Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Club

খুনের পিছনে কি ক্লাব নিয়ে বিবাদ

মঙ্গলবার রাতে কাটোয়া শহরের কলেজপাড়ায় বাড়ির কাছেই গুলিতে খুন হন ওই যুবক। পুলিশের দাবি, পরিচিত লোকেরাই ফোনে ডেকে নিয়ে গিয়ে একেবারে কাছ থেকে গুলি করে কপালে।

নিহত রথীন বিশ্বাস।

নিহত রথীন বিশ্বাস।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাটোয়া শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০০:৫২
Share: Save:

জমিজমা সংক্রান্ত বিবাদ, ক্লাবের দখল নিয়ে গোলমালে নাম জড়িয়েছিল তাঁর। তেমন কোনও আক্রোশের জেরেই রথীন বিশ্বাস (৩২) নামে ওই যুবককে খুন হতে হয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ।

মঙ্গলবার রাতে কাটোয়া শহরের কলেজপাড়ায় বাড়ির কাছেই গুলিতে খুন হন ওই যুবক। পুলিশের দাবি, পরিচিত লোকেরাই ফোনে ডেকে নিয়ে গিয়ে একেবারে কাছ থেকে গুলি করে কপালে। দু’টি গুলির একটি কপাল ফুঁড়ে ভিতরে ঢুকে যায়। রাতেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ছ’জনকে আটক করে পুলিশ।

বুধবার নিহতের বাবা রণজিৎ বিশ্বাস অমিত মণ্ডল ওরফে পাপ্পু ও প্রীতম ঘোষ নামে দু’জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযুক্তেরা যথাক্রমে হাজরাপুর কলোনি ও মণ্ডলপাড়ার বাসিন্দা। অমিত সম্পর্কে প্রীতমের ভগ্নিপতি। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।

প্রাথমিক তদন্তে নেমে পুলিশের অনুমান, খুনের সঙ্গে রাজনীতির যোগ নেই। পুরনো বিবাদের জেরেই এই ঘটনা। তবে কী কারণে খুন তা নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। পুলিশ সূত্রের দাবি, নিহতের নামে একাধিক অপরাধমূলক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। বছর দশেক আগে কলেজ ভোট চলাকালীন বোমার আঘাতে বাঁ হাতের কব্জি উড়ে যায় তাঁর। এলাকায় নানা অশান্তিতেও তাঁর নাম জড়ায়। এমনকি, বছর দু’য়েক আগে কাটোয়ার মাধবীতলায় একটি চায়ের দোকানে গুলি চালানোর ঘটনাতেও অভিযুক্ত ছিলেন রথীন। গুলিতে জখমও হন তিনি।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, রথীন আগে সিপিএম করতেন। বছর পাঁচেক আগে তৃণমূলের এক নেতার ঘনিষ্ঠ হন। তবে বছর তিনেক ধরে কোনও রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে দেখা যায়নি তাঁকে। তবে মাস আটেক আগে শহরের তিন নম্বর ওয়ার্ডের এক তৃণমূল নেতার সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ হয় বলেও দাবি অনেকের। প্রতিবেশীদের অভিযোগ, এলাকায় জমির দালালি করতেন নিহত। সেই কারণে নানা বিবাদেও জড়িয়েছিলেন। সম্প্রতি হাজরাপুর কলোনির একটি ক্লাবের দখল নিয়ে অভিযুক্ত দু’জনের সঙ্গে তাঁর মারামারি হয় বলেও অভিযোগ।

রণজিৎবাবু জানান, সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ ফোনে কারও সঙ্গে কথা বলার পরে ‘পাওনা টাকা আনতে যাচ্ছি’ বলে স্কুটি নিয়ে বেরোন রথীন। রাত পৌনে ৯টা নাগাদ খবর পেয়ে তাঁরা গিয়ে দেখেন, বিজ্ঞান পরিষদের পাশে পিচ রাস্তায় একটি নর্দমার উপরে রক্তাক্ত দেহ পড়ে রয়েছে রথীনের। রণজিৎবাবুর দাবি, ‘‘পাপ্পু ও প্রীতমের সঙ্গে অশান্তি চলছিল। ওরা আমার ছেলেকে পরিকল্পিত ভাবে খুন করেছে।’’

পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে একটি গুলির খোল, রথীনের স্কুটি ও মোবাইল মিলেছে। আজ, বৃহস্পতিবার বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দেহের ময়না-তদন্ত হওয়ার কথা।

জনবহুল রাস্তায় খুনের ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। তবে পুরপ্রধান তথা বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘ওই খুনের সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগাযোগ নেই।’’ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) ধ্রুব দাস বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে একাধিক কারণ নিয়ে আমরা ভাবছি। জিজ্ঞাসাদের জন্য ছ’জনকে আটক করা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Club Murder katwa
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE