা আধিকারিক দেবাশিস মান্না বলেন, ‘‘আমরা প্রতিনিয়ত পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি। কোনও ক্ষয়ক্ষতি হলে রাজ্য সরকারের নির্দেশ মতো ক্ষতিপূরণেরে ব্যবস্থা করা হবে।’’
এই সময় বোরো ধান কাটা চলছে কাঁকসা ব্লক জুড়ে। এ দিনের ঝড়-বৃষ্টির ফলে বহু চাষিই কাটা ধান গোলায় তুলতে পারেননি। চাষিরা জানিয়েছেন, ধান পাকার আগে থেকেই বৃষ্টি হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত খুব একটা ক্ষতি হয়নি। কিন্তু এই সময়ে বহু চাষিই ধান কাটতে শুরু করেছেন। কাজেই এই বৃষ্টি কতটা ক্ষতিকর হবে তা বুঝে উঠতে পারছেন না চাষিরা। ব্লকের প্রায় ২,০০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে এ বার। চাষিরা জানিয়েছেন, ঝড়ের ফলে ধান গাছ নুইয়ে পড়তে পারে। পাশাপাশি, পাকা ধান ঝরে পড়তে পারে।
এ প্রসঙ্গে ব্লক কৃষি অধিকর্তা অনির্বাণ বিশ্বাস বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত তেমন ক্ষতির খবর মেলেনি। দফতরের কর্মীরা খোঁজখবর নিচ্ছেন।’’ তিনি জানিয়েছেন, জল জমে ক্ষতি হতে পারে তিলের। জেলায় প্রায় এক হাজার হেক্টর জমিতে তিলের চাষ হয়েছে। জমিতে জল যাতে না জমে, সে জন্য চাষিদের দ্রুত জমি থেকে জল বের করার পরামর্শ দিয়েছে কৃষি দফতর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy