আউশগ্রামে নকুলদানা নিয়ে প্রচারে মহিলা তৃণমূল কর্মীরা। নিজস্ব চিত্র
কর্মী সম্মেলনে দলের শহর সভাপতি ও প্রাক্তন পুরপ্রধানের উদ্দেশ্যে পর্যবেক্ষক অনুব্রত মণ্ডল নির্দেশ দিয়েছিলেন, গুসকরা থেকে পাঁচ হাজার ভোটে ‘লিড’ দিতে হবে প্রার্থীকে। কিন্তু তার পরে বেশ কয়েক দিন কেটে গেলেও গুসকরা পুরসভা এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডে দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে এখনও দেওয়াল লিখন হয়নি। তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, দলের কয়েক জন বিদায়ী কাউন্সিলর এখনও প্রার্থীর হয়ে মাঠেই নামেননি। এর মধ্যে আউশগ্রামে নানা এলাকায় প্রচারে বেরিয়ে তৃণমূলের মহিলা কর্মীরা নকুলদানা বিলি করছেন বলে অভিযোগ।
গুসকরা এলাকাটি বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের অধীন। গুসকরা পুরসভার ১৬টি ওয়ার্ডের মধ্যে তৃণমূলের দখলে রয়েছে ১০টি, বামেদের ৫টি। আর একটিতে রয়েছেন তৃণমূলের বহিষ্কৃত কাউন্সিলর চঞ্চল গড়াই। তবে বিধানসভা ভোটের হিসাবে সিপিএমের চেয়ে গুসকরা শহরে তৃণমূল পিছিয়ে রয়েছে। দলের নেতা-কর্মীদের ধারণা, সে জন্যই গুসকরা থেকে ‘লিড’ বেঁধে দিয়েছেন অনুব্রত। সেই সভায় শহরের বিদায়ী কাউন্সিলরদের বড় অংশ ডাক পাননি। তাঁদের মধ্যে ছিলেন তৃণমূলের পুরনো কাউন্সিলর নিত্যানন্দ চট্টোপাধ্যায় ও মল্লিকা চোঙদার। তাঁদেরও এখনও দলীয় প্রার্থী অসিত মালের সমর্থনে প্রচারে নামতে দেখা যায়নি।
নিত্যানন্দবাবু অবশ্য বলেন, “শরীরটা ভাল নেই। তাই প্রচারে যেতে পারেনি। চিকিৎসক পরামর্শ দিলেই এলাকায় প্রচার শুরু করে দেব।’’ দলের অন্দরে তাঁর অনুগামী হিসাবে পরিচিত ১০ নম্বর ওয়ার্ডের রাখি মাজির বক্তব্য, “সাধারণ কর্মী হিসাবেই স্বীকৃতি পেলাম না। সেখানে বিদায়ী কাউন্সিলর হিসাবে ভোট চাইতে যাব কী ভাবে?” ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত্যুঞ্জয় মণ্ডল থেকে ১ নম্বর ওয়ার্ডের রানু গায়েন, অনেকেই দাবি করেন, “দেওয়াল দখল করা হয়ে গিয়েছে। তবে দল কোনও নির্দেশ পাঠায়নি বলে নামিনি।’’ মল্লিকদেবীর ক্ষোভ, “দল কোনও দায়িত্ব দেয়নি। আমাদের দায়িত্ব দিলে দল হার হবে বলে মনে করছে। পরিজন বিয়োগেও এত কষ্ট পেতাম না।’’ তবে মাঠে নেমেছেন বিদায়ী পুরপ্রধান বুর্ধেন্দু রায়, উপ-পুরপ্রধান চাঁদনিহারা মুন্সীরা। বুর্ধেন্দুবাবু বলেন, “প্রার্থী গুসকরায় এলেই হইহই করে সবাই বেরিয়ে পড়বেন।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
আউশগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক অভেদানন্দ থান্দার মেনে নেন, কয়েকজন বিদায়ী কাউন্সিলর এখনও ভোটের ময়দান থেকে দূরে রয়েছেন। তাঁর কথায়, “ওই নেতাদের সঙ্গে শহর সভাপতি কথা বলছেন।’’ গুসকরা শহরের তৃণমূল সভাপতি কুশল মুখোপাধ্যায়ের দাবি, “যে সব ওয়ার্ডে বৈঠক হচ্ছে সেখানকার বিদায়ী কাউন্সিলররা থাকছেন। ওই সব ওয়ার্ডে বৈঠক হলেই তাঁরা নেতৃত্ব দেবেন।’’
এরই মধ্যে আউশগ্রামে তৃণমূলের মহিলা কর্মীরা নকুলদানা নিয়ে প্রচার শুরু করেছেন। আউশগ্রাম অঞ্চল তৃণমূলের সভানেত্রী মনিমালা পালের দাবি, গুসকরায় কর্মিসভায় অনুব্রত মণ্ডল এমন নির্দেশ দিয়েছিলেন। তাই বাড়ি-বাড়ি প্রচারে গিয়ে নকুলদানা ও জল বিলি করা হচ্ছে। বিধায়ক অভেদানন্দবাবুর দাবি, এখানে যা উন্নয়ন হয়েছে, তা মানুষকে জানানোর পাশাপাশি মিষ্টিমুখ করানো হচ্ছে। সিপিএম নেতা আলমগীর মণ্ডলের দাবি, এ ভাবে ভোট প্রচারে নকুলদানা বিলি করা যায় না। বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে জানানো হবে বলে তাঁর হুঁশিয়ারি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy