দুর্গাপুরে সিটিসেন্টার এলাকায়। —নিজস্ব চিত্র।
রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বেআইনি হোর্ডিং, ব্যানার, পোস্টার লাগানোর অভিযোগ উঠেছে দুর্গাপুর শহরের রাস্তার পাশের গাছগুলিতে। পেরেক পুঁতে এ ভাবে বিজ্ঞাপন দেওয়ার ফলে গাছগুলির ক্ষতি হচ্ছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেক বাসিন্দা। এ ব্যাপারে ইতিমধ্যে তাঁরা বন দফতরের কাছে স্মরকলিপি জমা দিয়েছেন। বন বিভাগ থেকে উপযুক্ত পদক্ষেপ কারর আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
দুর্গাপুরের অধিকাংশ রাস্তার ধারেই গাছ লাগানো হয়েছে। পুরসভা বা এডিডিএ-র নির্দিষ্ট জায়গায় বিজ্ঞাপন দিতে গেলে রাজস্ব দিতে হয়। কিন্তু গাছে বিজ্ঞাপন দেওয়া যায় বিনা পয়সায়। কাজেই, ব্যবসায়িক হোক বা সামাজিক সংস্থা, এমনকি ব্যক্তিবিশেষও প্রয়োজন মতো গাছে বিজ্ঞাপন সাঁটিয়েছে। শহরজুড়ে ইচ্ছো মতো গাছের গায়ে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে সেই সব বিজ্ঞাপন।
শহরবাসীর একাংশের অভিযোগ, বিজ্ঞাপন ঝুলিয়ে দেওয়ার পরে গাছগুলি ক্রমশ রুগ্ণ হয়ে পড়ছে। কিছু কিছু গাছ মারাও যাচ্ছে। বাসিন্দারা জানান, সিটি সেন্টারের জহরলাল নেহরু রোডে এক ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের সামনে একটি গাছ পুরো শুকিয়ে গিয়েছে। গাছটির গায়ে এখনও একাধিক হোর্ডিং ঝুলছে। বহু পেরেকও পোঁতা রয়েছে। সেপকো থেকে ভগৎ সিংহ মোড় যাওয়ার পথে একটি গাছেরও এমন দশা হয়েছে। বাসিন্দাদের দাবি, লোহার পেরেক পুঁতে দেওয়ার জন্যই এ ভাবে গাছগুলির অকালমৃত্যু হচ্ছে।
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, যে গাছগুলি মারা গিয়েছে তার কারণ পরীক্ষা না করে বলা মুশকিল। তবে এই ধরনের পেরেক পোঁতার ফলে গাছের স্বাস্থ্যহানি হয়। স্বাভাবিক শারীরবৃত্তিয় প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটে। স্বাভাবিক বৃদ্ধিও ব্যাহত হয়। বন দফতরের দুর্গাপুর বিভাগের বনাধিকারিক মিলন মণ্ডল বলেন, ‘‘গাছের ব্যাপারে সবাইকে সংবেদনশীল হতে হবে। মনে রাখতে হবে দুর্গাপুর অন্যতম দূষিত অঞ্চল।’’ বন দফতর সূত্রে জানা যায়, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে শহরের বাসিন্দারা একটি স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন। দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, এ ব্যাপারে সচেতনতা তৈরির উদ্যোগ হবে। মহকুমা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে কী ভাবে এই রেওয়াজ বন্ধ করা যায় তা দেখা হবে।
শহরের মেয়র অপূর্ব মুখোপাধ্যায় জানান, পুরসভার পক্ষ থেকে নিয়ম করে বৃক্ষরোপণ অভিযান করা হয়। সেখানে এ ভাবে পুরনো গাছ নষ্টের ঘটনা একেবারে কাম্য নয়। তিনি বলেন, ‘‘ক্ষুদ্র স্বার্থ চরিতার্থ ও সচেতনতার অভাব— এই দুই কারণে এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। সব কাউন্সিলরদের নিজের এলাকায় এই রকম বিজ্ঞাপন সরিয়ে ফেলতে বলা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy