এই সেই চিঠি। নিজস্ব চিত্র
বিধায়ক তহবিলের টাকায় উন্নয়নের কাজ করার জন্য ‘এজেন্সি’ বদল। আর তা নিয়েই চাপানউতোর তৈরি হয়েছে মেমারির বিধায়ক ও পুরপ্রধানের, অন্তত এমনটাই মত সংশ্লিষ্ট মহলের।
তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, এলাকা উন্নয়ন প্রকল্পের প্রস্তাবিত কাজ পুরসভা করছেন না বলে বিধায়ক নার্গিস বেগম সাম্প্রতিক অতীতে দলের তৎকালীন জেলা পর্যবেক্ষক তথা মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে চিঠি দিয়েছিলেন। এ বার সরাসরি সেই কাজ পুরসভার বদলে জেলা প্রশাসন করুক, এই প্রস্তাব দিয়ে জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) বিজয় ভারতীকে চিঠি দিলেন বিধায়ক। বিষয়টি সামনে আসার পরেই পুরপ্রধান স্বপন বিষয়ী বলেন, ‘‘আমি তো কাজ করে যাই। সেখানে কে কী করলেন বা করবেন, তা আমার জানার কথা নয়।’’ পাল্টা শনিবার পুরসভার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বিধায়ক বলেন, “উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা আটকে রাখার কোনও মানে হয়? গত বছর ২৬ জুলাই পুরসভার কাজের অনীহা নিয়ে রাজ্য প্রশাসনের মন্ত্রী স্তরে চিঠি দিয়েছিলাম। তার পরেও টনক নড়ল না, সংবাদমাধ্যমেও বিষয়টি নিয়ে চর্চা হয়েছে। এর পরে পুরসভার বদলে জেলা প্রশাসনকে দিয়ে ওই সব কাজ করার জন্য চিঠি দিয়েছি।’’
কিন্তু এই চাপানউতোরের কারণ কী? প্রশাসন সূত্রেই জানা যায়, নার্গিসের বিধায়কের এলাকা উন্নয়ন প্রকল্পে (বিইউপি) ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে পড়ে রয়েছে দেড় লক্ষ টাকা। গত আর্থিকবর্ষে সেই পরিমাণটা, ৩৪ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা।
সম্প্রতি বিধায়ক দাবি করেছিলেন, অনেক কাজ চলছে। কিছু কাজ শেষের শংসাপত্র (ইউসি) জমা পড়েনি বলেই সরকারি নথিতে টাকা জমা পড়ে রয়েছে দেখানো হচ্ছে। কিন্তু এ দিন বিধায়ক নিজেই জেলাশাসককে লেখা ওই চিঠিতে জানিয়েছেন, ২০১৭-১৮ আর্থিক বছরের তিনটি কাজ এখনও হয়নি। সে জন্য তিনি ওই সব কাজ শেষের জন্য মেমারি পুরসভার বদলে জেলা প্রশাসনকে ‘এজেন্সি’ হিসেবে নিয়োগ করলেন। চিঠি অনুযায়ী, ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে খাঁড়ো যুবক সঙ্ঘের সংস্কৃতি-মঞ্চের অস্থায়ী আচ্ছাদন তৈরির জন্য পুরসভাকে দেড় লক্ষ টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। চলতি বছরের ২ জানুয়ারি সেই টাকার অনুমোদন দেয় প্রশাসন। আবার ওই দিনই মেমারি কলেজে একটি গেটের জন্য দেড় লক্ষ টাকা দেওয়া হয়। এর আগে হাটপুকুরের স্নানঘাট তৈরির জন্যও দেড় লাখ টাকার অনুমোদন দিয়েছিলেন বিধায়ক। কিন্তু তিনটি কাজই শুরু করতে পারেনি মেমারি পুরসভা, দাবি বিধায়ক ঘনিষ্ঠদের। ওই চিঠিতে বিধায়কের মন্তব্য, ‘‘অনিবার্য কারণে ‘এজেন্সি’ বদল করতে তিনি বাধ্য হলেন।’’
যদিও এ প্রসঙ্গে পুরপ্রধান স্বপনবাবু দাবি করেন, “কাজের পদ্ধতিটা তো বুঝতে হবে। পুকুরের ঘাটের জমির সমস্যা রয়েছে। তা মিটিয়ে আমাদের কাছে সেটির তথ্য ও নথি রাখতে হবে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা সংস্থার ‘নো অবজেকশন’ শংসাপত্র নিতে হবে। তার পরে কত টাকার কাজ, সেটির হিসেব করে টাকা চাইতে হয়। খাঁড়োর জন্য টাকা চেয়েছিলাম, সেই টাকা না পেলে কাজ কিভাবে করব?”এই পরিস্থিতিতে জেলা প্রশাসনের কর্তারা অবশ্য জানিয়েছেন, এ সব ক্ষেত্রে পূর্ত দফতরকেই কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy