Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

শিল্পাঞ্চলের ‘চেনা’ মাঠে লড়াইয়ে সুরেন্দ্র

তাঁর নাম ঘোষণা হওয়ার পরে অহলুওয়ালিয়া বলেন, “আমার জন্মস্থান আসানসোল। বর্ধমান থেকে পড়াশোনা, রাজনীতির শুরু। পরিচিত জায়গা। তাই আমার কোনও অসুবিধা হবে না।’’

বিজেপি প্রার্থী সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া। নিজস্ব চিত্র

বিজেপি প্রার্থী সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া। নিজস্ব চিত্র

সুব্রত সীট ও সৌমেন দত্ত
দুর্গাপুর ও বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৯ ০০:১০
Share: Save:

নিজের পুরনো কেন্দ্রে আর দাঁড়াতে না চাওয়ায় এ বার তাঁকে দার্জিলিঙে প্রার্থী করা হয়নি বলে বিজেপির দাবি। তবে ২৪ মার্চ তিনি টুইট করে জানিয়েছিলেন, রাজ্যের যে কোনও আসনে লড়তে তিনি তৈরি। দার্জিলিঙের বিদায়ী সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়াকে শেষমেশ বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রে প্রার্থী করল বিজেপি।

রবিবার তাঁর নাম ঘোষণা হওয়ার পরে অহলুওয়ালিয়া বলেন, “আমার জন্মস্থান আসানসোল। বর্ধমান থেকে পড়াশোনা, রাজনীতির শুরু। পরিচিত জায়গা। তাই আমার কোনও অসুবিধা হবে না।’’ এ রাজ্যে বিজেপি-র এই একটি আসনেই প্রার্থী ঘোষণা বাকি ছিল। দলের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুই বলেন, ‘‘প্রার্থীর নাম ঘোষণা না হওয়ায় কর্মীদের অনেকে হতাশ হয়ে পড়ছিলেন। শেষ পর্যন্ত এমন এক ‘হেভিওয়েট’ প্রার্থীর নাম ঘোষণায় কর্মীরা উৎসাহিত।’’

গত বার গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার (বিমল গুরুঙ্গ) সমর্থনে দার্জিলিঙে জিতেছিলেন অহলুওয়ালিয়া। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার মোর্চা আর তাঁকে প্রার্থী হিসাবে চায়নি। সাংসদ হওয়ার পর থেকে এলাকায় বিশেষ দেখতে না পাওয়ার অভিযোগ উঠছিল তাঁর বিরুদ্ধে। তিনি নিজেও আর দার্জিলিং থেকে লড়তে চাননি বলে দলের একাংশের দাবি। কিন্তু তাঁকে কোথায় টিকিট দেওয়া হবে, সে নিয়ে দলের অন্দরে মাথাব্যথা তৈরি হয়।

জেলা বিজেপি সূত্রের খবর, কয়েক মাস আগে দুর্গাপুরে নরেন্দ্র মোদীর জনসভার পরে এই বর্ধমান-দুর্গাপুর আসনটি নিয়ে আশাবাদী হয়ে ওঠেন দলীয় নেতৃত্ব। ‘হেভিওয়েট’ কাউকে প্রার্থী করার ভাবনা চলছিল। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে শেষে অহলুওয়ালিয়াকে বেছে নেওয়া হয়। যদিও দলের এক নেতা দাবি করেন, “সম্ভাব্য তিন প্রার্থীর মধ্যে এক জনকে বেছে নিতে একটি সংস্থাকে দিয়ে সমীক্ষা করানো হয়। সেখানে পরিচিত মুখ হিসাবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকেই বেশি চাওয়া হয়েছে। ওই রিপোর্ট জমা পড়তে দেরি হওয়ায় নাম ঘোষণায় দেরি হল।’’

আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

আসানসোলে কংগ্রেসের হয়ে রাজনীতিতে হাতেখড়ি অহলুওয়ালিয়ার। দুর্গাপুরে তাঁর শ্বশুরবাড়ি। আসানসোলের তৃণমূল বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দুর্গাপুরের মেয়র পারিষদ তথা তৃণমূল নেতা অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে তাঁর শ্যালক। তৃণমূলের দাবি, আসানসোলের ভূমিপুত্র হলেও প্রার্থী হিসাবে এই জেলায় বিশেষ কোনও সুবিধা পাবেন না অহলুওয়ালিয়া। সেই সঙ্গে গত পাঁচ বছরে দুর্গাপুরে বন্ধ রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানা খোলার ব্যাপারে উদ্যোগের অভাব, অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের কৌশলগত বিলগ্নিকরণের সিদ্ধান্তের মতো নানা বিষয় বিজেপির বিরুদ্ধে যাবে বলে দাবি তৃণমূল নেতাদের। এই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মমতাজ সংঘমিতার মন্তব্য, ‘‘অহলুওয়ালিয়ার সঙ্গে আমার সম্পর্ক মধুর। তিনি আবার আসানসোলের জামাইও বটে। জামাই হওয়া ভাল। কিন্তু কথায় আছে, জন-জামাই-ভাগনা তিন নয় আপনা।’’

বর্ধমান ও দুর্গাপুরের বিজেপি নেতাদের অবশ্য দাবি, অহলুওয়ালিয়া প্রার্থী হওয়ায় লড়াইয়ে সুবিধা হবে। এই এলাকা তাঁর চেনা। এখানকার সমস্যা সম্পর্কে তিনি ওয়াকিবহাল। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রার্থী হওয়ায় দলে কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও মাথাচাড়া দিতে পারবে না বলে মনে করছে দলের একাংশ। অহলুওয়ালিয়ার বক্তব্য, ‘‘বিজেপি কোনও কারখানা বন্ধ করেনি। এখানে উন্নয়নের নামে অন্য কিছু হয়েছে। এলাকার হাল ফেরাতেই দল আমাকে এই কেন্দ্রে প্রার্থী করে পাঠিয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE