Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

প্রচারে বাধার অভিযোগে অশান্ত শহর

বিজেপির বিক্ষোভ চলাকালীনই থানায় পৌঁছে যান সিপিএম কর্মী, সমর্থকেরা। তাঁদের অভিযোগ, রবিবার বর্ধমান শহরের ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের আবাসনে দলীয় প্রার্থী আভাস রায়চৌধুরীর সমর্থনে প্রচারে গিয়েছিলেন দলের কর্মীরা।

কার্জন গেট চত্বরে বিক্ষোভ। সোমবার সন্ধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।

কার্জন গেট চত্বরে বিক্ষোভ। সোমবার সন্ধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৯ ০২:০৫
Share: Save:

তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রচারে বাধা ও মারধরের একাধিক অভিযোগ করল বিরোধীরা। রবিবার রাত থেকে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত দফায় দফায় চলল থানা ঘেরাও, কার্জন গেট, বিসি রোডের মতো জায়গা অবরোধ। জেলা পুলিশ সুপারের কাছেও স্মারকলিপি দেন বিজেপি কর্মীরা। তৃণমূল অবশ্য কোনও অভিযোগ মানেনি।

বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, বিগ্রেডে নরেন্দ্র মোদীর সভার জন্য রবিবার রাতে বর্ধমানের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে পোস্টার সাঁটাচ্ছিলেন দলের কর্মীরা। তখনই ওই ওয়ার্ডের তৃণমূলের প্রাক্তন কাউন্সিলর বসির আহমেদের নেতৃত্বে বিজেপি কর্মীদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। আহতও হন বিজেপি কর্মী বিবেকানন্দ পাল, চিত্তশঙ্কর রায়, অনিল তিওয়ারিরা। অনিলবাবুকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তিও করা হয়। বিজেপির দাবি, ওই প্রাক্তন কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে কমিশন ও পুলিশ উপযুক্ত ব্যবস্থা নিক। বিজেপি নেতা শ্যামল রায়ের দাবি, ‘‘নির্বাচন পর্ব না মেটা পর্যন্ত ওই তৃণমূল নেতাকে এলাকার বাইরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হোক কমিশনের পক্ষ থেকে।’’ এই দাবিতে কয়েকজন বিজেপি কর্মী রবিবার রাতেই থানার সামনে প্রায় ঘণ্টাখানেক বিক্ষোভ দেখান। যদিও অভিযোগ মানেননি তৃণমূল নেতৃত্ব। স্থানীয় কাউন্সিলর বসির আহমেদ পাল্টা অভিযোগ করেছেন, বিজেপি শাসকদলের দেওয়াল লিখনেকালি দিয়েছে।

বিজেপির বিক্ষোভ চলাকালীনই থানায় পৌঁছে যান সিপিএম কর্মী, সমর্থকেরা। তাঁদের অভিযোগ, রবিবার বর্ধমান শহরের ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের আবাসনে দলীয় প্রার্থী আভাস রায়চৌধুরীর সমর্থনে প্রচারে গিয়েছিলেন দলের কর্মীরা। ওই ওয়ার্ডের প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর সনৎ বক্সি তাঁদের বাধা দেন বলে অভিযোগ। রবিবার রাতে বর্ধমান থানায় লিখিত অভিযোগও জানান তাঁরা। এলাকার প্রাক্তন বাম কাউন্সিলর অরিন্দম মৌলিকের দাবি, বাড়ি বাড়ি প্রচার করার সময় তৃণমূল প্রচার করতে বাধা ও হুমকি দেয়। তাই তারা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন। কমিশনেও এই বিষয়ে জানানো হবে বলে অরিন্দমবাবু জানান। অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

সোমবার ফের বিজেপি অভিযোগ করে, বর্ধমানের ২৩ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাঞ্চননগর এবং রথতলায় দলের কর্মীদের মারধর করা হয়েছে। বিজেপি নেতাদের দাবি, কাঞ্চননগরে সোমবার বিকেলে তাদের পথসভা ছিল। আগাম প্রশাসনের অনুমতিও নেওয়া ছিল। কিন্তু সভা শুরুর আগে দলীয় কর্মীরা ওই এলাকায় পতাকা টাঙাতে গেলে তৃণমূল নেতা খোকন দাসের নেতৃত্বে তাদের মারধর করা হয়। আহত হন অজয় পোদ্দার, আশিস মজুমদার ও রাজু দাস নামে তিন কর্মী। দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে থানা ও বিসি রোড অবরোধও করেন বিজেপি কর্মী, সমর্থকেরা। আটকে যায় রিকশা, টোটো। কিছুক্ষণ পরে চিৎকার, চেঁচামেচি শুরু করেন আশপাশের মানুষ। বিজেপি কর্মী, সমর্থকেরাও অবরোধ তুলে রওনা দেন সাতশো মিটার দূরের কার্জন গেটে। সেখানে চারটে টায়ার জ্বালিয়ে মিনিট কুড়ি চলে অবরোধ। আটকে যায় দূরপাল্লার বাস, টাউন সার্ভিস বাস, বহু গাড়ি। এক কিলোমিটার ছাড়িয়ে যায় যানজট। কিছুক্ষণ পরে অনেকে অবরোধের মাঝ দিয়েই যাতায়াত শুরু করেন। পুলিশ এসে বলতেই অবরোধও উঠে যায়। সেখান থেকে বিজেপি কর্মীরা যান জেলা পুলিশ সুপারের অফিসে। কার্যালয়ের বাইরে চলে দলীয় পতাকা নিয়ে স্লোগান দেওয়া। পরে বিজেপির একটি প্রতিনিধি দল এসপি-র সঙ্গে দেখা করে অভিযোগ জানান।

তৃণমূল নেতা খোকন দাসের দাবি, ‘‘বিকেল থেকে পুলিশ দাঁড়িয়েছিল যাতে ওদের সভা সুস্থ ভাবে হয়। কিন্তু বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরাই আসেননি। আমাদের তরফে মারধরের কোনও প্রশ্নই নেই। পুরোটাই নাটক।’’ পুলিশেরও দাবি, বিকেল সওয়া ৪টে থেকে সওয়া সাতটা পর্যন্ত পাহারা দেওয়া হয়েছে। এমসিসি-র লোকেরাও ছিলেন। কিন্তু বিজেপির লোকজনই আসেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2019 Bardhaman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE