বর্ধমানের স্পন্দন স্টেডিয়ামে আইনজীবীদের ক্রিকেট। নিজস্ব চিত্র
আগের দিন স্মারকলিপি জমা দিয়ে শনিবার কর্মবিরতি পালন করলেন কালনার আইনজীবীরা। তার জেরে চূড়ান্ত দুর্ভোগ পোহালেন অনেক বিচারপ্রার্থী। আদালতে এসেও ফিরে যেতে হয় অনেককে। আইনজীবীদের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, নানা দাবিতে কর্মবিরতি পালন করে এ দিন বর্ধমান বার অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত একটি ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় যোগ দিতে যান কিছু আইনজীবী।
বার অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার জনা পঞ্চাশ আইনজীবীর সই করা একটি স্মারকলিপি মহকুমাশাসকের দফতরে জমা দেওয়া হয়। সেখানে আইনজীবীরা অভিযোগ করেন, তাঁদের বসার স্থায়ী জায়গা নেই। ২০১৮ সালের মে মাসে প্রাকৃতিক দুর্যোগে আদালত চত্বরে গাছের ডাল ভেঙে মৃত্যু হয় তরুণ আইনজীবী আসিফ শেখের। সেই সময়ে মহকুমা প্রশাসনের তরফে আইনজীবীদের স্থায়ী বসার জায়গা তৈরির আশ্বাস দেওয়া হয়। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে আর কোনও তৎপরতা দেখা যায়নি। প্রশাসনকে আইনজীবীরা জানান, এই বিষয়টি নিয়ে শনিবার তাঁরা প্রতীকি কর্মবিরতি পালন করবেন। আদালতকেও বার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয় সে কথা।
এ দিন আইনজীবীরা কাজ না করায় বহু বিচারপ্রার্থীকে ফিরে যেতে হয়। নাদনঘাটের একটি ধর্ষণের মামলায় চার জন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে এসেছিলেন। আইনজীবীরা কাজ না করায় তাঁরা বিকেল পর্যন্ত অপেক্ষা করে ফিরে যান। বারুইপাড়া গণপিটুনি মামলায় সাক্ষ্য দেওয়ার কথা ছিল সেন্ট্রাল ফরেন্সিক সায়েন্সের আধিকারিকের। তা পিছিয়ে যায়। ১৬ মার্চ এই মামলার শুনানি হবে বলে জানা গিয়েছে। আদালতে কাজে আসা রামগোপাল হাজরার ক্ষোভ, ‘‘আচমকা যে কোনও বিষয়কে কেন্দ্র করে কালনা বার অ্যাসোসিয়েশন কর্মবিরতি ডেকে দেয়। আইনজীবীরা বোঝেন না, দূরদূরান্ত থেকে কত মানুষ কাজে এসে হয়রান হন।’’
আইনজীবীদেরই একটি অংশের দাবি, নিজেদের বসার জায়গার অভাবের কারণে কর্মবিরতির কথা জানালেও আসলে এ দিন বর্ধমানে একটি ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় খেলতে যান এক দল আইনজীবী। এমন সিদ্ধান্তে আইনজীবীদের একাংশের মধ্যেও ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। তাঁদের দাবি, এমন চলতে থাকলে এর পরে আরও ছোট-ছোট কারণে কর্মবিরতির দাবি উঠবে।
যদিও ক্রিকেট খেলার জন্য কর্মবিরতির কথা মানতে চায়নি কালনা বার অ্যাসোসিয়েশন। সেটির সদস্য পার্থসারথি করের বক্তব্য, ‘‘ক্রিকেট তো কয়েকজন খেলছেন। আইনজীবীদের নিরাপত্তার দাবিতেই আমরা প্রতীকি কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’ তবে এর জেরে সাধারণ মানুষের হয়রানির কথা স্বীকার করেছেন তিনি। তবে বিচারপ্রার্থী ও আইনজীবীদের নিরাপত্তার স্বার্থেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে তাঁর দাবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy