এক কাপ চা দাম পাঁচ টাকা। একটি রুটি তিন টাকা। ডিম-তড়কা ২০ টাকা।
বর্ধমান জেলার নির্বাচনী দফতর রাজনৈতিক দলগুলির জন্য এমন দামই নির্ধারণ করেছে। বেঁধে দেওয়া হয়েছে ২৬৯টি জিনিসের দাম। রাজনৈতিক দলগুলির অভিযোগ, বেশ কিছু জিনিসের ধার্য দামের সঙ্গে খোলা বাজারের দামের সামঞ্জস্য নেই।
ভোটের দিন ঘোষণার পরেই নির্বাচন কমিশন জানিয়েছিল, এ বার ভোটের খরচে কড়া নজর রাখা হবে। নির্দেশিকা অনুযায়ী, এ বার লোকসভা ভোটে প্রত্যেক প্রার্থী ৭০ লক্ষ টাকা খরচ করতে পারবে। ফ্লেক্স-ব্যানারের সঙ্গে কর্মী-সমর্থকদের খাওয়াদাওয়া, সবই তার মধ্যে সারতে হবে। এক-এক জেলায় এক-এক রকম জিনিসের দর। সে জন্য জেলার নির্বাচন কমিশন সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের খরচ বেঁধে দিয়েছে। পূর্ব বর্ধমানে খরচ হিসাবের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত জেলাশাসক হুমায়ুন বিশ্বাস বলেন, ‘‘দরপত্র ডাকা হয়েছিল। যে সবচেয়ে কম দর দিয়েছে, সেটাই রাখা হয়েছে।’’ সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা বলে, তাঁদের সম্মতি আদায় করার পরেই দর ছাপানো হয়েছে বলে জেলা নির্বাচন দফতরের তরফে জানানো হয়েছে।
কিন্তু নানা জিনিসের যে দাম ধরা হয়েছে, তা নিয়ে সন্তুষ্ট নন নানা দলের নেতারা। তাঁদের দাবি, প্রচারে বেরিয়ে প্রার্থী বা কর্মীদের জন্য আদতে যে দামে আপেল, লেবু বা কলা যে দামে কিনবে, ভোটের খরচের ক্ষেত্রে সেই খাতে লেখা হবে অনেকটাই বেশি। এর অন্যথা করার উপায় নেই। ফলে, প্রকৃত খরচ ও খাতায়-কলমে খরচের মধ্যে ফারাক থেকে যাবে বলে দাবি দলগুলির।
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এ বার থেকে ছাপাখানার কাছেও রাজনৈতিক দলগুলি কত সংখ্যার প্রচারপত্র ছাপিয়েছে তার বিশদ তথ্য নেওয়া হবে। এ নিয়ে সর্বদল বৈঠকে আপত্তি তোলেন তৃণমূল নেতা উজ্জ্বল প্রামাণিক। তিনি দাবি করেন, ‘‘আমাদের কাছে প্রচারপত্র ছাপার হিসাব নেওয়া হবে। সেটা ঠিক কি না জানার জন্যে ছাপাখানার কাছেও তথ্য চাইবে কমিশন। তার মানে আমাদের হিসাব সত্যি বলে মানতে চাইছে না কমিশন।’’ জেলা নির্বাচন আধিকারিক তথা জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, “নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মেনেই সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে।“
প্রচারের সময় চা-বিস্কুট খেলে ৭ টাকা, টিফিনের প্যাকেটের দাম ৮০ টাকা রাখা হয়েছে। আপেল-লেবুর দামের সঙ্গে কলার ডজন ধরা হয়েছে ৮৫ টাকা। ফুলের মালার দাম ১৫০ টাকা। ঝালমুড়ি ১০ টাকা। প্রচারের সঙ্গে থাকা হারমোনিয়াম, গিটারের ভাড়া ২০০ টাকা করে রেখেছে নির্বাচন কমিশন। কবিগান, রণপার জন্য প্রতিদিন হাজার টাকা খরচ ধরা হয়েছে। প্রশাসনের একটি সূত্রের দাবি, রাজনৈতিক দলের সভা-সমিতির ভিডিয়ো রেকর্ডিং করে প্রশাসন। সেগুলির ছবি দেখা খরচের হিসেব কষা হয়। কিন্তু প্রচুর ছোট সভা-সমাবেশ-মিছিলের ভিডিয়ো রেকর্ডিং করা সম্ভব হয় না। খুঁটিনাটি খরচের হিসেব ধরার জন্য পাটের সুতলি দড়ির মতো জিনিসের দাম বেঁধেছে কমিশন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy